জাতীয় পশুর তকমা দিতে হবে গরুকে। এমনই আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে সরাসরি এই দাবিকে নাকচ করল শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি আবেদনকারীকে রীতিমতো ভর্ৎসনাও করেছেন বিচারপতি। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জাতীয় পশু হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে গরুকে, এই আরজি নিয়ে সরাসরি দেশের শীর্ষ আদালতে দায়ের করা হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। গোবংশ সেবা সদন নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, গরুকেই এবার থেকে দেশের জাতীয় পশু বলে ঘোষণা করা হোক। কিন্তু ওই মামলার শুনানিতে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে সেই আরজি নাকচ করে দিলেন বিচারপতিরা। মামলাকারীর আইনজীবীকে সরাসরি তাঁরা প্রশ্ন করলেন, ‘এটা কি আদৌ আদালতের কাজ?’ এরকম একটি কারণে মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে দেখে যে তাঁরা যথেষ্ট বিরক্ত, রায়ে সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে বিচারপতি এস কে কওল এবং বিচারপতি অভয় এস ওকা-র ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও শুনুন: স্কুলের মধ্যেই মাজার বানানোর নির্দেশ, আপত্তি সরস্বতী পুজোয়… মধ্যপ্রদেশে বরখাস্ত মুসলিম শিক্ষিকা
সাম্প্রতিক কালে গোমাতা ইস্যুতে বারেবারেই সরগরম হয়েছে কেন্দ্রীয় রাজনীতি। গোমাংস নিষিদ্ধ করা বা সেই মাংস থাকার অভিযোগে কাউকে হত্যা করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। দেওয়া হয়েছে গরুকে মাতৃজ্ঞানে পুজো করারও নির্দেশ। এদিকে নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম অ্যাজেন্ডা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এই প্রাণীটিকেই। আর সেই সূত্র ধরেই তৈরি হচ্ছে গো-রক্ষা কমিটির মতো কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যাঁদের প্রধান কাজ গরুকে রক্ষা করা। এবার তেমনই এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে গরুকে জাতীয় পশু বলে স্বীকৃতি দেওয়ার আরজি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানাল, এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই। উলটে আবেদনকারী সংগঠনটিকে কার্যত তুলোধোনা করেন বিচারপতিরা। বাদী পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে তাঁরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘কোন মৌলিক অধিকার এখানে লঙ্ঘন করা হয়েছে? কেউ শুধুমাত্র আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে কি আদালত আগুপিছু না ভেবেই কাজ করবে?’ বলাই বাহুল্য, এ কথার কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি ওই আইনজীবী। এহেন মামলা দায়ের করে সুপ্রিম কোর্টের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্যেও বাদী পক্ষকে ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতিরা।
আরও শুনুন: চুম্বনে অ্যালার্জি! ডেটে গিয়ে প্রেমিকের আদরের জেরে প্রাণ নিয়েই টানাটানি যুবতীর
যদিও গোরক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী সরব হয়েছিলেন, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। বাদী পক্ষকে জরিমানা করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় আদালত। এরপরেই বাদী পক্ষের তরফে আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ভবিষ্যতেও যেন এহেন প্রস্তাবে আদালতে পেশ না করা হয়, মামলার শুনানিতে সেই বিষয়েও আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।