কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে মিশছেন কিংবা কী খাচ্ছেন- তার সব কিছুই জানতে পারছে অন্য কেউ। অথচ আপনি সে সবের বিন্দুবিসর্গও জানতে পারছেন না। শুধু অন্তর্বাস পরলেই আপনার উপর চলতে পারে দেদার নজরদারি! ভাবছেন তো এমনটাও কীভাবে সম্ভব? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সাধারণ পোশাকের সঙ্গেই পরা হয় অন্তর্বাস। আপাত ভাবে এতে তো আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যদি বলা হয়, সেই অন্তর্বাসের মধ্যেই আছে গোপন চোখ, যা সর্বক্ষণ নজর রাখবে আপনার গতিবিধির উপর। অবাক হচ্ছেন তো! তবে, আজকের এই প্রযুক্তির দুনিয়ায় এতে অবাক হওয়ারও বোধহয়য় তেমন কিছু নেই। কেননা এমন স্মার্ট অন্তর্বাসের চল শুরু হয়ে গিয়েছে মার্কিন মুলুকে।
আরও শুনুন: মাত্র একটি বিস্কুটের দাম উঠল ১ লাখ টাকা! কিন্তু কেন?
কিন্তু প্রশ্ন হল হঠাৎ এই নজরদারি কেন?
আসলে নজরদারি মানেই যে সবসময় খারাপ কিছু, তা নয়। বিশেষত গোয়েন্দা বা গুপ্তচরদের ক্ষেত্রে পেশাগত স্বার্থেই সবসময় চালাতে হয় নজরদারি। আর সেই প্রসঙ্গেই এই নতুন ধরনের পোশাকের কথা সামনে এসেছে। অন্তর্বাস নিয়ে অনেকেরই রীতিমতো ছুঁতমার্গ থাকে। কিন্তু গোয়েন্দা বা গুপ্তচরদের এমনটা ভাবলে চলে না। শত্রুর চোখে ধুলো দিয়ে তথ্য জোগাড় করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। আর সেই কাজেই এবার কাজে আসবে বিশেষ অন্তর্বাস। শুধু তাই নয়, বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে ‘স্মার্ট’ প্যান্ট, মোজা কিংবা সাধারণ জামাকাপড়। যেগুলোর প্রত্যকেটার ভিতরেই থাকবে এক বিশেষ চিপ। আর সেই চিপই ঘটাবে ম্যাজিক। যিনি পরবেন তাঁর যাবতীয় গতিবিধি ট্র্যাক করবে বিশেষ প্রযুক্তি। সেইসঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্বে সামনে থাকা সবকিছুর ভিডিও রেকর্ডও করতে পারবে ওই চিপ। কিছু ক্ষেত্রে হবে অডিও রেকর্ডও। এমনকি ওই প্যান্ট বা অন্তর্বাস যদি জলে ধোয়া হয় তাহলেও কোনও ক্ষতি হবে না ওই চিপের। কিন্তু কারা আনছে এমন বিশেষ চিপ?
আরও শুনুন: পছন্দের পর্ন অভিনেত্রীর সঙ্গে যখন খুশি যৌনতার সুযোগ, আর কী ম্যাজিক দেখাবে এআই!
উদ্যোগটি মূলত মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের। দীর্ঘদিন ধরে সে দেশের গুপ্তচরদের জন্য এমন বিশেষ কিছু তৈরির পরিকল্পনা ছিল। সম্প্রতি এক সংস্থা এই উপায়ের কথা কর্তৃপক্ষকে জানায়। সেইমতো তৈরি হয় বিশেষ পোশাক। আসলে ওই পোশাক যে কাপড় দিয়ে তৈরি করা হবে সেটিও সাধারণ কাপড় নয়। তাই বাইরে থেকে বোঝার উপায় থাকবে না এর মধ্যে কী আছে? পাশাপাশি জলের মধ্যেও এই চিপ ঠিক থাকার কারণে অনায়াসে যে কোনও জায়গায় যেতে পারবেন মার্কিন গুপ্তচররা। স্রেফ নজরদারি নয়, কোনওভাবে যদি ওই গুপ্তচরকে আটক করা হয়, তাহলে তার অবস্থান সম্পর্কেও অনায়াসে জানতে পারবেন গোয়েন্দারা। মনে করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে বিশেষ সুরক্ষা পাবে সে দেশের গুপ্তচররা। সেইসঙ্গে অপরাধ সম্পর্কেও আগাম সতর্কবার্তা পাবে দেশের গোয়েন্দা বিভাগ। আপাতত এই বিশেষ পোশাক তৈরির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করেছে সে দেশের সরকার। পরবর্তীকালে যা আরও বাড়তে পারে। তবে এই মুহূর্তে এই বিশেষ পোশাক খোলা বাজারে পাওয়া যাবে কি না সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। যেহেতু নজরদারির বিষয়টি এর সঙ্গে জড়িয়ে, তা সাধারণ মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে এই আবিষ্কার যে যুগান্তকারী তা বলাই বাহুল্য।