আফগান পুরুষকে বিয়ে করে আফগানিস্তানে পাড়ি দিয়েছিলেন বাঙালি মেয়ে সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তালিবানের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে পালিয়েছিলেন সাহসে ভর করে। দুনিয়াকে জানিয়েছিলেন তালিবান রাজত্বে মানুষের দুর্দশার কথা। সন্দেহ করা হয় তালিবানের গুলিতেই প্রাণ গিয়েছিল তাঁর। শুনুন এই নির্ভীক বাঙালি মেয়ের গল্প।
ফের আফগানিস্তান দখল নিল তালিবান। ফের একধাক্কায় পিছিয়ে গেল সেদেশের মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। সম্পূর্ণভাবে দেশ দখল করার আগে তালিবান যদিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, মেয়েদের অধিকারকে মর্যাদা দেবে তারা, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি অন্য কথাই বলছে। মেয়েদের পড়াশোনা বা কাজ করার সমস্ত অধিকারের সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে কড়া ফতোয়া। আর সেই বিধিনিষেধ-ই মনে করিয়ে দিচ্ছে ভারতের এক নারীকে। যিনি লিখেছিলেন, কোনও মহিলা চেষ্টা করলে হয়তো হিমালয়ও পেরোতে পারবে। কিন্তু এই দেশে কোনও মহিলার পক্ষে বাড়ির চৌকাঠ পেরোনোও অসম্ভব।
আরও শুনুন: আফগানিস্তানে তালিবান শাসন কায়েমে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মালালা
তিনি সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের জীবন দিয়ে তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন, তালিবানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরিণাম কী হতে পারে।
আরও শুনুন: প্রতিবাদীদের গুলি থেকে মহিলা অপহরণ – ক্ষমতা দখলের পরই তুমুল কুকীর্তি তালিবানের
প্রেমে পড়েছিলেন এক কাবুলিওয়ালার। ১৯৮৮ সালের ২ জুলাই, ২৭ বছর বয়সে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ে করেন জানবাজ খান নামের ওই ব্যবসায়ীকে। স্বামীর সঙ্গে প্রথমবার পাড়ি দেন আফগানিস্তানে। কাবুল থেকে প্রায় ১৮ ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে গজনী এলাকার শারানা শহরে ছিল সুস্মিতার শ্বশুরবাড়ি। আফগানিস্তানে সে সময় এক দিকে সোভিয়েত বাহিনীর আগ্রাসন, অন্য দিকে মুজাহিদ বাহিনীর জেহাদ। পাহাড় ঘেরা দেশটা সবসময় অশান্ত। ক্রমশ তালিবানি শক্তির উত্থান দেখলেন সুস্মিতা। ঠিক এখন যেমন ফতোয়া জারি হয়েছে মেয়েদের বাইরে বেরোনোর ওপর, তখনও অবস্থাটা তেমনই ছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বই, টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র। মেয়েদের কার্যত খাঁচায় পুরে ফেলা হল। বাঙালি মেয়েটিও বন্দি হলেন সেই অন্ধকূপে।
এদিকে জানবাজ লুকিয়ে চলে আসেন কলকাতায়। কট্টর রক্ষণশীল শ্বশুরবাড়িতে সুস্মিতার প্রাণ ওষ্ঠাগত। ১৯৯৫ সালে ঠিক করে ফেললেন, পালাতে হবে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে লুকিয়ে-চুরিয়ে পাকিস্তান অবধি এসেও পৌঁছলেন। কিন্তু মিলল না পাসপোর্ট-ভিসা। আবার সেই শ্বশুরবাড়ি।
বাকি অংশ শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।