কোভিড ও লকডাউন পর্ব জুড়ে অনেকেই অনেক কিছু বানিয়েছে বাড়িতে বসে। কেউ দারুণ সব রান্নাবান্নায় হাত পাকিয়েছেন, কেউ বা ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন নানা ধরনের কাজের জিনিস। তাই বলে একটা গোটা প্লেন! তাও আবার নিজের বাড়ির বাগানে বসে ইউটিউব দেখে! এ-ও কি সম্ভব। হ্যাঁ তেমনটাই ঘটিয়ে ফেলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বাড়িতে বসেই বানিয়ে ফেলেছেন গোটা একটা বিমান। এখন সেটা শুধু আকাশে ওড়ার অপেক্ষায়! আসুন, আজ শুনে নিই এমনই এক স্বপ্নপূরণের গল্প।
অনেক বছর ধরেই একটা স্বপ্ন ছিল তাঁর। নিজেদের একটা ব্যক্তিগত বিমান হবে বেশ। পেশায় তিনি ইঞ্জিনিয়ার। তবে প্লেন চালাতেও পারেন ৩৮ বছরের এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক। রয়েছে পাইলটের লাইসেন্সও। শুধু তাঁরই নয়, ক্রমশ এই স্বপ্নটা ছড়িয়ে গিয়েছিল গোটা পরিবারেই। স্ত্রী ও দুই খুদে কন্যা, সবাই মিলে এতদিন যে স্বপ্নটা বন্ধ চোখে দেখছিলেন, সেটাই সত্যি হল শেষমেশ।
নিজেদের বাড়ির বাগানেই একটি ছোটখাটো বিমান বানিয়ে ফেললেন ওই যুবক। প্লেন ওড়াতে জানতেন ঠিক কথা, তাই বলে নিজের হাতে আস্ত প্লেন বানানো তো মুখের কথা নয়। তবে হাতের কাছে ইউটিউব থাকলে আজকের দুনিয়ায় সবই নাকি সম্ভব। হ্যাঁ, ইউটিউবের সাহায্য নিয়েই নাকি ওই প্লেন বানিয়েছেন যুবক। বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে নিজের বাড়ির পিছনের বাগানেই তৈরি করেছেন ওই বিমান, যা বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা। সময় লেগেছে দু-বছরেরও বেশি।
আরও শুনুন: করোনাকালে চিনে আটকে দেশবাসী, ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভারত-কন্যা লক্ষ্মী
অনেক দিন ধরেই বিমান কেনার কথা ভাবছিলেন। তবে অনেক খুঁজেও বাজারে পছন্দমতো বিমান মেলেনি। তাই শেষ পর্যন্ত নিজের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপরেই ভরসা রেখেছেন ইংল্যাল্ডের এসেক্সের বাসিন্দা অশোক আলিসেরিল। লকডাউনের সময়ই প্রথম এই ভাবনাটা আসে মাথায়। কাজে লেগে পড়েন অশোক। স্ত্রী অভিলাষা দুবেও যতটা সম্ভব সাহায্য করেছেন অশোককে। আর সেই মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই শেষপর্যন্ত বিমান বানানোর কাজ শেষ করতে পেরেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: তিনি মেয়র, তিনিই নাগরিক… আশ্চর্য এই শহরের বাসিন্দা মাত্র একজনই
একেবারে নিজেদের একটা বিমান, ভেবেই আনন্দ ধরে রাখতে পারছেন না অশোক ও অভিলাষা। একই রকম উত্তেজিত তাঁদের মেয়ে ৬ বছরের তারা এবং ৩ বছরের দিয়া। প্রথম লকডাউনের সময় থেকেই এই প্লেনের জন্য টাকা জমানো শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা। প্রচুর কষ্টও করতে হয়েছে তার জন্য। রাত জেগে কাজ করে গিয়েছেন দিনের পর দিন। তবে আজকের এই খুশির কাছে সেসব তুচ্ছ মনে হয়, জানিয়েছেন অভিলাষা।
আপাতত এই প্লেন কবে আকাশে পাড়ি দেবে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা পরিবার। সবাইকে নিয়ে আকাশে ওড়ার মজাটাই আলাদা, জানিয়েছেন অশোক। সম্ভবত আগামী মাসেই আকাশে ডানা মেলবে ওই প্লেন। আর ওই প্লেনে করেই সপরিবারে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচ দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে অশোকের।