গ্রেটা থুনবার্গ। বয়স তেমন নয়। এমন একটি বিষয়ে তিনি সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন, যা এই মুহূর্তে পৃথিবীবাসীর বোধহয় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা হওয়া উচিত। তা হল পরিবেশ। যে পরিবেশ আছে বলে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা হচ্ছে, সেই পরিবেশ রক্ষায় কি আমরা কি ততটা গুরুত্ব দিচ্ছি? ভাবনাটি পুরনো। কিন্তু এই মুহূর্তে এর থেকে অর্থবহ ভাবনা বোধহয় আর কিছু নেই। আর এই প্রসঙ্গেই বারবার উঠে এসেছে নেট জিরো এমিসন-এর প্রসঙ্গ। কী এই প্রায়-শূন্য দশা? আসুন শুনে নিই।
এই মুহূর্তে মানব সভ্যতার ভিলেন কে? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই যে নামটা উঠে আসে, তা হল কার্বন। এই কার্বন নিঃসরণ বা গ্রিন হাউস গ্যাস এফেক্ট এমন একটি পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, এখনই রাশ না টানলে অচিরেই ধ্বংসের মুখে পড়বে মানবসভ্যতা। বলা যায়, এ ব্যাপারে সতর্কতার ঘন্টি বেজেই গিয়েছে। আর তাই পরিবেশ ভাবনায় গুরুত্ব পাছে নেট জিরো এমিশনের প্রসঙ্গ।
আরও শুনুন: ২৫ বছর যাঁর রিকশায় যাতায়াত, তাঁকেই কোটি টাকার সম্পত্তি ‘উপহার’ বৃদ্ধার
আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই জানা, তাও সংক্ষেপে শুনে নেওয়া যাক, এই গ্রিন হাউস গ্যাস আমাদের কী ক্ষতি করছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে আজ আমাদের পরিচয় ঘটেছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে মাত্রাছাড়া ভাবেই। সাধারণ নিয়ম এই ছিল যে, পৃথিবী দিনের বেলা উত্তপ্ত হত। রাতে সেই তাপ বিকিরণ করে একটা ভারসাম্যের জায়গায় পৌঁছাত। কিন্তু মানব সভ্যতা যত এগিয়েছে, তত বেড়েছে এই গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ। যার মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। এদের প্রকৃতি হল, এরা তাপ ধরে রাখে। অর্থাৎ পৃথিবীর তাপকে সহজে বিকীর্ণ হতে দেয় না। এর ফলে ক্রমাগত উষ্ণতা বাড়ছে পৃথিবীর। এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে অবস্থা যে, হিমবাহগুলো গলে যাওয়ার সম্ভাবনাও স্পষ্ট। পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বড় বিপর্যয় করছে মানুষের জন্য। প্রকৃতি বলাই বাহুল্য, নিজের ভারসাম্য রক্ষা করতে চেষ্টা করবে। ফলে এই যে নানারকম বিপর্যয় নেমে আসছে, ঝড় সাইক্লোনের মাত্রা বাড়ছে, এ আসলে পরিবেশের উপর মানুষের অত্যাচারেরই ফল। আর এই ধরনের বিপর্যয়ে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। এক একটা বিপর্যয় আসে আর নিঃস্ব হয়ে যায় বহু বহু মানুষ। তাই আজ আর পরিবেশভাবনাকে বাদ দিয়ে শ্রেণির বিকাশের ভাবনা ভাবা সম্ভব নয়। কেননা মানুষের সভ্যতার অগ্রগতির কথা ভাবতে গেলে, মানুষকে বাঁচাতে গেলে পরিবেশকে রক্ষা করতেই হবে।
আরও শুনুন: এশিয়ার প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্রের জন্মস্থান এই কলকাতাই
বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারা তাই পরিবেশ নিয়ে কথা বলছেন। আর সেই কারণেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে নেট জিরো এমিসন। এ আসলে একরকমের লক্ষ্যমাত্রা, যেখানে গ্রিন হাউস গ্যাস-কে সরিয়ে ফেলা যাবে। শূন্যে পৌঁছে দেওয়া যাবে। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর এই পৃথিবীতে তা কি সম্ভব? এই ভাবনা থেকেই নানা পরিকল্পনা নেওয়া শুরু হয়েছে। কোন উপায়ে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমানো যায়, বিশ্বের সমস্ত দেশ তাতে কীরকম ভূমিকা নিতে পারে সেই নিয়ে চলছে আলোচনা। সকলেরই লক্ষ্যমাত্রা ওই নেট জিরো বা প্রায় শূন্য দশা। অর্থাৎ যে অবস্থায় পৌঁছালে গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাব পৃথিবীকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।
বাকি অংশ শুনে নিন।