ভরা শীতকালে ২৫ ডিসেম্বর তারিখটিই পালিত হয় ‘বড়দিন’ হিসেবে। ভূগোলের হিসেবে যে দিন কোনও মতেই খুব বড় নয়। আবার অনেকে বলেন এইদিনেই নাকি জন্মেছিলেন যিশুখ্রিস্ট! সত্যিই কি তাই? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
শীতকাল মানেই উৎসবের মরশুম। বড়দিন আর ইংরেজি নতুন বছর মিলিয়ে ছুটি ছুটি আবহাওয়া। কিন্তু ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের শেষভাগে অর্থাৎ ভরা শীতকালেই কেন পালিত হয় বড়দিন?
আরও শুনুন: করোনাকাঁটায় দোকানের কেক কিনতে অনীহা! বড়দিনে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু কেক
উত্তর গোলার্ধে ডিসেম্বর মানেই ভরা শীতকাল। বছরের এই সময়টাতে সাধারণত দিন ছোট ও রাত বড় হয়। আবার ভূগোলের জ্ঞান বলে, ২২ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম রাত। এই দিন থেকেই ধীরে ধীরে দিন বড় ও রাত ছোট হতে থাকে। তাই এর ঠিক দুদিন পরই বছরের দীর্ঘতম দিন হওয়া অসম্ভব। তবে কেন এই দিনটিকে বড়দিন বলা হবে? উত্তরের ইঙ্গিত মেলে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের এক প্রচলিত বিশ্বাস থেকে। যেখানে বলা হয়েছে, বড়দিন বলতে দৈর্ঘ্যে বড় কোনও দিন নয়। এখানে বড় অর্থে পবিত্র বা মহান বোঝানো হয়েছে। খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করেন, ২৫ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল প্রভু যিশুর। যিনি দুঃখে কষ্টে জর্জরিত মানুষের জীবনে নতুন আশার আলো দেখিয়েছিলেন। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কেবল ভালবাসলেই মানুষ কতখানি ভাল থাকতে পারে। এমন পবিত্র ভাবনার জন্ম দিতে পারেন যিনি, তাঁর জন্মদের দিনটিকেই তাই বড়দিন বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা। এই দিনটি তাঁদের কাছে বছরের সবথেকে বড় উৎসবের দিন।
যদিও, ২৫ ডিসেম্বরেই যে যিশুর জন্ম হয়েছিল, তারও কোনও ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। এক্ষেত্রেও তাই প্রচলিত রয়েছে একটি ধারণা। জানা যায়, কোনও একসময়ে চার্চের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল, ২৫ মার্চ তারিখটিতে গর্ভবতী হয়েছিলেন মাতা মেরী। সেই অনুযায়ী ঠিক নয় মাস পর ২৫ ডিসেম্বর তারিখটিকেই যিশুর জন্মদিবস বলে মনে করা হয়। তবে এর কোনও লিখিত প্রমাণ না থাকায় অনেকেই মনে করেন, শীতের অন্য কোনও দিনে জন্ম হয়েছিল যিশুর। এমনকি খ্রিস্টাব্দের শুরু যখন থেকে, তারও এক বছর আগে যিশুর জন্ম হয়েছিল বলে দাবি করেন কেউ কেউ।
আরও শুনুন: ‘হ্যাপি’ নয়, বড়দিনের শুভেচ্ছায় কেন বলা হয় ‘মেরি ক্রিসমাস’?
তবে প্রচলিত বিশ্বাসে যত গরমিলই থাকুক না কেন, সেই সব কিছুর উপর ভর করেই এত বছর ধরে সারা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে বড়দিন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে যা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা পৃথিবীতেই। ধর্মের বেড়া ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে মিলনের উৎসব।