বোধোদয় হল ৯ বছর পর। অন্য কারও নয়, স্বয়ং চোরের। মন্দির থেকে বিগ্রহের গয়না চুরি করেছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকা সব ফেরত দিয়ে জরিমানাও দিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু আচমকা কেন এই মন বদল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
গয়নাপত্র চুরি হয়ে গিয়েছিল স্বয়ং রাধা-কৃষ্ণের। সে-ও আজকের কথা নয়। ঘটনা ২০১৪ সালের। ওড়িশার গোপীনাথপুরে রাধা-কৃষ্ণের মন্দির থেকে আচমকাই খোয়া গিয়েছিল নানা মূল্যবান জিনিস। যার মধ্যে ছিল, স্বয়ং কৃষ্ণের হাতের বাঁশি, মাথার মুকুট। এ ছাড়া রাধারানি ও কৃষ্ণের কানের দুল ও অন্যান্য গয়নাও হাপিশ হয়ে গিয়েছিল। অনেক খোঁজ করেও জানা যায়নি, কে বা কারা সেই গয়না চুরি করেছিল। মন্দিরের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, তবে তাতে সুরাহাও হয়নি। অগত্যা বাধ্য হয়েই বিগ্রহের জন্য নতুন গয়না কিনে নিয়েছিলেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত।
আরও শুনুন: হিন্দু দেবতারা কেউই ব্রাহ্মণ নন, স্বয়ং শিবও তফসিলি! জেএনইউ উপাচার্যের মন্তব্যে বিতর্ক
পুলিশ চোর ধরতে পারেনি বটে, তবে চোর নিজে এসেই ধরা দিলেন। তা-ও আবার ৯ বছর পর। মন্দিরে হঠাৎ পাওয়া গেল একটা ব্যাগ। আর সেই ব্যাগের ভিতরই ছিল চুরি যাওয়া সব গয়না। শুধু গয়নাই নয়, সঙ্গে ছিল বাড়তি শ-তিনেক টাকাও। আর ছিল একটি চিঠি। এত বছর পরে ভগবানের গয়না ফেরত পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান মন্দির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অবাক হওয়ার তখনও বাকি ছিল। চিঠিটি খুলতেই তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যায়, ওই চিঠিতে আসলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে সেই চোর। এমনকি এহেন কাজ করার জন্য অনুতাপও প্রকাশ করেছে সে।
কী লিখেছে চোর? সে জানিয়েছে, লোভে পড়ে গয়না চুরি করলেও তারপর থেকে নাকি এতটুকুও শান্তি পায়নি সে। নিয়মিত দুঃস্বপ্ন দেখেছে। এমনকি খোদ ঈশ্বরের থেকে সে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিল বলেও জানিয়েছে ওই চোর। তবে তারপরেই যে সে গয়না ফেরত দিয়েছে এমনটাও নয়। কিন্তু সম্প্রতি নাকি সে ভগবদগীতা পড়ছিল। আর কৃষ্ণের বাণী পড়ার পরেই তার বোধোদয় হয় বলে জানিয়েছে ওই চোর। নিজের ভুল বুঝতে পেরে মন্দির থেকে চুরি করা গয়না ফের মন্দিরেই ফিরিয়ে দেয় সে।
আরও শুনুন: হিন্দু ধর্মে আঘাতের অভিযোগ, দেবী কালীর ‘বিকৃত’ কার্টুন পোস্ট করে বিপাকে ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী
তবে যে কারণেই হোক না কেন, দেবমূর্তির চুরি যাওয়া গয়না অবশেষে ফেরত পেয়ে আনন্দে ভেসে গিয়েছেন ভক্তরা। ইতিমধ্যেই গয়না ফেরত পাওয়ার দরুন উদযাপনও শুরু হয়েছে মন্দির চত্বরে।