যৌনতা সুখের হতে পারে, কিন্তু যৌন উত্তেজনা কি সবসময় সুখের কথা বলে! অন্তত এই তরুণীর ক্ষেত্রে তো তেমনটা বলেনি। উলটে বলেছে অসুখের কথা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যৌনতা নিয়ে এখনও নানারকম ট্যাবু রয়েই গিয়েছে সমাজ সংসারের আনাচেকানাচে। অথচ চিকিৎসক গবেষকরা সাফ জানিয়ে দেন, যৌনতা শুনে নাক সিঁটকানোর কোনও কারণ নেই। যৌনতার দরুন যে মন ভালো রাখার হ্যাপি হরমোন ক্ষরণ হয়, সে কথা তো জানাই। উপরন্তু, সুস্থ যৌনজীবন না থাকলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ। তবে এই তরুণীর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি খানিক আলাদা। যৌনতার অনুপস্থিতি নয়, বরং সবসময়েই যৌন উত্তেজনা জেগে থাকে তাঁর শরীরে। মনে হতে পারে যে, যৌন উত্তেজনা না থাকাও তো ভালো কথা নয়। ফ্রিজিডিটি বা যৌন শীতলতা বিষয়টি নিয়ে অনেকেরই মাথাব্যথা থাকে। সেখানে শরীর যে নিজে থেকেই উত্তেজনায় সাড়া দিতে পারছে, সে তো সুখের কথাই। কিন্তু তাতে সুখ বাড়া দূরে থাক, উলটে বেড়েছে অসুখই। আসলে এহেন উত্তেজনার জন্য তো তাঁর কোনও যৌন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ছে না। কোনও কারণ বা বাহ্যিক উদীপক ছাড়াই, সবসময়ে যৌনভাবে উত্তেজিত হয়ে থাকেন এই তরুণী। আর এই অবস্থাকে এক বিরল অসুখ বলেই চিহ্নিত করছেন চিকিৎসকেরা।
আরও শুনুন:
ঘুম নেই ভারতীয়দের চোখে! কিন্তু কেন?
শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সত্যি। স্কারলেট কাইটলিন ওয়ালেন রোড আইল্যান্ডের ব্যারিংটনের বাসিন্দা। বছর একুশের এই মার্কিন তরুণী জানাচ্ছেন, এহেন আজব রোগের ঠেলায় তাঁর জীবনটাই ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। চিকিৎসার পরিভাষায় এর নাম PGAD, অর্থাৎ পারসিস্টেন্ট জেনিটাল অ্যারাউজাল ডিসঅর্ডার। এ এমনই এক শারীরিক পরিস্থিতি যা অনিয়ন্ত্রিত অ্যারাউজাল বা যৌন উত্তেজিত অবস্থার সৃষ্টি করে। ওই তরুণী জানাচ্ছেন, এর ফলে তাঁর গোপনাঙ্গে সবসময়েই সুচ ফোটানোর মতো ব্যথা হতে থাকে। আসলে এ এক বিরল ধরনের স্নায়ুরোগ। এখন নয়, মাত্র ৬ বছর বয়স থেকেই এই অসুখের শিকার ওয়ালেন। তিনি যত বড় হয়ে উঠেছেন, ততই বেড়েছে এই সংক্রান্ত ব্যথা বেদনা। বছর পনেরো বয়সে পা রেখে ওয়ালেন বোঝেন, সারা সপ্তাহে তিনি প্রায় একটা গোটা দিনও পান না, যেদিন তাঁর শরীরে ব্যথা থাকে না। এর ফলে না তিনি ছোটবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে ছুটোছুটি করে খেলাধুলো করতে পেরেছেন, না পেরেছেন ঠিকমতো পড়াশোনা বা কাজকর্ম করতে। ব্যথা ও জ্বালা কমাতে মাঝে মাঝে যৌনাঙ্গেই ঠান্ডা ক্রিম লাগিয়ে ফেলেন তরুণী। যদিও শরীরের এই অতিসংবেদনশীল অংশে এমন রাসায়নিক মলম লাগানোর জেরে উলটো বিপদ ঘটে। র্যাশ বেরোয়। সব মিলিয়ে, এই পরিস্থিতিতে আদৌ যৌনতার কোনও সুখ নেই। বরং যা রয়েছে তা আদতে প্রচণ্ড কষ্টই, সাফ জানাচ্ছেন ওই তরুণী।