দেশে ও রাজ্যে করোনা সংক্রমণ এখন কিছুটা কম। কিন্তু সামনে রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি। সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সতর্কতার অন্যতম দুই শর্ত হল নিয়মিত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা। এদিকে বাজারে নকল স্যানিটাইজারে ছেয়ে গিয়েছে! তাহলে? কীভাবে বুঝব কোনটা আসল আর কোনটা নকল স্যানিটাইজার? আসুন শুনে নিই।
করোনা ভাইরাসের এই পৃথিবীতে বহু ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। বিপন্ন হয়েছে অসংখ্য মানুষ। অপরপক্ষে কিছু ক্ষেত্রে উপার্জনের নতুন দিশাও খুলে গিয়েছে। যেমন মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। বাজারে বেরোলেই হাজারও কোম্পানির মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার চোখে পড়ে। বিপন্ন মানুষের প্রয়োজনের জিনিস, ফলে হুড়মুড় করে বিক্রিও হচ্ছে। মাস্ক নিয়ে অবশ্য তত সমস্যা নেই, কিন্তু কোন স্যানিটাইজার কার্যকরি আর কোনটা নয়, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
তবে জানা, যে স্যানিটাইজারে অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি, সেই স্যানিটাইজারই ভাইরাস রুখতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যে সব হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ৬০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালকোহল থাকে, শুধুমাত্র সেগুলিই হাতকে জীবানুমুক্ত করতে পারে। এদিকে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। যদিও সকলেরই দাবি, ৬০-৭০ শতাংশের বেশি অ্যালকোহল রয়েছে তাদের প্রোডাক্টে। তাহলে? কীভাবে চিনবেন কোন হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিরাপদ এবং ‘খাঁটি’?
আরও শুনুন: পাখির পালক থেকেই এসেছে পেন! কী করে রূপ পেল এখনকার কলম?
খাঁটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার চেনার বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় রয়েছে। সেগুলির মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন আসল ও নকলের পার্থক্য। যেমন, টিস্যু পেপারে কলমের দাগ দিয়ে ওই দাগের উপর কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার ঢালুন। পেনের কালি অতি দ্রুত টিস্যু পেপার জুড়ে ছড়িয়ে গেলে বুঝতে হবে ওই স্যানিটাইজারটি নকল বা এতে অ্যালকোহলের মাত্রা অনেকটাই কম। অপরপক্ষে টিস্যু পেপারে কালি ছড়িয়ে না পড়ে সেটি মুহূর্তেই শুকিয়ে গেলে বুঝতে হবে, সেটি অত্যন্ত কার্যকর।
আরেকটি উপায় এরকম- একটি পাত্রে সামান্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ঢেলে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে সেটি শোকানোর চেষ্টা করুন। যদি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শুকিয়ে যায় স্যানিটাইজার, তাহলে সেটি খাঁটি জিনিস। উল্টো দিকে নকল বা অ্যালকোহলের মাত্রা কম হলে সেটি শুকোতে সময় লাগবে অনেকটা বেশি।
আরও শুনুন: ফোনে ধরলেই তো বলেন ‘হ্যালো’, জানেন এই শব্দ কোথা থেকে এল?
আসল-নকল চেনার আরও একটি উপায় আছে। সেক্ষেত্রে একটি ছোট পাত্রে সামান্য ময়দা নিয়ে তাতে কিছুটা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ঢেলে দিন। এবার ময়দা মাখতে শুরু করুন। ময়দা যদি দলা পাকিয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে ওই স্যানিটাইজারটি নকল বা এতে অ্যালকোহলের মাত্রা অনেকটাই কম। খাঁটি স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটবে।
এই তিন পদ্ধতিতে বুঝে নেওয়া সম্ভব, যে কোনও হ্যান্ড স্যনিটাইজারের কার্যক্ষমতা কতখানি। নকল জিনিসে শুধু অর্থই নষ্ট হবে না আপনার, তার চেয়ে বড় কথা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা সত্বেও করোনা আক্রান্ত হতে পারেন আপনি। হয়তো দেশে ও রাজ্যে করোনা সংক্রমণ এখনও কিছুটা কম। তবু, সামনেই রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি। এতএব, সাধু সাবধান!