ছোট্ট একটা গাড়ি। ঝড় তুলেছিল ভারতীয়দের মধ্যে। অনেক ছা-পোষা মধ্যবিত্তেরই প্রথম চার চাকা হিসাবে ঘরে এসেছিল টাটার ন্যানো গাড়ি। বলতে গেলে রতন টাটার স্বপ্নেরই প্রকল্প ছিল এই গাড়ি তৈরি। কিন্তু কেন এমন ছোট একটা গাড়ি বাজারে আনার কথা ভেবেছিলেন? এবার সেই কারণ জানালেন তিনি। আসুন শুনে নিই।
ছাপোষা মধ্যবিত্ত চার চাকার স্বপ্ন দেখে বটে। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয় কই! সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সেতুবন্ধন সচরাচর যেন হতেই চায় না। এই মধ্যবিত্তদের কাছেই যেন আশাপূরণের রূপকথা হয়ে এসেছিল ছোট্ট একটা গাড়ি। নাম, ন্যানো। টাটা গোষ্ঠী যখন বাজারে এই গাড়ি এনেছিল, অনেকেই যেন হাতে চাঁদ পেয়েছিলেন। পকেটে বিশেষ কোপ পড়ে না। আবার নিজের একটা চার চাকাও হয়। সস্তা এবং ছোট্ট গাড়িটি অনেক ভাবনাচিন্তা করেই তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন রতন টাটা। তবে ঠিক কেন এরকম একটা ছোট গাড়ির কথা ভেবেছিলেন রতন টাটা? অনেকদিন পর সেই কারণটাই জানালেন তিনি।
আরও শুনুন: জল যেন অ্যাসিডের মতো! খাওয়া তো দূর, কাঁদতে পর্যন্ত পারে না কিশোরী
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন তিনি। যেখানে খোলসা করে জানিয়েছেন ন্যানো জন্মের অকথিত কাহিনি। প্রায়শই তিনি একটি দৃশ্য দেখতেন। সাধারণ মধ্যবিত্তের বাহন বলতে তো বড়জোর একটা স্কুটার। সেই স্কুটারেই হয়তো চেপে চলেছেন স্বামী-স্ত্রী। স্বল্প পরিসরে ঠাসাঠাসি করে বসে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। আরও দুরবস্থা যদি তাঁদের বাচা থাকে স্কুটারে। বাচ্চাটিকে বসতে হয় মা-বাবার মাঝখানে। বেশিরভাগ সময়ই সে বেচারা চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে যায়। একেবারে স্যান্ডুইচের মতো দশা হয় তার। ঠিক এইখান থেকেই ভাবনার সূত্রপাত। রতন টাটা গোড়ায় ভাবছিলেন, যদি দু-চাকার মান এওং নিরাপত্তা কোনোভাবে উন্নত করা যায়, তাহলে হয়তো এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়া যাবে মানুষকে। শুরু হয় আঁকিবুকি, প্রাথমিক নকশা তৈরির কাজ। ক্রমে তা রূপ পায় একটা ছোট চার চাকার গাড়িতে। রতন টাটাও ঠিক করেন, দু-চাকা নয়, চার চাকাই তৈরি করা হোক, তবে তা হোক সাধারণের সাধ্যের কথা মাথায় রেখেই। এইভাবেই এসেছিল ন্যানো। রতন টাটা খুব জোর দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁর এই প্রকল্প ছিল একেবারেই মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই।
আরও শুনুন: পিঠেতে ঋণের বোঝা! পড়াশোনার খরচ চালাতে ডিম্বাণু বিক্রি তরুণীর
এই কারণ জানানোর পর, নেটদুনিয়ায় বহু মানুষই কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁকে। তিনি শিল্পপতি ঠিকই, তবে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থ মাথায় রাখেননি। সাধারণ মানুষের কথাও চিন্তা করেছেন। সেইমতো গড়ে তুলেছিলেন তাঁর প্রকল্প। যা বাস্তবের আলো দেখেছিল, অনেক মানুষের স্বপ্নপূরণও করেছিল। সাধারণের সাধপূরণের কথা আর ক-জন শিল্পপতি ভাবেন! ভেবেছিলেন রতন টাটা। আর সেই কারণেই প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা।