বিয়ের পর নতুন বউ শ্বশুরবাড়ি যাবে। আমাদের দেশে এমনটাই প্রচলিত নিয়ম। ব্যতিক্রম যোগীরাজ্যের এই গ্রাম। এখানে বিয়ের পর বাড়ির মেয়ে কোথাও যায় না। বরং নতুন জামাই এসে থাকতে শুরু করে শ্বশুরবাড়িতে। কোন গ্রামের কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঘরজামাই থাকাই নিয়ম। বিয়ের পর স্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে উঠতে হয় নতুন বরকে। বছরের পর বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে যোগীরাজ্যের এক গ্রামে। আর এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। ব্যাপারটা বাঁকা ভাবেও দেখেন না কেউই। কারণ, এই গ্রামের সব বাড়িতেই অন্তত একজন ঘরজামাই হয়ে রয়েছেন।
আরও শুনুন: এক কাপ চায়ে ভারত-দর্শন বিল গেটসের, ‘বিল কত হল?’ প্রশ্ন ফুড ডেলিভারি সংস্থার
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। যোগীরাজ্যের বাগপথে এমনই এক গ্রাম রয়েছে যেখানে বিয়ের পর মেয়েরা কেউ শ্বশুরবাড়ি যায় না। সেই কাজ করতে হয় পাত্রকে। একসময় এই অঞ্চলের নাম ছিল প্রেমপুর। যদিও বর্তমানে তা বদলে করা হয়েছে ‘জামাইপুর’। আসলে গ্রামে জামাই-এর সংখ্যা এতটাই বেশি এর থেকে ভালো নাম বোধহয় আর হয় না। এমনিতে গল্পে বা সিনেমায় ‘ঘরজামাই’ ব্যাপারটা একটু আলাদা ভাবেই দেখা হয়। মানে বিয়ের পরও মেয়ে বাপেরবাড়িতে রয়েছে এই ঘটনাই বেশ ব্যতিক্রমের। শুধুমাত্র জামাইপুরে এটাই স্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এমন নিয়ম চালু হল কীভাবে?
আরও শুনুন: স্বামী মিথ্যেবাদী! সন্দেহে রোজ লাই ডিটেক্টর টেস্ট করান ‘বিশ্বের সবচেয়ে হিংসুটে মহিলা’
সেই অর্থে কোনও রোমাঞ্চকর কাহিনি নেই। বা বিশেষ কারও নির্দেশে এখানকার বাসিন্দারা এমনটা করতে শুরু করেছেন তাও নয়। নিছকই কাকতালীয় ভাবে এই নিয়ম চালু হয়েছিল বলে শোনা যায়। প্রায় ৪০ বছর আগে গ্রামের এক পরিবারে এই ঘটনা ঘটে। সেই পরিবারের চার মেয়েই বিয়ের পর নিজেদের বাপের বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করে। সঙ্গে নিয়ে আসে তাঁদের স্বামীদেরও। তারপর আরও অনেক পরিবারই এমনটা শুরু করে। বিয়ের পরও বাড়ির মেয়ে বাইরে যাবে না, এমনটাই নিয়ম হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে। বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৫০০ পরিবারের বাস। সকলেই এই নিয়মের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। গ্রামের কোনও মেয়ের বিয়ে হচ্ছে মানেই নতুন একজন সদস্য বাড়বে এলাকায়। আর সেটা আর কেউ নয়, সদ্য বিবাহিতা মেয়েটির স্বামী। অনেকসময় অন্য রাজ্যেও বিয়ে হয় গ্রামের মেয়েদের। সেক্ষেত্রেও নিয়মের তেমন অদলবদল হয় না। মানে বরের বাড়ি যেখানেই হোক, বিয়ের পর জামাই হয়ে জামাইপুরেই থাকতে হবে তাঁকে। অনেকে এই নিয়ম জেনেই বিয়ে করতে আসেন এই গ্রামে। না জেনে থাকলে, বিয়ের আগেই সেসব দায়িত্ব নিয়ে বুঝিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। শর্তে রাজি হলেই এক হবে চার হাত। বলাই বাহুল্য, এমন নিয়ম দেশের অন্য কোথাও সেই ভাবে দেখা যায় না। শোনা যায়, যোগীরাজ্যেই রয়েছে আরও এক গ্রাম যেখানে এমন ঘরজামাই থাকার চল রয়েছে। যদিও সেখানকার ব্যাপারটা একেবারে জামাইপুরের মতো নয়। তাই নাম আর নিয়ম দুদিক থেকেই যোগীরাজ্যের জামাইপুর গোটা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রমী।