বাস্তবের চিত্রটা যেমনই হোক, দাবার বোর্ডে রাজার ক্ষমতা কিন্তু খুবই সীমিত। যে কোনও দিকে মাত্র এক ঘর। তার বেশি এগানোর কোনও উপায় নেই। অথচ পাশে থাকা রানি যেদিকে খুশি যতদূর খুশি যেতে পারেন। এমন নিয়মের কারণ কী? সেই নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জনৈক নেটিজেন। আর জবাবে ভেসে বিচিত্র সব উত্তর। কী বলছেন নেটিজেনরা? আসুন, শুনে নিই।
ঠিক যেন যুদ্ধের ময়দান। হাতি ঘোড়া সৈন্যসামন্ত সবই রয়েছে। রয়েছেন রাজা-রানিও। বিশেষ কিছু নিয়মে বাঁধা তাঁদের প্রত্যেকের চালচলন। আর সেই নিয়মের ঘেরাটোপেই জমে ওঠে ৬৪ ঘরের যুদ্ধ। সম্প্রতি দাবার এক বিশেষ নিয়ম নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে নেটপাড়ায়। যার উত্তর হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায়ায় ভেসে উঠেছে বিভিন্ন রকমের মতামত।
আরও শুনুন: বইপত্র ছোঁয়া ‘মানা’, অথচ সরস্বতী পুজোর দিনই কেন হয় হাতেখড়ি?
সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একবার জেনে নেওয়া যাক দাবা খেলার নিয়মগুলো ঠিক কেমন?
৬৪ ঘরের এক সাদাকালো বোর্ডই এখানে যুদ্ধক্ষেত্র। যার দুদিকে সাজানো থাকে সাদা ও কালো রঙের ১৬টি করে ঘুঁটি। এই ১৬টি ঘুঁটির মধ্যেই থাকে, আটটি সৈন্য, দুটি নৌকা, দুটি ঘোড়া, দুটি হাতি, এবং একটি রাজা ও রানি। বাঙালিরা অবশ্য রানি ঘুঁটিকে মন্ত্রী বলেই চেনে। এহেন নাম শুনে এঁদের রক্তমাংসের মানুষ মনে হলেও, দাবার বোর্ডে এঁরা কেবলই প্রতীকমাত্র। তাই এই ঘুঁটির আকার বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এবার আসা যাক নিয়মে। নিয়মানুসারে দাবার বোর্ডের সবথেকে দামী ঘুঁটি হল রাজা। কোনওভাবে প্রতিপক্ষের রাজাকে বিপাকে ফেলতে পারলেই খেলা শেষ। অথচ তাঁর ক্ষমতাই সবথেকে সীমিত। কেবল সৈন্য আর রাজাই মাত্র একঘর করে এগোতে পারেন। অন্যদিকে রাজার পাশে থাকা রানি যেদিকে খুশি যতদূর খুশি যেতে পারে।
আরও শুনুন: অঙ্ক কষলে তবেই মিলবে ফোন নম্বর, অঙ্কের শিক্ষক চেয়ে অভিনব বিজ্ঞাপন স্কুলে
এমন নিয়মের কারণ জানতে চেয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন করেছিলেন জনৈক নেটিজেন। তাঁর সেই প্রশ্নের উত্তর হিসেবে উঠে এসেছে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলেছেন রাজা স্বয়ং খেলার হার-জিত নির্ধারণ করেন। তাই তাঁকে বেশি সরানো প্রয়োজন নেই। আবার অনেকে বলেছেন রাজা নিজে কিছু না করে রানিকে দিয়ে সব কিছু করান। তাই তাঁর ক্ষমতা অপেক্ষা রানির ক্ষমতা বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেউ কেউ আবার এ প্রসঙ্গে মজা করে বলেছেন, যেহেতু রাজা বিবাহিত তাই তিনি রানির নির্দেশ মতো কাজ করেন। যতদূর যাওয়ার অনুমতি মেলে ততদূরই তাঁর দৌড়। যদিও একজন এর সঙ্গে রাজনীতির তুলনাও টেনেছেন। তাঁর মতে একজন রাজা যেমন এক জায়গায় থেকে সকলকে নির্দেশ দেন কী করতে হবে, এখানেও সেই নীতিই অনুসরণ করা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, খেলাটা তো রাজাকে বাঁচানোরই। তাহলে তিনি যত্রতত্র কেন যাবেন! রাজার ক্ষমতা কম বলে যা ভাবা হচ্ছে, তা আসলে ভুল। কেননা রাজার ক্ষমতা বেশি বলেই, তার প্রতিরক্ষায় বাকিরা সদা সচল। সেই জন্য বাকি ঘুঁটি সর্বত্র যাতায়াত করলেও, রাজা বিশেষ নড়েন-চড়েন না। তবে রানি কেন এদিক-ওদিক যেতে পারেন, আর রাজা গ্যাঁট হয়ে বসে থাকেন- তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।