চলন্ত ট্রেন থেকে বাইরে পড়ে গিয়েছিল খুদে। তাও আবার রাতের বেলা। খবর পেয়েই খোঁজ শুরু করে পুলিশ। উদ্ধারও হয় খুদে। এই নিয়েই শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়ায়। কিন্তু কেন? খুদের প্রাণ বাঁচাতে কী এমন করল পুলিশ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঠিক যেন সুপারম্যান! তবে টিভির পর্দায় নয়, বাস্তবেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। খুদের প্রাণ বাঁচিয়ে সকলের নজর কেড়েছেন এক পুলিশ কর্মী। নেটদুনিয়াও তাঁকে নিয়েই মজেছে। এমনিতে পুলিশ সম্পর্কে অভিযোগের অন্ত নেই অনেকের। তাঁদের সকলকে কার্যত চুপ করিয়ে দিয়েছেন ইনি।
ঘটনা সেই যোগীরাজ্যের। সেখানকার প্রশাসন সম্পর্কে নানা অভিযোগ শোনা যায়। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনী যেভাবে অপরাধ দমনে সক্রিয়, তা পছন্দ নয় অনেকেরই। সংবাদমাধ্যমে হামেশাই সেসব খবর ছাপে। এবারের ঘটনা অন্যরকমের। পুলিশের বিরুদ্ধে নয় পক্ষে কথা বলছেন সকলে। বলা ভালো, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন। অবশ্য না হয়ে উপায়ও নেই! নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৮ বছরের খুদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন এক পুলিশ কর্মী। ঘটনার কেন্দ্রে একটা চলন্ত ট্রেন। তাতে সওয়ার ছিল ওই খুদে। কিন্তু অসাবধানে চলন্ত ট্রেন থেকে লাইনে পড়ে যায় সে। দরজা দিয়ে নয়, ইমার্জেন্সি জানলার পাশে বসাই হয়েছিল কাল। এমনিতেই বাইরে ঝুঁকে দেখা খুদেদের অভ্যাস থাকে। ইনিও তেমনটাই করতে গিয়ে বিপদ বাঁধিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে সকলেই ভেবেছিল, খুদেকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব নয়। একে চলন্ত ট্রেন, তারওপর রাতের বেলা ঘটেছে এই কাণ্ড। ট্রেন থেকে পড়ে দেহে প্রাণ থাকলেও রাতের অন্ধকারে অন্য ট্রেন এসে পিষে দিতেই পারে। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই কান্নার রোল তুলেছিলেন খুদের পরিবারের সদস্যরা। তবে রেল পুলিশ বাহিনী খবর পাওয়া মাত্র খুদের খোঁজ শুরু করে। রাতের ট্রেনে ভালোই গতি ছিল। মিনিট পাঁচেকেই ট্রেন অনেকদূর পৌঁছে যাওয়ার কথা। হয়েওছিল তাই। খুদের খোঁজে নেমে লাইন ধরে হাঁটতে শুরু করেন পুলিশ কর্মীরা। পায়ে হেঁটেই প্রায় ১৬ কিমি দূরে পৌঁছে যান তাঁরা। এমন সময় কোলে করে খুদেকে নিয়ে আসতে দেখা যায় এক পুলিশ কর্মীকে। তারস্বরে চিৎকার করে তিনি বলছেন, এই লাইনে আর কোনও ট্রেন যেন না আসে।
এই ভিডিও নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। সঙ্গে ঘটনার কথাও জুড়ে দেন পোস্টকারী। তাতেই শোরগোল পড়ে। সকলেই খুদের প্রাণরক্ষায় খুশি হয়েছেন। সেইসঙ্গে ওই পুলিশকর্মীর প্রশংসাও করেছেন। ঘটনার কথা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশও। রেল পুলিশের ওই কর্মীকে বাহবা জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। রাতের অন্ধকারে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এইভাবে খুদের প্রাণ বাঁচানো মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু তেমনটাই সম্ভব করে দেখিয়েছন ওই পুলিশ কর্মী।