সিংহের সঙ্গে ছবি। সোশাল মিডিয়ায় নাম কুড়োতে এটুকুই যথেষ্ট। কিন্তু নামের পিছনে ছুটতে গিয়ে বদনাম হবেন না তো? দেশের আইন কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
নাম নিয়ে যত কান্ড! রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছে সিংহ। কিন্তু এসব হালের কথা। আসলে সিংহ জঙ্গলের রাজা। তাই তার সঙ্গে ছবি তোলা কম ব্যাপার নয়। এমনটা করেই ‘নাম’ কুড়োনোর চেষ্টা করেন অনেকে। সোশাল মিডিয়ায় সিংহের সঙ্গে ছবি দিলেই রাতারাতি জোটে সেলব্রিটির তকমা। কিন্তু আইন বলছে এর জেরে সুনামের বদলে জুটবে বদনামই!
আরও শুনুন: পোষ্যের ইচ্ছেখুশি নাম রাখছেন? সাবধান! আইন কিন্তু সব দেখছে
সোশাল মিডিয়ার যুগে ভাইরাল হওয়ার লোভ কমবেশি সকলেরই। তার জন্য যা করতে হয় করা যেতে পারে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিল বানানো, কিংবা আরও মারাত্মক কোনও কাজ। দু-বার না ভেবেই সেসব করে ফেলেন অনেকে। এর সঙ্গেই রয়েছে সেলফি। নিজের ছবি, সঙ্গে বিশেষ কেউ। পাশের মানুষ যত নামি, সেলফি হবে ততটাই দামি। এই বিশ্বাসে রোজই হাজার হাজার সেলফির বন্যা বয়ে যায় সোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। কিন্তু মানুষ অবধি তাও ঠিক আছে, এর মধ্যে যদি পশুদেরও ঢোকানো হয় তাহলে তা মোটেও আইনসিদ্ধ নয়। অর্থাৎ সোশাল মিডিয়ায় নাম কুড়োতে পশুদের সঙ্গে ছবি দেওয়া একেবারেই বেআইনি। সেসব অনেকেই হয়তো জানেন, কিন্তু মানেন কজন? তাই সাম্প্রতিক এক ঘটনার প্রসঙ্গে ভারতীয় আইনের সেইসব ধারার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।
-: আরও শুনুন :-
মনমরা সিংহ-সিংহী ভাবে, শুধু নামের ফেরে মানুষ ফেরে!
আইন বলছে, পশুর সঙ্গে ছবি তোলা এবং তা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা সবসময় আইনসিদ্ধ নাও হতে পারে। বিশেষ করে এমন কোনও পশু যা বণ্যপ্রানী সংরক্ষণ আইনের আওতায় রয়েছে, তার সঙ্গে ছবি তোলা আইনত অপরাধ। এক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে কারাবাস এবং মোটা টাকা জরিমানা হতে পারে। তাও অল্পদিনের জন্য নয়। অপরাধ প্রমাণে ৭ বছর অবধি কারাদণ্ড হতে পারে। আইনের কথা বলতে গিয়ে বিচারপতিও খানিক মশকরা করেই নামের প্রসঙ্গ তোলেন। তবে এই নাম ভালো অর্থে নয়, বদনাম অর্থে। এর আগে এই অপরাধে শাস্তিও পেয়েছেন অনেকেই। কয়েকমাস আগেই হাতির সঙ্গে মশকরা করার ভিডিও পোস্ট করে গ্রেফতার হয়েছিলেন এক যুবক। জনপ্রিয় ক্রিকেটার রবীন্দ্র জাদেজাও সিংহের সঙ্গে ছবি তুলে গুনেছিলেন মোটা টাকা জরিমানা। উদাহরণের তালিকায় আরও বড়। আসলে, বন্য প্রাণীদের সবসময় নিজেদের মতো থাকতে দেওয়ার কথাই বলে বনবিভাগ। সেইমতোই তৈরি হয়েছে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন। বিনা কারণে নিজের স্বার্থ মেটাতে তাদের বিরক্ত করা মোটেও উচিৎ নয়। সেই কারণে এই সেলফি তোলা জাতীয় কান্ড কারখানা পশুদের সঙ্গে না করাই ভালো। বিরক্ত হলে তারা যেমন তেড়ে আসবে, ছেড়ে কথা বলবে না দেশের আইনও।