কাঠবিড়ালীটি এককথায় সুপারস্টার। মার্ক লোঙ্গো নামক জনৈক ব্যক্তির আদরের পোষ্য। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট করতেন তিনি। আর তাতেই বহু মানুষ হয়ে উঠেছিল কাঠবিড়ালীটির অনুগামী। ইনস্টাগ্রামে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ ফলো করতেন কাঠবিড়ালীটিকে। নির্বাচনে কী করে তার আবির্ভাব? শুনে নেওয়া যাক।
ছোট্ট ছাপোষা একটা প্রাণী। কাঠবিড়াল বা কাঠবিড়ালী। মহাকাব্যে তার ভূমিকার কথা আমরা জানি। তবে, সে কি মার্কিন মুলুকের নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে! সাম্প্রতিক এক ঘটনার গতিপ্রকৃতির ইঙ্গিত যেন সেদিকেই। তবে, সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক ট্র্যাজেডিও।
সেই ট্র্যাজেডির খবর জানতে গেলে, আগে কাঠবিড়ালীর জীবনের গল্পটা জানতে হবে। জীবনের গল্প, কেননা কাঠবিড়ালীর মৃত্যু হয়েছে। তবে, সে মৃত্যু মোটেও সুখকর নয়। আর এই ছাপোষা প্রাণীটির মৃত্যু যথেষ্ট আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সে মুলুকে। আসলে কাঠবিড়ালীটি ছিল এককথায় সুপারস্টার। মার্ক লোঙ্গো নামক জনৈক ব্যক্তির আদরের পোষ্য। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট করতেন তিনি। আর তাতেই বহু মানুষ হয়ে উঠেছিল কাঠবিড়ালীটির অনুগামী। ইনস্টাগ্রামে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ ফলো করতেন কাঠবিড়ালীটিকে। তবে, বিধি বাম! হঠাৎ র্যাবিসের আতঙ্ক মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। নিউ ইয়র্ক সিটির এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন বিভাগের তরফে রেড হয় ওই ব্যক্তির বাড়িতে। অসুখের ছড়িয়ে যাওয়া রুখতে কাঠবিড়ালীটিকে বাধ্য হয়েই বাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয় তাঁদের। আর তারপরই মৃত্যুর খবর আসে প্রাণীটির। সে খবর শুনে স্বাভাবিক মর্মামত ওই ব্যক্তি। জানিয়েছেন, তাঁর সাত বছরের বন্ধুর অপমৃত্যু হল। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাজকর্মে আরও সংবেদনশীলতা ও সহমর্মিতা প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। তা একেবারেই নেই বলে অভিযোগ করে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। ছোট্ট কাঠবিড়ালীটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে দ্রুতহারে।
আরও শুনুন: আলু খুঁজতে পুলিশকে ডাক! ১০০ ডায়াল করে মানুষের ‘আজব’ দাবি, সামলাতে হয় পুলিশকে
প্রাণীটির জীবন গেল বটে, তবে শুরু হোল জোর চর্চা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই মৃত্যুর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যেহেতু বহু মানুষ প্রাণীটির অনুগামী ছিলেন, তাঁরা এর প্রতিবাদ করেন। কেন এমন নিষ্ঠুর একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? অন্য কোনও উপায় কি ছিল না? এমন প্রশ্নেই উত্তাল হয়ে ওঠে চারিদিক। একই সঙ্গে পোষ্য রাখা, পোষ্য পালন নিয়েও শুরু হয় নানা আলোচনা। তবে, এসবের মধ্যে ট্রাম্প এলেন কী করে? তাঁকে আনলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ওই ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে, সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর মত, একজন মালিক আর তাঁর পোষ্যের সম্পর্কের ভিতর সরকারের ঢোকা উচিত নয়। যদিও এখানে অসুখ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও পদ্ধতি কি অবলম্বন করা যেত না? সেখানেই সরকারের পদক্ষেপ আরও বেশি সংবেদনশীল হতে পারত বলে অনেকে মনে করছেন। এবং প্রায় এক মত মাস্কেরও। একটু মজা করেই তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় আসেন, তবে নিশ্চিত কাঠবিড়ালী প্রজাতির মঙ্গলের জন্যও সচেষ্ট হবেন।
আরও শুনুন: স্বামী-স্ত্রী এক ছাদের তলায় কিছুতেই থাকবেন না, এই শর্তে বিয়েই এখন ট্রেন্ডিং
হয়তো মজা করেই বলা, তবু বন্যপ্রাণ রক্ষার ক্ষেত্রে যে নৈতিকতার প্রশ্নটি উঠেছে তা হেলাফেলার নয়। যাঁরা পোষ্যপালন করেন, তাঁরা এ দাবি তুলতেই পারেন। মার্কিন মুলুকে যখন জোর কদমে নির্বাচন চলছে, তখন ছোট্ট একরত্তি একটি কাঠবিড়ালীও যেন সেখানে নিজের ভূমিকা রেখে গেল।