ঘুমোনোর সময় নাক ডাকা খুবই সমস্যার এক বিষয়। এক্ষেত্রে ঘুমন্ত ব্যক্তির কানে আওয়াজ না গেলেও, তাঁর আশেপাশে থাকা মানুষজনের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে বাধ্য। সেই সমস্যার সমাধান করতেই অদ্ভুত এক আবিষ্কার করেছেন একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের তৈরি করা এক বিশেষ ধরনের ‘বালিশে’ মাথা রেখে ঘুমালেই নাকি নাক ডাকার সমস্যা মিটে যেতে পারে। কী এমন ক্ষমতা রয়েছে এই বালিশের? আসুন, শুনে নিই।
কেউ একজন ঘুমিয়ে আছেন আর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নাক ডাকছেন। এমনটা তো আকছার ঘটেই থাকে। কিন্তু সেই নাক ডাকার শব্দে পাশে যিনি শুয়ে আছেন, তাঁর ঘুমের দফারফা হতে বাধ্য। চিকিৎসা করে কিছু ক্ষেত্রে এর সমাধান মিললেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাময়িক হয়। তাই ঘুমানোর সময় নাক ডাকার সমস্যা অনেকের কাছেই বিভীষিকার মতো। তবে এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানীর দাবি, তাঁদের তৈরি করা এক বিশেষ ধরনের বালিশে মাথা রেখে ঘুমোলে নাকি চিরতরে মিটে যাবে নাক ডাকার সমস্যা।
আরও শুনুন: অলৌকিক নয় লৌকিক, হৃৎপিণ্ড ছাড়াই ১ মাস বেঁচে ব্যক্তি, কীভাবে?
সম্প্রতি লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত এক প্রযুক্তিমেলায় এই আবিষ্কার সর্বসমক্ষে প্রকাশ করেছেন তাঁরা। প্রতি বছরই এই মেলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রদর্শন করা হয়। তারবিহীন টিভি, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন যন্ত্র এই মেলায় দেখানো হয়। সেখানেই এবার এই বিশেষ বালিশ প্রদর্শন করেছেন টেন মাইন্ডস নামে এক স্টার্টআপ কোম্পানি।
কিন্তু কীভাবে নাসিকা গর্জন নিয়ন্ত্রণ করে বালিশ?
বিজ্ঞানীদের মতে, এই বিশেষ বালিশটি তৈরি করা হয়েছে খুবই ছোট চারটি কুশন জুড়ে। যেগুলি ঘুমন্ত ব্যক্তির মাথার অবস্থান ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে এর ভিতরে আটকানো রয়েছে একটি যন্ত্রাংশ। যা বাইরে থাকা আরও একটি ছোট ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত। এই ডিভাইসটি নাকি ঘুমন্ত ব্যক্তির নাক ডাকার আওয়াজ রেকর্ড করতে সক্ষম। তাই এই বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমানোর সময় এই ডিভাইসটিকে রাখতে হবে মাথার পাশেই। এরপর ঘুমন্ত ব্যক্তি নাক ডেকে ফেললেই এই ডিভাইসটি বালিশের ভিতরে থাকা যন্ত্রাংশে সিগন্যাল পাঠাবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে সেই যন্ত্র বালিশে সামান্য কম্পন তৈরি করে ঘুমন্ত ব্যক্তিকে সামান্য সজাগ করে দেবে। যার ফলে সেই মুহূর্তে ব্যক্তির নাক ডাকা থেমে যাবে। একইসঙ্গে ব্যক্তিটির যাতে ঘুম না ভাঙে, তার জন্য তাঁর মাথার অবস্থান ঠিক আগের মতোই রাখতে সাহায্য করবে বালিশটির বিশেষ গঠন।
আরও শুনুন: ‘আমার ক্যানসারের কথা মা-বাবাকে বলবেন না’, চিকিৎসককে অনুরোধ ৬ বছরের খুদের
বিজ্ঞানীদের দাবি, ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে এই বালিশ ব্যবহার করে অনেকেই সুফল পেয়েছেন। তাই বাণিজ্যিক ভাবে বালিশটিকে সর্বসমক্ষে নিয়ে আসতে চাইছেন ওই কোম্পানির বিজ্ঞানীরা। এখানেই শেষ নয়, বাইরে থাকা ডিভাইসটি নাকি মোবাইলে সঙ্গেও একটি অ্যাপের দ্বারা যুক্ত করা যাবে। যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ঘুমানোর সময় কতবার নাক ডেকেছেন বা সেই ডাকের মাত্রা কতটা ছিল তা জানতে পারবেন। এভাবেই তিনি বুঝতে পারবেন আদৌ এই বালিশ ব্যবহার করে তাঁর সমস্যা মিটছে কি না! বলাই বাহুল্য, দক্ষিণ কোরিয়ার এই অদ্ভুত বালিশ সারা বিশ্বের বাজারে আসতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে, কিন্তু এই আবিষ্কার কার্যকর হলে তা অনেকেরই নিত্যদিনের সমস্যার সমাধান করবে।