হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী মানুষদের পুণ্যতীর্থ কাশী। এই প্রাচীন নগরীর অলিতে গলিতে দেখা মেলে দেবমন্দিরের। আর তার সঙ্গেই ভক্তদের মুখে মুখে ফেরে সেইসব মন্দির সম্পর্কে নানা গল্প। যেমন প্রচলিত আছে, একদিকে হেলে পড়া মাতৃঋণ মন্দিরের এহেন অবস্থার জন্য নাকি দায়ী মানুষের অহংকার। কীভাবে? শুনে নেওয়া যাক সে গল্প।
অহংকারই নাকি পতনের কারণ, জানায় প্রাচীন প্রবাদ। আর সে কথারই যেন সাক্ষ্য বহন করছে প্রাচীন নগরী কাশী বারাণসীর মাতৃঋণ মন্দির। অন্তত ভক্তদের বিশ্বাস তেমনই। জ্ঞানবাপী থেকে মণিকর্ণিকার দিকে যাওয়ার পথেই দর্শন মেলে এই মন্দিরের। যেখানে পূজিত হন স্বয়ং বিশ্বেশ্বর শিব। অথচ সেই মন্দিরই নাকি টলে গিয়েছিল কেবল অহংকারের কারণে।
আরও শুনুন: গঙ্গাস্নান সেরে করতেন গোপালের নিত্যপূজা, কে এই ‘হিন্দু’ সাহেব?
শোনা যায়, এক বিশেষ লক্ষ্যে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন মান সিং নামে এক যুবক। জয়পুরের মহারাজা মান সিং-এর অধীনে কাজ করতেন তিনি। স্বচ্ছল, সুখী পরিবার। কিন্তু হঠাৎ সেখানে দেখা দিল বিপর্যয়। সংসার ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত জানালেন তাঁর মা। কারণ হিসেবে জানালেন, অপর এক রাজকর্মচারীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারলেন না মান সিং। তিনি শর্ত দিলেন, সেক্ষেত্রে মাকে তাঁদের সঙ্গে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। মা কিন্তু তাতে নারাজ। তিনি বললেন, মা আর সন্তানের সম্পর্ক অচ্ছেদ্য। সে বন্ধন কোনও ভাবেই ছিঁড়ে যেতে পারে না। তাঁর জীবনে অন্য যে-ই আসুক, ছেলের সঙ্গে তাঁর যে নাড়ির টান, তা কি কখনও নাকচ করা যেতে পারে? আর ছেলেই বা মায়ের ঋণ শোধ করবেন কেমন করে? কিন্তু মান সিং সে কথা মানতে নারাজ। তিনি ঘোষণা করলেন, মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক তিনি চুকিয়ে দেবেন। শোধ করবেন মাতৃঋণ।
আরও শুনুন: শক্তিপীঠের অন্যতম হিমাচলের জ্বালামুখী মন্দির, সাতটি শিখা এখানে নেভে না কখনও
অতএব কাশীতে চলে আসেন মান সিং। সিদ্ধান্ত নেন এই মাতৃঋণ মন্দির নির্মাণ করার। মন্দিরের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করতে পারলেই মায়ের প্রতি তাঁর ঋণও শোধ হবে, এমন শপথ নিলেন তিনি।
শুনে নিন বাকি অংশ।