সমুদ্রের তলায় শুয়ে আছেন ভগবান বিষ্ণু। চারপাশে অনন্ত জলরাশি। ধ্যানমগ্ন ভগবান ত্রিলোক দর্শন করছেন। দেখে তো তা মনে হচ্ছে না বিষ্ণুলোক। ঠিক যেন সমুদ্রের অতলে গভীর ধ্যানে রয়েছেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে সোশাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটা ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে সমুদ্রের তলায় শায়িত অবস্থায় রয়েছেন হিন্দু দেবদেবীরা। যারা এই ছবি পোস্ট করেছেন, তাঁদের দাবি এই মূর্তির বয়স পাঁচ হাজার বছর। সত্যিই কি তাই?
জায়গাটা ইন্দোনেশিয়ার বালি। আর আশ্চর্যের বিষয় এটাই ইসলামিক দেশে ৫০০০ বছরের পুরনো হিন্দু দেব দেবীদের মূর্তি খুঁজে পাওয়া। এর আগে ২০১৬-তেও এই ধরনের বেশ কয়েকটা ছবি সোশাল মিডিয়ায় আলোড়ন তুলেছিল। সেখানেও একই দাবি ছিল ৫০০০ বছর আগেও অস্তিত্ব ছিল হিন্দু ধর্মের। শুধু বিষ্ণু মূর্তি নয়, জলের নীচে রয়েছে ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তিও।
আরও শুনুন – ৯০ পয়সার চামচের দাম নিলামে উঠল ২ লাখ টাকা পর্যন্ত, কেন জানেন?
খুব ভাল করে ছবিগুলেো দেখলে বোঝা যাবে, জলের নীচে রয়েছে একটা বিশাল বাগান। বড় বড় পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা । সেখানে এক বুদ্ধ মন্দিরের মধ্যে রয়েছে ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি। এছাড়াও আটজন দেবদেবীর মূর্তির ঠিক মাঝখানেই ছিল শিবের মূর্তি।
আরও শুনুন – থর মরুভূমির বুকে স্কুল, অথচ নেই কোনও Air Conditioner!
জলের নিচে থাকা এই বিষ্ণু, অন্যান্য দেব দেবী ও বুদ্ধ মন্দির দর্শন করতে ডুবুরির পোশাক পরেই নামতে হয়। জলের নিচে এই অসামান্য স্থাপত্য দেখাতে স্কুবা ডাইভিং চালু করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। প্রত্যেক বছরই প্রচুর সংখ্যক পর্যটক সমুদ্রের তলায় এই বিষ্ণু মন্দির দেখতে আসেন।
এই মূর্তি দেখেই খানিক অনুমান করা যায়, বর্তমানে ইসলামিক রাষ্ট্র হলেও একটা সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল হিন্দু ধর্মের দ্বারা প্রভাবিত। ফলে সেখানে প্রাচীন হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি বা মন্দির পাওয়া খুব একটা অত্যাশ্চর্য নয়। কিন্তু, জলের নিচে বিষ্ণু মন্দির এবং তার গায়ে গা লাগিয়ে বুদ্ধ মন্দিরের এই ছবি ঝড় তুলেছে নেটিজেনদের মধ্যে।
আরও শুনুন – নগ্নতাই যখন পেশা, কেমন কাটে ন্যুড মডেলদের দিন?
ঘটনাটা ২০০৫ সালের। বালি উপকূলে যে পেমুটেরান গ্রামের সমুদ্রের তলায় বিষ্ণু মন্দির এবং বুদ্ধ মন্দিরের খোঁজ মিলেছিল সেখানে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না বলেই অনেকে দাবি করতে থাকেন। সেইসময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ইতিহাসবিদরা ছুটেছিলেন পেমুটেরানে। হিন্দু ধর্ম নিয়ে গবেষণাকারী এক দলও পৌঁছেছিলেন সেখানে। ইন্দোনেশিয়া সরকারের নির্দেশে সেদেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগও তদন্তে নামে।
আসল ঘটনাটা কী?
শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।