রাহুল গান্ধীকে জুতো সেলাই শিখিয়েছিলেন। খুশি হয়ে নতুন সেলাই মেশিন পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। তাতে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন যোগীরাজ্যের চর্মকার। এবার রাহুলের সেলাই করা জুতোর জন্য লাখ টাকা দামও পেলেন তিনি। কী করলেন তারপর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রাহুলের সেলাই করা জুতো! তার কদর থাকবে একথা বলাই বাহুল্য। তাই বলে রাহুলের সেলাই করা জুতোর দাম ২ লাখ টাকা? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। যোগীরাজ্যে ঘটেছে ঠিক এমনটাই। সুলতানপুরের এক চর্মকারের সঙ্গে বসে জুতো সেলাই করেছিলেন রাহুল। সেই জুতোর জন্যই দু লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছেন এক ব্যক্তি। তাতেও অবশ্য রাজি হননি যোগীরাজ্যের চর্মকার।
কিন্তু কেন?
সুলতানপুরের ছোট্ট একটা গুমটিতে জুতো সারাইয়ের কাজ করেন রাম চৈত। খুব বেশি রোজগার হয় না। এতদিন হাতে করেই জুতো সেলাই করতেন। সম্প্রতি রাহুলের উপহার দেওয়া সেলাই মেশিন পেয়ে বেশ সুবিধা হয়েছে। আগে যেমন দিনে খুব বেশি ১-২ জোড়া জুতো সেলাই করতে পারতেন, এখন সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৮-৯ জোড়া। তাও এই কাজ করে রাতারাতি লাখপতি হওয়া সম্ভব নয়। তবু লাখ টাকা পকেটে পোরার সুযোগ নিতে নারাজ যোগীরাজ্যের চর্মকার। তাহলে কী রাহুলের সেলাই করা জুতোর জন্য আরও বেশি দাম চাইছেন তিনি? একেবারেই নয়। বরং রাম চৈতের দাবি কেউ কোটি টাকা দিলেও ওই জুতো জোড়া দেবেন না তিনি। সারাজীবন রাহুলের সেলাই করা জুতো নিজের কাছেই রেখে দিতে চান। আর্থিক অবস্থার যতই অবনতি হোক, এই জুতো কখনও বিক্রি করবেন না বলেই জানিয়েছেন তিনি।
আসলে, এমনটা হওয়াই যে স্বাভাবিক। এই যে রাতারাতি এমন পরিচয় পেয়েছেন, তাতো রাহুলের জন্যই। সেকথা তিনি নিজেও ভালমতো জানেন। পাশাপাশি রাহুলের দেওয়া সেলাই মেশিন পেয়েই ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন রাম চৈত। তাই রাহুলের জুতো অন্য কাউকে বিক্রির কথা ভাবতেই চান না তিনি। এই জুতোজোড়া ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখবেন বলেই ভেবেছেন। ইতিমধ্যেই দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় জমাচ্ছেন রাহুলের সেলাই করা জুতো দেখবেন বলে। গর্ব করে তা দেখাচ্ছেন রাম চৈত। ছোট্ট গুমটিতে জায়গা কম। তাও একজোড়া জুতো সেখানে বাঁধিয়ে রাখতে অসুবিধা হবে না। এক্ষনি জুতো বিক্রি করে ব্যবসা বাড়াতেই পারতেন রাম চৈত। কিংবা জুতো সারাইয়ের কাজ ছেড়ে অন্য কিছু করতে পারতেন। কিন্তু না, সেসব কিছুই করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। রাহুলের জন্যই নিজের জীবন বদলানোর সুযোগ পেয়েছেন। তাই রাহুলের সেলাই করা জুতো সারাজীবন আগলে রাখতে চান তিনি।