শিবঠাকুরের আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে! ‘একুশে আইন’-এর গণ্ডিতে বাঁধা সে দেশের কথা আমাদের জানিয়েছিলেন সুকুমার রায়। কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চালু রয়েছে এমনই কিছু অদ্ভুত আইনকানুন, যা ওই একুশে আইন-এর চেয়ে কম কিছু নয়। যতই অদ্ভুত, এমনকি অযৌক্তিক মনে হোক, সেসব না মানলে হতে পারে জরিমানা, এমনকি জেলও। সেইসব আইনের গেরোয় কখনও পড়ে সেলফি তোলা, কখনও আবার টয়লেট ব্যবহার করাও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কোথাও বেড়াতে যাওয়াই হোক, কি রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া, কিংবা কোনও নতুন পোশাক গায়ে চড়ানো- যাই হোক না কেন, মোবাইলের ক্যামেরাটি নিজের দিকে তাক করা অনেকেরই অভ্যাস। কিন্তু যখনতখন সেলফি তোলার অভ্যাসই আপনার জন্য বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে এই দেশে। হ্যাঁ, এমন আজব নিয়মই জারি রয়েছে আমাদের পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কায়। আসলে এই দেশে বৌদ্ধ ধর্মের রমরমার কারণে প্রায় সর্বত্রই বুদ্ধমূর্তি চোখে পড়ে। কিন্তু বুদ্ধমূর্তির সঙ্গে কোনও নিজস্বী তোলা যাবে না বলে নিয়ম রয়েছে এখানে। উপরন্তু, মূর্তির দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাও নিষেধ। এমনটা ঘটলে পুলিশের হাতে পড়া কিন্তু অনিবার্য সে দেশে।
আরও শুনুন: ঘুমের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাক! পোষ্য বিড়ালের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল মহিলার
স্ত্রীর জন্মদিনটি কোনও ভাবে ভুলে গেলেও কিন্তু হতে পারে হাজতবাস। হ্যাঁ, এমনই নিয়তি ওশিয়ানিয়ার বাসিন্দা পুরুষদের। জন্মদিনে কোনও শুভেচ্ছা না জানানো অথবা জন্মদিন পালন না করার অর্থ, স্ত্রীর যে আজ জন্মদিন তা ভুলেই গিয়েছেন তাঁর স্বামী। সেক্ষেত্রে স্ত্রী সোজা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন স্বামীর বিরুদ্ধে। শাস্তি হিসেবে স্বামীকে এক দিনের জন্যে হাজতে রাখে পুলিশ।
ঘরের বাতি বদল করার জন্যেও লাইসেন্স থাকতে হবে, এমনই নিয়ম রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। ইলেকট্রিকের যে কোনও কাজ, এমনকি, কারও বাড়িতে লাইট বা বাল্ব খারাপ হলে তা ঠিক করতেও পারবেন না কেউ, যদি তাঁর লাইসেন্স না থাকে। সুইটজারল্যান্ডে আবার কড়া আইন রয়েছে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। সেই আইন মোতাবেক, রাত দশটার পর টয়লেট ব্যবহার করতে গেলে রীতিমতো সমস্যায় পড়েন সেখানকার অধিবাসীরা। কারণ, তখন ফ্লাশ করার আওয়াজও নাকি গণ্য হয় শব্দদূষণ বলেই।
আরও শুনুন: জরুরি দরকার! ‘ফোন করে’ পুলিশকে তলব বাঁদরছানার, তারপর?
কানাডার ওশাওয়া এলাকার বাসিন্দা হলে গাছে চড়লেই দিতে হবে মোটা টাকার জরিমানা। আবার কুকুর পুষলেও জরিমানা দিতে হতে পারে ইতালির তুরিন শহরে। আসলে কোনও প্রাণীকে কেবল নিজের শখ মেটানোর জন্য পুষলেই হল না, তার দেখভাল ঠিকমতো করা হচ্ছে কি না, সেদিকেও কড়া নজর রাখে এই শহর। তাই কেউ কুকুর পুষলে দিনে অন্তত তিনবার পোষ্যটিকে বাড়ির বাইরে খোলা পরিবেশে নিয়ে যাওয়াই নিয়ম সেখানে। অন্যথায় ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে সেখানে।
ইতালির তুরিন শহরে যেমন জীবজন্তুর দেখভাল না করলে আইনের গেরোয় পড়তে হবে, তার উলটোটাই ঘটবে ইতালিরই ভেনিস শহরে। এখানকার বিখ্যাত দ্রষ্টব্য সেন্ট মার্ক স্কোয়ার। আর সেখানেই বাস করে প্রচুর পায়রা। স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে যাতে তারা মলত্যাগ না করে, সেই কারণেই কোনও পায়রাকে এক বিন্দুও খাবার দেওয়া বারণ। সেই কাজ করলে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।