নামীদামি ব্র্যান্ডের পোশাক ছাড়া অন্য কিছু পরেন না। যে গাড়িটা ব্যবহার করেন তার দামও নেহাত কম নয়। তার ওপর ছুটি পেলেই চলে যান মালদ্বীপের মতো বিলাসবহুল জায়গায়। নিশ্চয়ই ভাবছেন কোনও বিখ্যাত ব্যবসায়ীর কথা বলছি! একেবারেই তা নয়। এমন বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন একজন কল সারাইয়ের মিস্ত্রী। এই কাজ করে ঠিক কত টাকা রোজগার হয় তাঁর? আসুন শুনে নিই।
মালদ্বীপে ছুটি কাটানো হোক বা বিলাসবহুল গাড়িতে চড়া, এসবের কোনওটাই মধ্যবিত্তের আয়ত্তের মধ্যে পড়ে না। সাধারণ কোনও চাকুরীজীবী বা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন এমন অনেকেই, সারা জীবনের সঞ্চয় জমিয়েও এই বিলাসিতা অর্জন করতে পারবেন না। কিন্তু এই ব্যক্তি সেই ধারণা সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছেন। স্রেফ কল সারানোর কাজ করেন তিনি, আর এই কাজের জোরেই বছরে ২ কোটি টাকা উপার্জন হয় তাঁর।
আরও শুনুন: ২৮৮ জনের মৃত্যুও মুছতে পারল না সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, কোন পথে হাঁটছে দেশ?
ভাবছেন তো, এমনটা কিকরে সম্ভব? ওই ব্যক্তির দাবি, মনের জোর আর কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সবই সম্ভব। মাত্র ২০ বছর বয়সেই কল সারাইয়ের কাজ শুরু করেন স্টিফেন। তারপর কেটেছে অনেকগুলো বছর, কিন্তু এখনও সেই আগের মতোই পরিশ্রম করতে সক্ষম তিনি। বর্তমানে লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে তাঁর ঠিকানা। সেখানকার এক নামি সংস্থায় কল সারানোর মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করেন তিনি। যদিও এই দীর্ঘদিন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকায় যথেষ্ট অভিজ্ঞতার মালিক হয়েছেন স্টিফেন। তাই জটিল কোনও কাজ ছাড়া অফিসের বাইরে যেতে হয় না তাঁকে। কিন্তু অফিসে থেকেও দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেন স্টিফেন। সে দেশের নিয়ম অনুযায়ী কেউ দিনে ১০ ঘন্টা সর্বোচ্চ কাজ করতে পারেন। স্টিফেন কেও মানতে হয় সেই নিয়ম। কিন্তু তাহলে তো বাড়তি রোজগার সম্ভব নয়। তাই কাজের পরও এমার্জেন্সি ডিউটিতে সবসময় মজুত থাকেন তিনি। প্রায়শয়ই সারাদিন কাজ করার পর সারারাত জাগতে হত। তবুও কুছ পরোয়া নেহি, এমন ভাব দেখিয়ে কাজ করে যান তিনি। আসলে এই অতিরিক্ত কাজের দরুন যে টাকা তাঁর রোজগার হয়, তা মাসমাইনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তাই যতই কষ্ট হোক এই কাজ তিনি চালিয়ে যাবেন বলেই পণ করেছেন। যেখানে তাঁর সতীর্থরা সাধারণ শ্রমিকের মতোই জীবন কাটান, সেখানে স্টিফেনের জীবনযাপন দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেন না তিনিও ওই একই কাজ করেন।
আরও শুনুন: দুধ বিক্রি করেই রোজ আয় ১৭ লক্ষ, ছকভাঙা পথে তাক লাগালেন আইআইটি-র স্নাতক
তবে স্রেফ পয়সার নেশাতেই যে তিনি উদয়াস্ত খাটাখাটনি করেন তা নয়। এই কাজটা করতেও বড় ভালোবাসেন স্টিফেন। তাই রাত জাগাতেও বিশেষ কষ্ট হয় না তাঁর, এমনটাই দাবি করেছেন খোদ স্টিফেন। সেইসঙ্গে উপরি পাওনা হিসেবে অঢেল রোজগার তো আছেই। তাই যেটুকু কষ্ট হয় তা বিলাসিতায় পুষিয়ে নেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর জীবনের গল্প শুনে অবাক হয়েছে নেটদুনিয়ার বাসিন্দারাও। সকলেই তাঁকে বাহবা দিয়েছেন। কাজের প্রতি এই নিষ্ঠার জোরেই যে এমন বিলাসিতা অর্জন করেছেন তিনি, তার প্রশংসা করেছেন সকলেই।