কোনোরকম ট্যাক্স দিতে হবে না দেশবাসীকে। এমনই পদক্ষেপ করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু কী হল তারপর? এবারের বাজেট পেশের আগেই শুনে নিন।
লোকসভা নির্বাচন পেরিয়ে সরকার গড়ার পর এবার বাজেট পেশ করতে চলেছে মোদি সরকার। ইতিমধ্যেই শেষ অর্থবর্ষে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল, সেই আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করেছেন মোদি মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বাজেটে তিনি কী শোনাতে চলেছেন, সেদিকে চোখ গোটা দেশের। কিন্তু এই আবহেই শোনা যাচ্ছে, বিজেপিই নাকি চেয়েছিল দেশবাসীর উপর থেকে করের বোঝা সরিয়ে দিতে। কী হয়েছে সেই প্রস্তাবের পর? শুনে নেওয়া যাক সে কথাই।
:আরও শুনুন:
মুসলিমদের মতো ফেজ মাথায় দেবেন মোদি? হয়তো একদিন… আশা নাসিরুদ্দিনের
দেশের রাজনৈতিক মহল বলছে, সত্যিই উঠেছিল এমন জল্পনা। বিজেপির ওপরমহলেই প্রস্তাব উঠেছিল কর পদ্ধতিতে ব্যাপক বদল আনার। বলা হয়, আয়কর, বিক্রয় কর এবং আবগারি কর- এই তিন ধরনের করই তুলে দেওয়া হবে। আর তেমনটা ঘটলে ট্যাক্স রিটার্ন থেকেও মুক্তি মিলবে দেশবাসীর, এ কথাই বলেছিলেন বিজেপির একাধিক হেভিওয়েট নেতা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই পদক্ষেপ করা হলে একদিকে মধ্যবিত্ত শ্রেণি উপকৃত হবে, অন্যদিকে শহরাঞ্চলের গোটা ভোটব্যাঙ্ককেই বিজেপি নিজেদের দিকে টানতে পারবে। দুয়ে মিলে ভোট রাজনীতিতে এগিয়ে যাবে পদ্মশিবির।
কথা হচ্ছে, এই প্রস্তাব যখন ওঠে, নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে তখনও সরকার গড়েনি বিজেপি। তার আগেই, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, নির্বাচনী ইস্তেহার খাড়া করছিল পদ্মশিবির। আর সে সময়েই, তৎকালীন দলীয় সভাপতি নীতিন গড়কড়ি প্রস্তাব দেন, ক্ষমতায় এলে দেশ থেকে কর তুলে দেবে বিজেপি। তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, কর তুলে দিলে ‘ইনস্পেক্টর রাজ’ও শেষ হবে। অর্থাৎ আয়কর বিভাগ এবং সেই সংক্রান্ত আধিকারিকদের আর প্রয়োজন থাকবে না। কিন্তু সব ক্ষেত্র থেকে কর সরিয়ে নিলে সরকারের আয় হবে কোন পথে? সে উপায়ও বাতলে দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, কর বাবদ ১৪ লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে দেশের। এদিকে দেশে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখার সংখ্যা মোট দেড় লাখ। যদি ব্যাঙ্কে সবরকম লেনদেনের উপর ট্রানজ্যাকশন ট্যাক্স বসানো হয়, তাহলে সেখানে থেকেই ৪০,০০০ লক্ষ কোটি টাকা লাভ করতে পারবে দেশ। ‘India Vision 2025’ নামে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন গড়কড়ি, অর্থাৎ ২০২৫ সালে ভারত উন্নতির কোন সীমায় পৌঁছবে, সেই রূপরেখাই তিনি ঠিক করে দিতে চেয়েছিলেন।
:আরও শুনুন:
মোদির হাত ধরেই আমেরিকা, ইতালি, দুবাইকে ছাপিয়ে গেল ভারত, সাফল্য এল কোন ক্ষেত্রে?
কিন্তু বিজেপির অন্দরেই এ নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয়। বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি এবং যশবন্ত সিনহা, দুজনেই এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ঘোর আপত্তি জানান। তাঁরা বলেন, ওই পরিবর্তন করা হলে, গরিব এবং বড়লোক দু’পক্ষকেই একই কর দিতে হতে পারে। সুতরাং এই পরিবর্তন কখনও গোটা দেশের পক্ষে কার্যকরী হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিও এই প্রস্তাবে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। সব মিলিয়ে, ভালো করে দানা বাঁধার আগেই ভেস্তে যায় কর মকুবের প্রস্তাব।