বিয়েবাড়ি সেজেছে একেবারে রাজকীয় আয়োজনে। অন্যান্য বিয়েবাড়ির মতোই রয়েছেন নিমন্ত্রিত অথিতিরাও। অথচ যাঁদের বিয়ে, তাদের সমাজে বিয়ের কোনও অস্তিত্বই নেই। শুনতে অবাক লাগলেও, রাজকীয়ভাবে যে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে পাত্র-পাত্রী হল দুটি পাখি! কোথায় ঘটেছে এমন অদ্ভুত কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
বিয়েবাড়িতে বর এসেছে খাঁচায় করে। তবু এতটুকু অবাক হলেন না কেউই। বরং সাদরে আপ্যায়ন করে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হল তাকে। রীতিমতো ঠিকুজি কোষ্ঠী মেলানোর পরই এক হল হাত, থুড়ি ‘চার পা’। মহানন্দে বিয়ের ভোজ খেলেন অতিথিরাও। ভাবছেন তো ‘চার হাতের’ জায়গায় কেন চার পা বললাম? আসলে যাঁদের বিয়ে হচ্ছে, তাদের আলাদ করে হাতই নেই। বদলে রয়েছে দুটি ডানা। তাই খাঁচায় করে আসাতেও অস্বাভাবিক কিছু নেই! এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনিও বুঝেছেন কাদের বিয়ের কথা বলছি। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের এক গ্রামের মানুষ সাক্ষী থাকলো দুই পাখির বিয়ের।
আরও শুনুন: মানুষের আলিঙ্গন কি উপভোগ করবে গরুরা! পোষ্যদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কী মত গবেষকদের?
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। মধ্যপ্রদেশের পিপারিয়া গ্রামে ধূমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি টিয়া পাখি ও একটি ময়নার। দুজনেই অবশ্য গ্রামেরই দুই বাসিন্দার পরম আদরের পোষ্য। ময়না পাখিটির মালিক রামস্বরূপ পরিহার নামে এক ব্যক্তি। যিনি নিজেকে মালিক অপেক্ষা পাখিটির বাবা হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন। একেবারে নিজের মেয়ের মতোই তাকে বড় করেছেন রামস্বরূপ। অন্যদিকে বাদল লাল বিশ্বকর্মা নামে ওই গ্রামেরই আরেক বাসিন্দার বাড়িতে পরম যত্নে বড় হয়েছে একটি টিয়া পাখি। কিছুদিন আগে দুই বাড়ির লোকেরা ঠিক করেন, তাঁদের দুই পোষ্যের বিয়ে দেবেন। তবে খুব সহজে এই বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়নি। বিয়ের আগে গ্রামের বয়স্করা এক হয়ে পাখিদুটির কোষ্ঠী পরীক্ষা করেন। সেখানে জোটক বিচারে পাখিদুটি পাশ করার পরই তাদের বিয়েতে সম্মতি দেন রামস্বরূপ ও বাদল লাল। তারপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনক্ষণ ঠিক হল, হল রাজকীয় আয়োজনও। স্বাভাবিক ভাবেই দুই পাখির বিয়েতে চমকের অভাব ছিল না গ্রামবাসীর জন্য। প্রথমেই খাঁচায় করে বর আসতে দেখে বেশ চমকে যান গ্রামবাসীরা। একইভাবে সাজানো হয়েছিল কনে ময়নাটিকেও। তবে এখানেই শেষ নয়। বরকে আনা হয় রীতিমতো ব্যান্ড পার্টি সহযোগে। সঙ্গে আসে একদল বরযাত্রীও।
আরও শুনুন: বিস্ময় বালক! মাত্র ৯ বছর বয়সেই গ্র্যাজুয়েট, গিনেস বুকে নাম উঠল খুদের
রীতিমতো মন্ত্র পড়ে হিন্দু মতে বিয়ে হল পাখি দুটির। যদিও ভারতীয় সংস্কৃতিতে পশুপাখির বিয়ে দেওয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। অনেক সময় বৃষ্টি হওয়ার আশায় ব্যাঙের বিয়েও দেওয়া হয় গ্রামেগঞ্জে। তবে ধুমধাম করে টিয়া-ময়নার বিয়ে দেওয়ার এমন নজির আর বোধহয় নেই। তাই এই অভিনব বিয়ে এখন ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে বেশ চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।