মাথার চুল থেকেই নাকি হতে পারে কোটি টাকার আমদানি! বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে একবার তিরুপতি দেবস্থানের চলতি অর্থবর্ষের বাজেটখানা দেখে আসুন না। কম করে হলেও ১২৬ কোটি টাকা আসতে চলেছে নাকি ওই চুল বাবদ। অন্তত তিরুপতি মন্দিরের অছি পরিষদের হিসেব তো তাই বলছে। আসুন, শুনে নেওয়া যাক তিরুপতি বালাজির আয়ের হিসেবনিকেশ।
বিশ্বের ধনীতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম তিরুপতি। করোনার ফাঁড়া কাটিয়ে ক্রমশ চাঙ্গা হচ্ছে এই মন্দির। আর তারই সাক্ষ্য দিচ্ছে তাদের চলতি অর্থবর্ষের বাজেট। তিরুমালার এই মন্দিরের অছি পরিষদ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তাদের আয় হতে পারে তিনহাজার একশো কোটি টাকার কাছাকাছি। আর তার মধ্যে ১২৬ কোটি টাকা আসবে কী থেকে জানেন? অবাক হবেন না। এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস আর কিছুই নয়, মন্দিরে নিবেদিত চুল।
আরও শুনুন: শক্তিপীঠের অন্যতম হিমাচলের জ্বালামুখী মন্দির, সাতটি শিখা এখানে নেভে না কখনও
চুলের থেকে আয়? চমকে গেলেন তো? তেমনটা কিন্তু হয়ে আসছে বহুদিন ধরেই। অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার তিরুপতি মন্দিরকে জাগ্রত বলেই বিশ্বাস করেন ভক্তরা। কথিত আছে বালাজি বা বেঙ্কটেশ্বর রূপে সেখানে অধিষ্ঠান করেছেন স্বয়ং বিষ্ণু। এই মন্দিরে গেলে ভক্তেরা তাঁদের চুল দান করে আসেন বালাজীর পায়ে। এজন্য মন্দির প্রাঙ্গণে থাকেন ৬০০ জনেরও বেশি ক্ষৌরকার। মন্দিরে প্রত্যেকদিন কয়েক টন করে চুল জমা পড়ে। সে সব বছরে একবার আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে বিক্রি করে দেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সেই চুল প্রসাধনী সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আর সেই চুল বিক্রি করেই প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা জমা হয় মন্দির তহবিলে।
আরও শুনুন: দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয় ইঁদুরকে, দেশের কোথায় আছে এমন মন্দির?
কেন এমন প্রথা রয়েছে এই মন্দিরে? কথিত আছে, লক্ষ্মীকে খুঁজতে এসে এই তিরুমালা পর্বতে এসে বসবাস শুরু করেন বিষ্ণু। তাঁর নাম হয় শ্রীনিবাস। লক্ষ্মীর প্রার্থনা শুনে শিব ও ব্রহ্মা একটি গোরু পাঠান। রাজার কাছে সেই গোরুটিকে বিক্রি করেন লক্ষ্মী। কিন্তু গোরুটি প্রতিদিন চরতে বেরিয়ে শ্রীনিবাসের জন্য দুধের ব্যবস্থা করে দিয়ে আসত। রাজকর্মচারী এই কাণ্ড দেখে রেগেমেগে গোরুটিকে হত্যা করে। কিন্তু সেই আঘাত নিজের উপরে গ্রহণ করেন শ্রীনিবাসরূপী বিষ্ণু। সেই চোট লেগে তাঁর মাথার অনেকটা চুল ছিঁড়ে পড়ে যায়। সে সময় নীলাদেবী নামে এক গন্ধর্ব রাজকুমারী নিজের মাথার কেশ দান করেছিলেন শ্রীনিবাস তথা ভেঙ্কটেশকে। সেই থেকেই এই মন্দিরে চুলদানের রীতি। মনে করা হয়, এই মন্দিরে চুল অর্পণ করলে তার চারগুণ সৌভাগ্য ফিরিয়ে দেন ভেঙ্কটেশ। আর সেই বিশ্বাস থেকেই প্রতিদিন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী এই মন্দিরে চুলদান করেন।
বাকি অংশ শুনে নিন।