রেস্তোরাঁয় গেলে মানতে হবে বিশেষ নিয়ম। কোনওভাবে করা যাবে না বদমাইসি বা দুষ্টুমি। করলেই গুনতে হবে মোটা টাকা জরিমানা। ভাবছেন তো, আপনি হঠাৎ রেস্তোরাঁয় গিয়ে কেনই বা এসব করতে যাবেন! কিন্তু আপনার সঙ্গে থাকা খুদে হয়তো কিছু না বুঝেই এই কাজ করে ফেলতে পারে। আর রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের দাবি, তেমনটা হলেও জরিমানা গুনতে হবে আপনাকেই। কোথায় চালু হয়েছে এমন নিয়ম? আসুন শুনে নিই।
বিবাহবার্ষিকি কিংবা জন্মদিন। সাধ করে মনের মানুষটিকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছেন। অর্ডার দিয়েছেন পছন্দের খাবারও। কিন্তু একি, খেতে যাওয়ার আগেই সেখানে হুলস্তূল কাণ্ড। কোত্থেকে এক খুদে এসে আপনার টেবিলে সজোরে এক ধাক্কা দিয়েছে। ব্যাস, জলের গ্লাস, খাবারের প্লেট সব উলটে যা তা অবস্থা!
খেতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা হয়নি, একথা কেউই বোধহয় হলফ করে বলতে পারবেন না। কিছু করারও নেই। রেগেমেগে খানিক চোখ বড় করে তাকালেন, ব্যাস এতটুকুই। সামনেই সেই খুদের বাবা-মা বসে। সলজ্জ হাসিতে তারা বুঝিয়ে দেবেন, ছোট বলেই এমন ভুল করে ফেলেছে। তাই আর কিছুই বলতে পারবেন না আপনি। ভাল রেস্তোরাঁ হলে হয়তো বিনামূল্যে খাবার বদলে দেবে। নাহলে পেটে না ঢুকিয়েই চোকাতে হবে ওই নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবারের দাম। তবে এই রেস্তোরাঁয় গেলে হয়তো কোনওদিনই এমন অভিজ্ঞতা আপনার হবে না। কারণ সেখানে কেউ এমন করলে মাশুল গুনতে হবে তার বাবা-মা কেই। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এক মার্কিনি রেস্তোরাঁয় চালু হয়েছে এমন নিয়ম। রেস্তোরাঁর তরফে নোটিশ জারি করে সাফ জানানো হয়েছে, সেখানকার সমস্ত কর্মীদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান জানাতে হবে গ্রাহকদের। শুধু তাই নয়, রেস্তোরাঁর ভিতরে কোনওভাবেই অভদ্র আচরণ করা যাবে না। সেখানকার কোনও জিনিস পত্রের ক্ষতিও করা যাবে না। এইসব করলেই দিতে হবে জরিমানা। এমনকি একথাও স্পষ্ট ভাবে লেখা রয়েছে, ‘নো রেসপেক্ট, নো সার্ভিস’। অর্থাৎ ঠিকমতো ব্যবহার না করলে রেস্তোরাঁয় খাবারও দেওয়া হবে না। আর সেইসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে ‘অ্যাডাল্ট সারচার্জ’ কথাটিও। অর্থাৎ কেউ যদি রেস্তোরাঁয় ভিতরে তার সন্তানকে সামলাতে না পারেন তাহলে তাঁকেও গুনতে হবে জরিমানা। ঠিক কত টাকা জরিমানা দিতে হবে, তার উল্লেখ না থাকলেও, খাবারের যা দাম হবে তার থেকে বেশ খানিকটা বেশি দিতে হবে একথা সাফ জানিয়েছে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: দেহব্যবসা ‘কুল’ পেশা! ব্যঙ্গ করতেই বেজায় সমালোচনার শিকার কমেডিয়ান
একথা প্রকাশ্যে আসতেই নেটদুনিয়ায় রিতিমতো হইচই শুরু হয়েছে। একদিকে এই ব্যবস্থার সমর্থন করেছেন কেউ কেউ, অন্যদিকে এর বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছেন অনেকেই। তাদের দাবি, এই কাজ অনৈতিক। বাচ্ছারা এদিক ওদিক ছোটাছুটি করবে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে এর জন্য বেশি টাকা নেওয়ার কোনও মানে হয় না। আবার অনেকেই মনে করছেন, এমন নিয়ম থাকলে তবেই ছোটরা সভ্য ভদ্র হবে। যে সাধারণ নিয়মগুলো বাড়ির বাইরে মেনে চলা উচিত, সেগুলো ছোট থেকেই শিখবে জানবে। সব মিলিয়ে এই ইস্যুতে রীতিমতো উত্তাল নেটদুনিয়া। তবে এতে বিশেষ মাথাব্যাথা নেই ওই রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের। তাদের দাবি, যথেষ্ট ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এতে কোনও ভুল নেই বলেই মনে করছেন তারা। এমনকি কেউ কেউ ওই রেস্তোরাঁ বয়কটের ডাক দিলেও বিশেষ হেলদল নেই কর্তৃপক্ষের। বরং তাঁরাই প্রচার করেছেন ছোট বাচ্ছাদের নিয়ে এখানে না আসার জন্য।