ডাকাতের দল কেড়েছে সারাজীবনের সঞ্চয়। অসহায় দম্পতির ভরসা বলতে প্রশাসন। আশা করেছিলেন, সঠিকপথে তদন্ত হবে, ডাকাতের দল ধরা পড়বে। কিন্তু সেগুড়ে বালি! অভিযোগ, তদন্তে এতটুকু আগ্রহ নেই পুলিশের। তারই প্রতিবাদে অনশনে বসেছেন এক বৃদ্ধ দম্পতি। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ইটের বদলে পাথর! এই ধারণায় বিশ্বাসী নন। হলেও অবশ্য কিছু করার ছিল না। কারণ একটাই, বৃদ্ধ বয়স। তাই জীবনের শেষপ্রান্তে সবকিছু খুইয়ে প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়েছিলেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। ভেবেছিলেন কিছু একটা সুরাহা হবে, সঠিক বিচার পাবেন। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উলটো। তাই প্রতিবাদের পথই বেছে নিয়েছেন। অবশ্যই অহিংস প্রতিবাদ। কিন্তু সেই প্রতিবাদের ধরণ দেখে বেজায় অবাক নেটদুনিয়া।
ঘটনা যোগীরাজ্যের। খবর বলে, সেখানকার প্রশাসন বেশ কড়া। সামান্য অপরাধের শাস্তি দিতেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। অথচ সাম্প্রতিক এই ঘটনা বলছে একেবারে উলটো কথা। যদিও সবটাই অভিযোগ, তাই পালটা দাবিও রয়েছে, কিন্তু নেটদুনিয়ায় এই বৃদ্ধ দম্পতিই সার্বিক সহানিভূতি পাচ্ছেন। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন উমেশ চন্দ্র আগারওয়াল। বরেলির মহল্লা পুরানমলে তাঁর দোকান। জল এবং স্যানিটারি দ্রব্যের ছোটখাটো ব্যবসা, তবে সেটুকুই সম্বল। কাছেই গোডাউন। যাবতীয় মালপত্র সেখানে মজুত রাখেন। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাতে হঠাৎই সেই গোডাউনে দুস্কৃতির দল হামলা চালায়। ট্রাক্টর নিয়ে কয়েকজন সোজা ঢুকে যায় ভিতরে। গোডাউন ক্ষতিগ্রস্থ তো হয়ই, একইসঙ্গে ওই দুষ্কৃতিরা অনেক জিনিস নিয়ে চম্পট দেয়। দাবি, প্রায় ১০ লক্ষ টাকার জিনিস খোয়া গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশে খবর দেন উমেশ। লিখিত অভিযোগও জানান। ভেবেছিলেন, পুলিশ নিশ্চয়ই কিছু একটা করবে। কিন্তু বেশ কয়েকদিন পেরোনোর পরও ঘটনার কিনারা হয়নি। তাতেই বৃদ্ধের দাবি, তদন্ত শুরুই করেনি পুলিশ। শুধু তাই নয়, উমেশ আরও বলেন, এই ঘটনায় অপরাধীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে পুলিশের। আর তাই গড়িমসি করছে প্রশাসন।
এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এর আগেও পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত না করার বা গড়িমসি করার অভিযোগ এনেছেন অনেকেই। যোগীরাজ্যেও যে এমন ঘটনা হয়নি, তা জোর গলায় বলতে পারবেন না কেউ। তবে এক্ষেত্রে বিষয়টা সকলের নজর কেড়েছে অন্য কারণে। পুলিশের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে অনশন শুরু করেন উমেশ চন্দ্র। তাতে যোগ দেন তাঁর স্ত্রীও। দুজনেই বয়স্ক, এই বয়সে না খেয়ে থাকা শরীরের জন্য ভালো নয় একেবারেই। তবু নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া অবধি এই অনশন চালিয়ে যাবেন বলেই তাঁরা জানিয়েছেন। যদিও এই ঘটনায় পুলিশের দাবি, তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও খোঁজ মেলেনি দুষ্কৃতীর, তাই কিছু করা সম্ভব হয়নি। এরই মাঝে অনশন শুরু করলেন যোগীরাজ্যের ওই বৃদ্ধ দম্পতি। এখন এর প্রভাব পুলিশের উপর কতটা পড়ে, তা দেখার জন্য মুখিয়ে আছে নেটদুনিয়া।