সাধারণ বেশভূষা। নেহাতই ছাপোষা চেহারা। তবে, তাঁর বক্তৃতা মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এতটাই মুগ্ধ তিনি, যে, ভোটে লড়ারও প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছেন তাঁকে। কে এই মহিলা? আসুন শুনে নেওয়া যাক তাঁর কথা।
বক্তা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অসাধারণ। এমনকী তাঁর অতি বড় বিরোধীও এ কথা স্বীকার করেন। সম্প্রতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও মুগ্ধ হয়েছেন এক মহিলার বক্তৃতা শুনে। না, তিনি কোনও রাজনৈতিক নেত্রী নন। তবে তাতে কী! সাধারণ হয়েও তিনি অসাধারণ।
আরও শুনুন: উচ্চবর্ণের ভয়ে পরতেন না জুতো! ‘ফতোয়া’ উড়িয়ে দক্ষিণের গ্রামে বিপ্লব দলিত বাসিন্দাদের
সম্প্রতি বারাণসী গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে গ্রামীণ মহিলাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তিনি। ‘বিকাশ ভারত সংকল্প যাত্রা’র সূত্রে গ্রামীণ মহিলারা কতটা উপকৃত হচ্ছেন, তা পরখ করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। সেখানেই বক্তব্য রাখেন এই মহিলা। তাঁর নাম ছন্দা দেবী। যতক্ষণ তিনি কথা বলছিলেন, প্রায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়েই তাঁর বক্তব্য শোনেন প্রধানমন্ত্রী। এত স্পষ্ট করে তিনি তাঁর লড়াই এবং কৃতিত্বের কথা শোনাচ্ছিলেন যে, মুগ্ধ না হয়ে পারেননি মোদি। ছন্দা দেবীর কথা শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বড় মানুষও এরকম করে বক্তব্য রাখতে পারেন না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাঁকে একটি প্রস্তাবও দেন। বলেন, আপনি এত চমৎকার বক্তৃতা দিতে পারেন, আপনি কি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর থেকে এমন প্রস্তাব পাওয়া আসলে শংসাপত্রই।
তার পর থেকেই ছন্দা দেবীর পরিচয় জানতে উৎসুক হয়ে ওঠে গোটা দেশ। জানা যায়, তিনি রামপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন বলার মতো কিছু ছিল না। পড়াশোনাও বেশিদূর করে উঠতে পারেননি। একটি স্বনির্ভর সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাঁর ভাগ্য বদলায়। ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনি চাষবাস শুরু করেন। সেখান থেকেই অর্থ উপার্জনের শুরু। ক্রমে উন্নতি হয়, সঞ্চয়ের অঙ্কও বাড়তে থাকে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাটনির জেরে শুধু নিজের উন্নতি নয়, অন্যের উন্নতিও করতে শুরু করেন ছন্দা দেবী। নিজে ‘লাখপতি’ হওয়ার পর থেকে অন্যদের ঋণ দিতে শুরু করেন। নিজের ভাগ্য যেমন বদলেছে, অন্যদের ভাগ্য বদলানোর জন্যেও তিনি সচেষ্ট। এই ছন্দা দেবীই মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর। তিনিই আমন্ত্রণ জানান তাঁকে। সেই সূত্রেই বক্তৃতা দেন, যা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।
আরও শুনুন: পাকিস্তানের নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন হিন্দু মহিলা, কে এই সাভিরা প্রকাশ?
তবে, ভোটে লড়ার প্রস্তাবের উত্তরে ছন্দা দেবী জানান, তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীরই। তাঁকে দেখেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন সকলে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সামনে এসে তিনি যে কথা বলতে পেরেছেন, তাতে তিনি যে যারপরনাই আন্দিত সেকথাই জানান ছন্দা দেবী।