ঘুরতে যেতে কার না ভাল লাগে! তবে ঘরসংসার ছেড়েছুড়ে দেশ দেখার টানে পথে পথে! ভাবলেই শুরু হয় ঘরের জন্য মনকেমন! তবে এই দম্পতি সব পিছুটান ফেলে এসেছেন ঘরের দাওয়ায়। নিজেদের ছোট্ট গাড়িটি নিয়েই ঘুরে ফেলেছেন গোটা ভারত। ওই একরত্তি গাড়িই হয়ে উঠেছে তাঁদের পরিপাটি সংসার। আসুন, শুনি ভ্রমণপ্রিয় এই পরিবারের গল্প।
‘ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন’- এমন ইচ্ছে কার না হয় বলুন। তবে নানা কারণে বহু সময়েই সেই সুপ্ত ইচ্ছা থেকে যায় মনের গহিনেই। তবে এমনও কেউ কেউ থাকেন, যাঁরা সেসব সাংসারিক বেড়াজাল ভেঙে ফেলার সাহস রাখেন। যেমন ধরুন এই পরিবারটির কথাই। প্রায় একশো দিনের বেশি সময় ধরে তাঁরা বাড়ির বাইরে। ঘুরে ফেলেছেন প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছেন ২৮টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
আরও শুনুন: ভিড় নেই প্রেমিক-প্রেমিকাদের, যুদ্ধ থামার অপেক্ষায় দিন গুনছে ইউক্রেনের ‘প্রেমের সুড়ঙ্গ’
তবে ট্রেন বা উড়োজাহাজে চড়ে নয়। এ সমস্তটাই তারা ভ্রমণ করেছেন নিজেদের গাড়িতে করে। আর সেই গাড়িটাই হয়ে উঠেছে তাঁদের চলমান সংসার। কী নেই তাতে? জলের ক্যান, বিছানা, বালিশ, আলো, টর্চ থেকে হাজারটা জিনিস। এসবের সঙ্গে একটা তাবুও রয়েছে বটে। যদি কখনও কোথাও গিয়ে থাকতে হয়। তবে বেশির ভাগ দিনই গাড়ির ভিতরেই রাত্রিযাপন করেন তাঁরা।
অশোক ও তাঁর স্ত্রী প্রভা, আর তাঁদের বছর চারেকের ছেলে অবিযশ। আপাতত ভারত ঘুরতে ব্যস্ত এই পরিপাটি সংসার। জানুয়ারির গোড়ায় তামিলনাড়ু থেকে যাত্রা শুরু করেছিল তাঁরা। সেখান থেকে কেরল এবং কর্নাটক হয়ে উত্তরের দিকে রওনা হয় তাঁরা। হ্যাঁ, ওই একরত্তি গাড়িতেই।
আরও শুনুন: একটানা ২২ বছর ঘর ছেড়ে দূরে! সপরিবারে একশোরও বেশি দেশ ঘুরেছেন এই দম্পতি
দেশের নানা প্রান্ত থেকে নানা ধরনের সংস্কৃতি, নানা ভাষার স্বাদ নিয়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, গোটা পথটাই তাঁরা ক্যামেরাবন্দী করতে করতে গিয়েছেন। অশোক গাড়ির স্টিয়ারিং সামলাতেন, প্রভা শক্ত হাতে ধরে থাকতেন ক্যামেরা। তার সঙ্গেই ছিল ছোট্ট অবিযশকে সামলানোর গুরুদায়িত্ব। রাস্তার পাশের ধাবা বা হোটেল দেখে সকালের জলখাবারটা সেরে ফেলতেন সাধারণত। ফের চলত গাড়ি। এরই মাঝে এক ঘণ্টার ব্রেক নিয়ে নিজেরাই রেঁধে নিতেন দুপুর ও রাতের খাবার। এত সব সামলেই তাঁরা ঘুরে ফেলেছেন গোটা ভারত। থর মরুভূমির বুকে এক আকাশ তারার নিচে কাটানো রাত কিংবা কাশ্মীরের প্রথম বরফ, এ সমস্ত অনাবিল অভিজ্ঞতাই সঞ্চয় করেছেন তাঁরা নিজেদের জীবনের ঝুলিতে। সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন ইউটিউবেও।
মনের জোর তো ছিলই। তার সঙ্গে ছিল দেশ ঘোরার অদ্ভুত খিদে। আর সেই টানেই আজও ঘুরে চলেছে এই পরিবারটি। সংগ্রহ করে চলেছেন জীবনের রসদ।