রোজকার মেনুতে চাই একটা গোটা মুরগি। টানা চল্লিশ দিন ধরে এমনই চলছে। শুনতে অবাক লাগলেও, এই খাদ্যাভ্যাস কোনও অতিমানবের নয়, এক সাধারণ মার্কিন যুবকের। এই কারণে ইতিমধ্যেই ‘চিকেন ম্যান’ উপাধি পেয়েছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ এমন অদ্ভুত অভ্যাস শুরু করার কারণ কী? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
আমিষ যাঁদের পছন্দ, তাঁদের খাবারের তালিকায় মুরগির মাংস থাকা খুবই স্বাভাবিক। তবে গোটা একটা মুরগি একবারে খেয়ে ফেলার কথা খুব কম লোকই ভাবতে পারেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রত্যেকদিন গোটা একটা মুরগি খাওয়া একপ্রকার অসম্ভবই বলা চলে। কিন্তু সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন এক মার্কিন যুবক। বিগত চল্লিশ দিন ধরে তিনি নাকি রোজ একটা করে গোটা মুরগি খেয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে তাঁর নামই হয়ে গিয়েছে ‘চিকেন ম্যান’।
আরও শুনুন: অকূল সমুদ্রে একা টিকে থাকার লড়াই, ৪০০ দিন পেরিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন ‘জয়ী’ ব্যক্তি
বছর ৩১ এর আলেকজান্ডার টমিনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সেখানে প্রায়শই বিভিন্ন ব্যক্তি নানা রকম খাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভিডিও করতেন। সেইসব দেখেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন একটি অদ্ভুত চ্যালেঞ্জ নেবেন। সর্বসমক্ষে ঘোষণা করে দেন তিনি আগামী বেশ কয়েকদিন ধরে রোজ একটা করে মুরগি খাবেন। যেহেতু গোটা মুরগিই খাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন, তাই চিকেন রোস্ট করে খাওয়ার কথাই তাঁর মাথায় আসে। প্রমাণ হিসেবে প্রত্যেকদিন তিনি সেই রোস্ট করা গোটা মুরগি খাওয়ার ভিডিও পোস্ট করবেন বলেও জানান। এভাবেই দিন কাটতে থাকে। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর এমন অদ্ভুত কর্মকাণ্ডের ভিডিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কখনও রান্নাঘর থেকে সদ্য প্রস্তুত রোস্টেড চিকেন নিয়ে আসা আবার কখনও চিকেন খেতে খেতেই ভিডিও বানাতেন তিনি। এভাবেই প্রায় একমাস কেটে যায়। ততদিনে নেটমাধ্যমে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সকলেই তাঁর এমন অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস কতদিন বজায় থাকে তা দেখার জন্য উৎসুক হয়ে থাকতেন। ধীরে ধীরে আরও দশ দিন কেটে যায়। আলেকজান্ডার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর এই কর্মকাণ্ডের চল্লিশতম দিনটি অনুরাগীদের সঙ্গেই উদযাপন করবেন। সেই মতো এক স্থনীয় নদীর জেটিতে জমায়েতের আয়োজন করা হয়। আলেকজান্ডার ভাবতেও পারেননি যে, বহু মানুষ তাঁর এই অদ্ভুতুড়ে কাজ দেখতে সেখানে জড়ো হবেন। প্রায় ৫০০ জনের সামনে সেদিন আস্ত একটা মুরগি শেষ করেন আলেকজান্ডার। খাওয়া শেষ হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সকলে। সকলে মিলেই তাঁর নাম দেন ফিলাডেলফিয়ার ‘চিকেন ম্যান’।
আরও শুনুন: রূপের নেশায় ঘায়েল মাফিয়া ডনও! প্রেমের ‘ফাঁদ’ পেতেই আসামিদের ধরেন এই মহিলা পুলিশকর্মী
তবে এমন উপাধি পাওয়ার জন্য কষ্টও করতে হয়েছে আলেকজান্ডারকে। এত বেশি মাংস একসঙ্গে খাওয়ার জন্য অন্য কিছুই প্রায় খেতেন না তিনি। ফলত এই ক-দিনে বেশ কিছুটা ওজনও কমে যায় তাঁর। তবু তাঁর এই কাজ দেখে অনেকেই আনন্দ পেয়েছেন বলে মনে করেন আলেকজান্ডার। তাই কষ্ট হলেও এ বিষয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর।