এও আরেকরকম নির্বাচন। সে ভোটে প্রার্থীও আছেন, ভোটও আছে, আছে ফলাফলও। তবে যাদের নামে ভোট দিতে হবে, সেই প্রার্থীরা কিন্তু আদতে মানুষ নন কেউই। হ্যাঁ, এই ভোটে আসলে ভোট পাওয়া না-পাওয়ার দলে ছিল কিছু গরু। কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক কী? তাহলে শুনেই নিন।
নিজেদের দাবিদাওয়া ঠিক করার জন্য ভোটের ধারণা তৈরি করেছে মানুষই। ফলে মানুষ ছাড়া আর কাদের মধ্যেই বা ভোট হতে পারে! কিন্তু এই ভোটের গল্প অন্য। এখানে ভোট দিয়েছিল মানুষই, তবে ভোট পাওয়া না-পাওয়ার দলে ছিল কিছু গরু। অবশ্য এ কথাও ঠিক যে, প্রার্থীর জায়গায় মানুষ না থাকলেও, আদতে মানুষের চাওয়া না-চাওয়ার জেরেই এই ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল।
ভাবছেন তো, ব্যাপারটা ঠিক কী? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন:
আমজনতা নিয়ে নেতাদের মাথাব্যথা, আমআদমির মাথায় শুধুই আম
আসলে, গরুর শিং থাকবে কি থাকবে না, সেই নিয়ে মতবিরোধের জেরেই এই ভোটের আয়োজন। সুরক্ষার কথা ভেবেই গরুর শিং বিদায় করার কথা ভাবা হয়েছিল। রীতিমতো আইন করেই সে নিয়ম চালু করেছিল সরকার। কিন্তু অন্যদিকে, কারও কারও বক্তব্য ছিল যে এমনটা করলে মানসিক চাপে পড়বে গরুরা। দুধ দেওয়ার মতো শারীরবৃত্তীয় কাজেও এর প্রভাব পড়বে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় যে, ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ঠিক করা হবে, গরুর শিং রাখার অধিকার থাকবে কি না। আর তারপরেই এহেন ভোটের আয়োজন করে সুইটজারল্যান্ডের সরকার।
আরও শুনুন:
মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই শেষ ভোটদান! সবচেয়ে কম সময়ে নির্বাচনের নজির গড়ল কারা?
আসলে সুইটজারল্যান্ডে গরুর গুরুত্ব কম নয়। শিং রাখার অধিকার থেকে গলায় ঘণ্টা বাঁধা থাকবে কি না, এমন নানা বিষয়ে বারেবারেই সেখানে ভোটে দাঁড়িয়েছে গরুরা। সে দেশে আইন করা হয়েছিল, গরুর মাথায় শিং থাকলে গরুর মালিকদের মোটা টাকা জমা দিতে হবে। যা প্রতি বছরে ১৯০ সুইস ফ্রাংক, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার টাকা। তাই অনেকেই বাছুরের শিং গজানোর সময়েই বিশেষ উপায়ে সেটি পুড়িয়ে বা কেটে ফেলতেন। কিন্তু এই নিয়মকেই অমানবিক বলে রুখে দাঁড়ান আরমিন কাপল। প্রকৃতিগত ভাবে গরুর যে রূপ, তা বদলে ফেলার বিরুদ্ধে সওয়াল করেন তাঁরা। জনমত গড়ে তুলতে জোগাড় করেন কয়েক লক্ষ গরুপ্রেমীর স্বাক্ষরও। তারপরেই তাঁদের চাপে গণভোট করে সরকার। বলা যেতে পারে, শিংওয়ালা গরু ও শিংহীন গরুর দলের মধ্যেই হয় ভোটাভুটি। তবে শেষ পর্যন্ত এই ভোটে হেরেই গিয়েছিল শিংওয়ালা গরুরা।