বিপদ যে কখনও বলে কয়ে আসে না ,যে কোনও ভাবে, যে কোনও সময়ই আসতে পারে, সে তো প্রায় সকলেই জানেন। কিন্তু তাই বলে ট্রাফিকের ক্যামেরা কারোর জীবনে বিপদ ডেকে এনেছে একথা কেউ শুনেছেন? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল কেরল পুলিশ। কী সেই ঘটনা? আসুন শুনে নিই।
বর্তমান সময় রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় একটুও অসাবধান হয়ে নিয়ম ভেঙেছেন তো মরেছেন। ‘কেস’ একবারে অবধারিত। সৌজন্যে অত্যাধুনিক ট্রাফিক ক্যামেরা। আপনি যদি কোনও কারণে কোনও ট্রাফিক রুল ভাঙেন এবং যদি তা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই ছবি আপনার রেজিস্টার্ড ফোন নম্বরে চলে যাবে, যে আপনি কোথায় কখন কীভাবে ট্রাফিক রুল ভেঙেছেন। এক্ষেত্রেও ঘটেছে এমনই কাণ্ড। হেলমেট ছাড়া অন্য মহিলাকে পিছনে বসিয়ে স্কুটি চালাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। ট্রাফিক ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়তেই মহা বিপদে পড়েছেন তিনি। ট্রাফিক আইন তো বটেই , শেষমেশ দাম্পত্য সমস্যার দরুন তার বর্তমান ঠিকানা ‘শ্রীঘর’।
আরও শুনুন: জোর নেই ধর্ম পরিবর্তনে, তিন হিন্দু সন্তানের মা হয়ে উঠেছিলেন কেরলের সুবাইদা
ঘটনাটি কেরলের। স্ত্রীর স্কুটিতে অন্য এক মহিলাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই যুবক। হেলমেট ছিল না তাঁর মাথায়, ফলে ট্রাফিক রুল ভাঙার দরুন, সেই ঘটনার ছবি -সহ সমস্ত বিবরণ মোটর ভেহিক্যাল ডিপার্টমেন্ট পাঠিয়ে দেয় ওই গাড়ির নাম্বার-এর সঙ্গে রেজিস্টার্ড ফোন নম্বরে। যেহেতু গাড়িটি ওই ব্যক্তির স্ত্রীর নামে, তাই সেই ফোন নম্বরটিও তার স্ত্রীরই ছিল। ফলে সেই মেসেজটি পান ওই ব্যক্তির স্ত্রী। আর সেই মেসেজ দেখা মাত্রই ওই ব্যক্তির স্ত্রী তাঁকে প্রশ্ন করেন, পিছনের ওই মহিলাটি কে?
আরও শুনুন: আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে চুম্বন, আবার শিরোনামে সেই দিল্লি মেট্রো
যদিও বছর ৩২ এর ওই ব্যাক্তি দাবি করেন ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই এবং তিনি শুধু ওই মহিলাকে লিফট দিচ্ছিলেন। কিন্তু বলাই বাহুল্য তার এহেন ব্যাখ্যাতে চিড়ে ভেজেনি। যার থেকে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। ঘটনার জল এতদূর গড়ায় যে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁকে ও তাঁদের ৩ বছরের সন্তানকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন স্ত্রী।
আরও শুনুন: অবাক কাণ্ড! তেতো নয় একফোঁটা, দিব্যি মিষ্টি আশ্চর্য এক নিমগাছের পাতার স্বাদ
শেষমেশ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত । সম্প্রতি কেরালায় ‘সেফ কেরালা’ প্রজেক্ট-এর দরুন এই ট্রাফিক ক্যামেরা লাগানো নিয়ে জোর রাজনৈতিক তরজা চলছে। বিরোধী দল কংগ্রেস এই ট্রাফিক ক্যামেরা লাগানোর ক্ষেত্রে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করছে। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই সেফ কেরালা প্রজেক্ট যে ওই ব্যক্তির জীবনে এভাবে বিপদ ডেকে আনবে, তা তিনি কখনও কল্পনাও করেননি।