শখের বশে মানুষ কত কিছুই না করে! তবে সেই শখের প্রভাব যদি কেরিয়ারে পড়ে তাহলে খুবই মুশকিল। জনৈক মহিলার সঙ্গে ঘটল তেমনটাই। বডি আর্টের প্রতি ভীষণ আকর্ষণ, তাই সারা শরীরেই করিয়েছেন ট্যাটু। বাদ দেননি চোখের মণিও। আর তার জেরেই আর কিছুতেই চাকরি পাচ্ছেন না তিনি। ভাবছেন তো, এমনধারা আজব শখ কার হতে পারে! আসুন শুনে নেওয়া যাক তাঁর কথা।
সৌন্দর্য বাড়াতে শরীরের বিভিন্ন অংশে ট্যাটু করা বেশ ট্রেন্ডিং এক ফ্যাশন। সেই ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে আজকাল পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে অনেকেই নিজেদের পছন্দের ট্যাটু করিয়ে ফেলেন। হাত পা কিংবা ঘাড়ের কাছে ছোট্ট একটা ট্যাটু যুব সমাজের কাছে এখন নতুন স্টাইল স্টেটমেন্ট। তবে গোটা শরীর জুড়ে ট্যাটু করানোর শখ বোধহয় খুব কম মানুষেরই আছে। শুনতে অবাক লাগলেও, অস্ট্রেলিয়ার এক মডেল তরুণী এমনই আজব কাজ করেছেন। চোখের মণি-সহ তাঁর শরীরের ৯৯% ট্যাটুতে ঢাকা। এতে তাঁর সৌন্দর্য কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলা মুশকিল; তবে এর প্রভাবে তাঁর কেরিয়ারে নেমে এসেছে ভয়ানক দুর্যোগ।
আরও শুনুন: পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নিচ্ছেন ভারতীয়রা! ইঙ্গিত মিলছে তথ্যে, কারণটা কী?
কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে হলে অবশ্যই মেনে চলতে হয় কিছু নিয়ম। শরীরজুড়ে ট্যাটু করানো কখনোই চাকরির নিয়মের মধ্যে পড়ে না। শখের বশে সারা শরীর জুড়ে ট্যাটু করানোর আগে বোধহয় এমন নিয়ম জানতেন না অ্যাম্বার লিউক নামের এই তরুণী। ১০০টিরও বেশি ট্যাটু রয়েছে তাঁর শরীরে। শুধু তাই নয়, শরীরে রয়েছে একাধিক পিয়ার্সিংও। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জিভ এবং কানের গঠন বদলেছেন। জিভের সামনের অংশেও অস্ত্রোপচার করিয়েছেন, এখন তা অনেকটা ফর্ক বা কাঁটা চামচের মতো আকার নিয়েছে। এমনকি কসমেটিক সার্জারির সাহায্যে কানের গড়ন বদলে খাড়া ও লম্বাটে করে ফেলেছেন এই মডেল। এই সব কিছুর জন্য এখনও পর্যন্ত খরচ করেছেন প্রায় দেড় কোটি টাকা। এছাড়াও, গত বছর চোখের মণিতে ‘ড্রাগন ব্লু’ ট্যাটু করিয়েছিলেন অ্যাম্বার। এই ট্যাটু করার পর তাঁর চোখের সাদা অংশ হয়ে যায় নীল। তবে এর জেরে ৩ সপ্তাহ চোখে কিছুই দেখতে পাননি তিনি।
আরও শুনুন: রক্ষা করেন স্বয়ং মহেশ্বর, পালিয়ে বিয়ে করা যুগলদের আশ্রয় দেয় দেশের এই মন্দির
এত শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করেও কার্যত তাঁর বিপদ বেড়েছে বই কমেনি। নিয়মের দোহাই দিয়ে কোনও নামী কোম্পানি তাঁকে চাকরি দিতে নারাজ। যদিও এ বিষয়ে তেমন কোনও আক্ষেপ নেই অ্যাম্বারের। তাঁর বক্তব্য, কোম্পানিগুলি তাঁর কর্মক্ষমতা যাচাই না করে তাঁর বাহ্যিক রূপ দেখে বিচার করছেন। এমন সংকীর্ণ মানসিকতার জায়গায় তিনি কাজও করতে চান না। তিনি মনে করেন প্রত্যেকেরই নিজেকে নিজের মতো করে সাজানোর অধিকার আছে। সে বিষয়ে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে এমন অদ্ভুত শখের কারণ হিসাবে তিনি এক অন্য প্রসঙ্গও সামনে এনেছেন। নিজেকে শয়তানের উপাসক মনে করেন অ্যাম্বার। তাই তাঁর শরীরের ট্যাটুগুলি নাকি বিভিন্ন ‘স্যাটানিক চিহ্ন’ দ্বারা অনুপ্রাণিত। কালি দিয়ে তাঁর হাতে লেখা রয়েছে ‘ডেথ’। এছাড়া একটি ওল্টানো ক্রুশ, ৬৬৬ এবং একটি সাপের ট্যাটু রয়েছে তাঁর মুখে। এই সবই নাকি অশুভ শক্তির প্রতি অনুরাগের প্রতীক। এমন অদ্ভুত শখের জেরে খবরের শিরোনামে উঠে এলেও ভবিষ্যতে ভালো চাকরি তিনি কবে পাবেন সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।