রামায়ণকে পবিত্র গ্রন্থ বলেই মান্যতা দেন ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা। কিন্তু ধর্মীয় দিক সরিয়ে রেখে, কারও ভালো থাকার পক্ষেও সহায় হতে পারে রামায়ণ, এমনটাই মত কোনও কোনও মনোবিদের। কী বলছেন তাঁরা? শুনে নেওয়া যাক।
রামায়ণকে ঘিরে এ দেশে ভক্তির জোয়ার বয় বরাবরই। গোটা দেশ জুড়ে অজস্র রামকথার প্রচলন, যেখানে নানা রূপে ধরা দিয়েছেন রাম। সম্প্রতি অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আবহে নতুন করে ভক্তদের উন্মাদনা জেগে উঠেছে রামায়ণকে ঘিরে। কিন্তু ধর্মীয় বিষয়গুলিকে যদি সরিয়েও রাখা হয়, তাহলেও কারও ভালো থাকার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারে রামায়ণ- সম্প্রতি এমনটাই বলছেন কোনও কোনও মনোবিদ। এ প্রসঙ্গে ঠিক কী যুক্তি রয়েছে তাঁদের?
আরও শুনুন :- বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে শতাধিক রামায়ণ, রামকে কেন্দ্র করেই জারি ভিন্নমতের অধিকারও
ডাঃ পঙ্কজ বোরাদে যেমন বলছেন, দেশ কাল নির্বিশেষে রামায়ণ এক শাশ্বত মহাকাব্য, এ কথা ঠিক। কিন্তু তা ছাড়াও মানসিক চাপ ও উদ্বেগ থেকে মুক্তির দিশা দেখাতে পারে এর চরিত্ররা। যেভাবে একের পর এক প্রতিকূলতার সামনেও রাম স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, তা থেকে জীবনযুদ্ধে লড়াই করার শিক্ষা নিতে পারে যে কোনও মানুষ। পাশাপাশি তাঁর নিষ্ঠা, সত্য ও আদর্শের প্রতি তাঁর অনমনীয় একাগ্রতা আসলে একটি দৃঢ় মননের পরিচয় দেয়। আবার রামচন্দ্রের প্রতি হনুমানের যে ভক্তি ও আনুগত্য, তা থেকেও একটি কথা স্পষ্ট। জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও অনুপ্রেরণা এবং তা থেকে পাওয়া দিশা যে কতখানি জরুরি, সে কথাই বুঝিয়ে দেয় হনুমানের কর্মকাণ্ড। শুধু তাই নয়, তাঁর সাহস এবং বুদ্ধি আসলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতেও শেখায়। আর নিজের স্বার্থ ছাড়াই কীভাবে কাজ করে যাওয়া যায়, সেই আদর্শেরও প্রতীক হতে পারেন হনুমান। পাশাপাশি অতিরিক্ত লোভ এবং অহং যে কাউকে পতনের দিকেই ঠেলে দেয়, রাবণের চরিত্র থেকেই তার প্রমাণ মিলবে বলেও মনে করছেন ওই মনোবিদ।
আরও শুনুন :- ‘রাম-সীতা’ দোকানে এলেই বিনামূল্যে খাবার, অভিনব বিজ্ঞাপন নয়ডার মুসলিম দোকানির
মহাকাব্য তো আসলে জীবনের কথাই বলে। জীবনের কোন পথে চলা উচিত আর কোন পথে নয়, জীবনকে বড় পটভূমিতে ফেলে সেই দিশা দেখায় মহাকাব্য। আর সেইভাবেই, ধর্মের কথা ছাড়াও জীবনের শিক্ষাও মিলতে পারে রামায়ণ থেকে, এমনটাই বলছেন ওই মনোবিদ।