বরকে নিলামে তুলতে চান। সোশাল মিডিয়ায় ঘোষণা এক তরুণীর। কী হল তারপর? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জীবনে টাকা ছাড়া আর কিছুই চাই না এই মুহূর্তে। তাই বরকেই নিলামে তোলার কথা ভাবলেন এক তরুণী। সোশাল মিডিয়ায় এক ভিডিও পোস্ট করে জানালেন, বর বিক্রি করতে চান। সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ওই তরুণীর ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই চর্চা নেটদুনিয়ায়। ঠাট্টা করেও কি কোনও মানুষকে নিলামে তোলার কথা এমন প্রকাশ্যে বলা যায়? প্রশ্ন এখানেই।
আরও শুনুন:
ঘর বাঁধার আগে ঘর করার পরামর্শ জিনাতের, তবে আইনি আওতায় কি জটিল হচ্ছে লিভ-ইন?
এমনিতে বহুমূল্য বা দুষ্প্রাপ্য জিনিস নিয়ে নিলাম ডাকার চল দীর্ঘদিনের। কিংবা ঋণ আদায়ের জন্যও নিলাম ডাকা হয়, যেখানে ঋণ গ্রহীতার সম্পত্তি নিলামে তুলেই আদায় করা হয় প্রাপ্য টাকা। এই তরুণীও কিছু কিনতে চান না, বেচতেই চান বরং। মন্নত কুলহারিয়া নামের এই তরুণী ভিডিওতে নিজেই জানিয়েছেন, নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছেন তিনি। জীবন পরিপূর্ণ। যদি সেখানে কিছু চাওয়ার থাকে, তবে রয়েছে একটিই চাহিদা, টাকা। বলিউডের জনপ্রিয় ছবি ‘জুদাই’-এ দেখা গিয়েছিল, স্বামী অনিল কাপুরকে বিক্রি করে দিচ্ছেন নায়িকা শ্রীদেবী। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তরুণী জানিয়েছেন, তিনিও একই পথে হাঁটতে চান। নিজের স্বামীকে নিলামে তুলে দিতে কোনও আপত্তি নেই তাঁর।
আন্দাজ করা যায়, তামাশার ছলেই এ কথা বলেছিলেন ওই তরুণী। সত্যি সত্যি তো আর কোনও মানুষকে কেনাবেচা করা সম্ভব নয়, বর্তমান সময়ে তা নিতান্তই বেআইনি। যদিও একসময় বাস্তবেই চলত মানুষ কেনাবেচা। ক্রীতদাস প্রথার সেই অমানুষিক ইতিহাস ভোলার উপায় নেই। এমনকি এখনও, টাকার বিনিময়ে অনেক মেয়েরই যৌনপল্লিতে হাতবদল হয়ে যায় এভাবেই। বা নারীপাচারের কালো দুনিয়াতেও জারি আছে একই অভ্যাস। তবে সবটাই লুকিয়ে চুরিয়ে। কিন্তু প্রকাশ্যে হোক বা লুকিয়ে, কোনও মানুষকে বিক্রি করা মানে তো তার সত্তাকেই চূড়ান্ত অপমানের মুখে ঠেলে দেওয়া। কারণ বিক্রি তো করা যায় তাকেই, যার কোনও নিজস্ব মতামত নেই, কোনও স্বাধীন চিন্তা চেতনা নেই। তাই এ কথা ঠাট্টার ছলেও যেন বলা যায় না। কোনও নারীর ক্ষেত্রে এহেন মন্তব্য যতখানি অপমানের, পুরুষের ক্ষেত্রেও তার চেয়ে কম কিছু নয়। তফাত এখানেই যে, নারীর ওই অপমানের স্মৃতি আমরা চিনি বলে সেখানে একে অপমান বলে সহজেই চিনতে পারি। কিন্তু পুরুষ ক্ষমতাতন্ত্রের সুতোটি ধরে আছে বলেই, তার ক্ষেত্রে এই অপমান সহজে ধরা পড়ে না। যেমনটা ঘটেছে এক্ষেত্রেও। তবে নারী বা পুরুষ যে-ই হোন না কেন, কোনও মানুষই যে ঠিক এতটা সস্তা নন কখনোই, সে কথাই ফের মনে করিয়ে দিল এই ঘটনা।