ভয় জয় করার যে এমন উপায় হতে পারে কে জানত! যে মেয়ে এককালে মাকড়সার ভয়ে ছিলেন কাঁটা, এখন তাঁর ঘরেই বাস অন্তত চারশো মাকড়সার। বলা যায়, এদেরকে নিয়েই এখন তাঁর ভরা সংসার? কী করে মাকড়সার ভয় জয় করলেন ওই তরুণী? আসুন শুনে নেওয়া যাক তাঁর গল্প।
স্নানের ঘরে একবার একটা মাকড়সা ছিল। তরুণী তাতে এমন ভয় পেয়েছিলেন যে, মাকড়সা তাড়াতে এক বন্ধুকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। এখন সেই তরুণীর ঘরের দিকে তাকালে, তাঁর বন্ধু তো বটেই, বিশ্বের যে কোনও মানুষই হতবাক হয়ে যাবেন। কেননা চারশো মাকড়সা রীতিমতো সংসার পেতে ফেলেছে তরুণীর ঘরে। আর মাকড়সাদের নিয়ে এই ভরা সংসারে দিব্যি খুশি আছেন তরুণীটিও।
আরও শুনুন: মারাত্মক জুয়ার নেশা! কোভিড খাতের সরকারি অর্থ উড়িয়ে গারদে যুবক
তরুণীর নাম বিঠানি স্টেপলস, বাস ইংল্যান্ডে। খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, এই ২০২০ সালের আগের কথা। তখন মাকড়সা দেখলেই রীতিমতো ভয় পেতেন তরুণী। বাড়িতে মাকড়সা পুষবেন, এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি। অবশ্য পোষ্যের শখ ছিল। তা যে একদিন মাকড়সা হয়ে উঠবে, এমনটা তাঁর দূরতম কল্পনাতেও ছিল না। আট-পেয়ে প্রাণীটাকে ভয় পেতেন বলেই বোধহয় একসময় তারা জাল বিছিয়ে ফেলল তরুণীর মনে। মাকড়সাদের ভাবনা তাঁকে পেয়ে বসেছিল। তাদের নিয়ে সাত-পাঁচ ভাবনা ভাবতে ভাবতেই একসময় এই প্রাণীটিকে ভালোবেসে ফেলেন তরুণী। মাকড়সার ভয় জয় করবার এক অদ্ভুত উপায় তিনি খুঁজে বের করেন। ঠিক করেন, অন্য কোনও পোষ্য নয়, পুষলে তিনি মাকড়সাই পুষবেন। যাতে মাকড়সা দেখে তাঁর আর ভবিষ্যতে কখনও ভয় না লাগে।
আরও শুনুন: আশ্চর্য ভক্তি! টাকা ও গয়না নিয়ে চম্পটের আগে ফুল-বেলপাতা সহকারে পুজো সারল চোর
একটা ট্যারেন্টুলা প্রথম হাতে আসে। সেই শুরু। তারপর থেকে মাকড়সা খোঁজা আর পোষাকেই নিজের শখ করে তুলেছেন ওই তরুণী। আলাদা একটা ঘরে মাকড়সাদের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে দিয়েছেন। সেখানেই থাকে তাঁর প্রিয় পোষ্যরা। প্রজননও হয়েছে এর মধ্যে। সব মিলিয়ে এখন সে ঘরে বাস প্রায় শ-চারেক মাকড়সার। বছর দুয়েকের মধ্যে ভয় পেরিয়ে মাকড়সাদের সঙ্গে রীতিমতো সংসারই পাতিয়ে ফেলেছেন বছর আঠাশের এই কন্যা। মাকড়সা পোষার যে খরচ অত্যন্ত কম, সে কথাও জানিয়েছেন তরুণী। মাকড়সাদের এখন তিনি এতটাই ভালবেসে ফেলেছেন যে, সেগুলিকে তিনি ভাবেন ‘পোকেমন’। অর্থাৎ এককালে যাদের ভয় পেতেন, এখন তারাই হয়ে উঠেছে তরুণীর বিনোদন বা অবসর মুহূর্তের সঙ্গী।
তবে এই মাকড়সা পোষার বেশ কিছু ভাল দিকও আছে, যা টের পেয়েছেন ওই তরুণী। মাকড়সার বিভিন্ন প্রজাতিকে চিনতে পেরেছেন। ট্যারেন্টুলা নিয়ে সামগ্রিক ভয় কাজ করে মানুষের মনে। তরুণী কিন্তু এই বিষাক্ত প্রাণীটিকে নিয়ে একরকম গবেষণাই করে ফেলেছেন। কোন ট্যারেন্টুলা কতটা বিষাক্ত, মানুষের কে কতখানি ক্ষতি করতে পারে- এসব তথ্য এখন তাঁর মুখস্থ। খানিকটা কৌতূহল আর খানিকটা পর্যবেক্ষণেই মাকড়সা-রাজত্বের খুঁটিনাটি এখন তাঁর নখদর্পণে। মাকড়সাকে আজীবন ভয় পেলে যে, এতকিছু হয়তো তাঁর জানাই হত না। আপাতত এই চেনা আর জানার আনন্দেই মশগুল তিনি। আর তাঁকে দেখে বিস্মিত গোটা বিশ্ব।