মাটির তলায় পরতে পরতে আজও সাজানো রয়েছে ইতিহাসের কত না অনাবিষ্কৃত জিনিস। খনন চলে নিয়ত। আর মাঝেমধ্যেই আমাদের চমকে দিয়ে উদ্ধার হয় নানারকম নিদর্শনের। ঠিক সেরকমই একটি ১৫০০ বছরের পুরনো মন্দিরের দেখা মিলল উত্তরপ্রদেশে।
মাটির নীচে যেন ঘুমিয়ে আছে ইতিহাসের অযুত কথামালা। মানুষ যত তার কাছাকাছি পৌঁছচ্ছে, ততই কথা বলে উঠছে তারা। নতুন নতুন আবিষ্কার আমাদের শিহরিত করছে। ঠিক সেরকমই এক মন্দিরের খোঁজ পাওয়া গেল উত্তরপ্রদেশের বিলসরে, যার বয়স আনুমানিক ১৫০০ বছর। আর তা থেকে জানা যাচ্ছে গুপ্ত বংশের বেশ কিছু অজানা কথাও। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ইতিহাসবিদদের মধ্যে।
আরও শুনুন: বাংলায় ঢাকে কাঠি পড়ার আগেই কাশ্মীরে দেখা দিলেন মা দুর্গা, উদ্ধার ১২০০ বছরের পুরনো মূর্তি
ঐতিহাসিক ভাবে বিলসর বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এবং ঠিক সেই কারণেই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই জায়গাটিকে সংরক্ষণ করে রেখেছে। বর্ষার মরশুমে এই সমস্ত সংরক্ষিত এলাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বসন্ত স্বর্ণকারের নেতৃত্বে সেই কাজই চলছিল বিলসরে। কাজ চলার সময় তিনি অনুভব করেন, এখানে খনন করলে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের সন্ধান মিলতে পারে। তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুরু হয় খোঁড়াখুঁড়ি। প্রথমে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়। কাছাকাছি অবস্থিত দুটি স্তম্ভের খোঁজ মেলে। তার একটির গায়ে মানুষের প্রতিকৃতিও আছে। কৌতূহলী হয়ে চলে আরও খননকাজ। আর তারপরই উদ্ধার হয় একটি সিঁড়ি। অনুমান করা হচ্ছে, সেটি মন্দিরেরই প্রবেশের সিঁড়ি। সেই সিঁড়ির ধাপেই দেখা যায় প্রাচীন শঙ্খলিপিতে কিছু লেখা। প্রত্নত্ব্ববিদদের অনুমান, এই লিপিতে খোদাই করা আছে শ্রী মহেন্দ্রাদিত্যের নাম। আসলে যা গুপ্ত বংশের রাজা কুমারগুপ্তের উপাধি। অর্থাৎ, বিলসরের এই মন্দির তৈরি গুপ্ত আমলে।
আরও শুনুন: ঘরে জলের কল খুললেই হু হু করে বেরোচ্ছে দিশি মদ? চোখ কপালে গেরস্থের
প্রসঙ্গত আজ আমরা মন্দির বলতে যা বুঝি, সেই কাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছিল গুপ্ত আমল থেকেই। এমনটাই মত অনেকের। অতীতে পাহাড় কেটে বা গুহার উপর যেভাবে মন্দির নির্মাণ করা হত, তার থেকে এই আদল অনেকটাই আলাদা। সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া মন্দিরটিও বেশ প্রাচীন। এত প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান হাতে গোনা মাত্র। ফলে এই আবিষ্কার ইতিহাসের পাতায় যে অনেক তথ্য জোগাবে, সে ব্যাপারে আশাবাদী ইতিহাসবিদরা।