গ্যাসের দাম যেন গ্যাসবেলুনের মতোই উড়ান দিয়েছে, নিচে নামার কোনও লক্ষণই নেই। এক ধাক্কায় ৫০ টাকা দাম বেড়ে এখন কলকাতায় সিলিন্ডারের দাম ছাড়িয়েছে ১০০০ টাকার গন্ডি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই গ্যাস সাশ্রয়ের জন্য ইন্ডাকশন বা অন্য কিছুতে রান্না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যাঁরা গ্যাসেই রান্না করতে অভ্যস্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে এই বিকল্প পদ্ধতি একটু অসুবিধাজনকই। বরং গ্যাস বাঁচিয়ে চললে, খানিকটা সাশ্রয় হবে। কী কী উপায়ে গ্যাস বাঁচানো যায়? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মাত্রাছাড়া দাম বেড়েছে গ্যাসের। এতটাই যে, গ্যাস না জ্বালিয়ে শুধু সিলিন্ডারে হাত দিয়েই যেন ছেঁকা খাচ্ছেন গেরস্থরা। এই সময়টায় সাশ্রয়ে মন দেওয়া জরুরি। তবে শুধু দাম বেড়েছে বলেই নয়, সামগ্রিক ভাবেই গ্যাস সাশ্রয়ের দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। সাধারণ করেকটি ব্যাপার মেনে চললে, গ্যাসের খরচ অনেকটাই কমানো যায়। এক এক করে সেগুলো শুনে নেওয়া যাক।
আরও শুনুন: শহিদ হয়েছিলেন স্বামী, শিক্ষকতা ছেড়ে তবু ভারতীয় সেনাতেই যোগ দিলেন স্ত্রী
প্রথমত, আঁচ অর্থাৎ গ্যাসের শিখা একভাবে রেখে রান্না করা উচিত নয়। প্রয়োজনমতো তা কমাতে বা বাড়াতে হবে। বরাবর যদি গ্যাসের ফ্লেম বাড়িয়ে রাখা হয়, তাহলে গ্যাসের খরচও বাড়বে। এই বাড়তি খরচটুকু সহজেই বাঁচানো যায়। খাবার যখন সিদ্ধ হবে তখন নিভু নিভু আঁচে বা লো-ফ্লেমে গ্যাস জ্বালানোই ভালো। দ্বিতীয়ত, যে যে কাজে প্রেশার কুকার ব্যবহার করা যায়, তা করতে হবে। চাল বা ডাল সেদ্ধ, কিংবা মাংস সেদ্ধ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রেশার কুকার ব্যবহার করা উচিত, তাতে গ্যাসের সাশ্রয় হবে। রান্নার সময়য় জলের ব্যবহার একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্যাস বাঁচানোর ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হবে। যেটুকু জলের দরকার, সেদ্ধ করা বা খাবার গরম করার ক্ষেত্রে সেটুকু জল ব্যবহার করাই শ্রেয়। কেননা বাড়তি জল ফুটতে বেশি সময়য় নেবে, সেক্ষেত্রে গ্যাসের খরচও বেশি হবে।
আরও শুনুন: অদ্ভুত শখ! বিমানের দরজা খুলে ডানায় হেঁটে বেড়ালেন ব্যক্তি! হলেন গ্রেপ্তার
আরও একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই গ্যাসের আভেনে দুটি বার্নার থাকে। একটি বড়ো, অন্যটি ছোট। ছোট বার্নারটি ব্যবহার করে রান্নাবান্না করলে গ্যাসের অপচয় খানিকটা বাঁচে। এ ছাড়া বার্নার নিয়মিত পরিষ্কার করাও জরুরি। বার্নারে ময়লা জমে থাকলে, গ্যাসের খরচ বেশি হয় বলেই অনেকে মনে করেন। রান্নার পাত্র ব্যবহার করাও অনেকসময় সাশ্রয়ের হদিশ দেয়। যে সব পাত্রের তলার দিক চওড়া হয়, তা বেশিমাত্রায় তাপ শোষণ করতে পারে। অন্যদিকে অনেক পাত্রের ক্ষেত্রে দেখা যায় গ্যাসের ফ্লেম বা আগুনের শিখা বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। তাতে পাত্র বা পাত্রের মধ্যস্থ খাবার সিদ্ধ হতে সময় বেশি লাগে, গ্যাসও বেশি খরচ হয়। তবে পাত্র কীরকম হবে, তা রান্নার ধরনের উপরও নির্ভর করে। তাই এক্ষেত্রে ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আরও শুনুন: ভারতীয় নাগরিকত্ব একবার পেলে তা নাকচ হতে পারে না, পর্যবেক্ষণ গুয়াহাটি হাই কোর্টের
আরও একটি সাধারণ বিষয় খেয়াল করে করাই যায়। তা হল, রান্নার সময়য় খোলা পাত্রের উপর কিছু একটা চাপা দিয়ে দেওয়া। এতে খাবার তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। অন্যদিকে পাত্রের মুখ খোলা থাকলে তাপমাত্রা বেরিয়ে যায়, তাতে খাবার সুসিদ্ধ হতে একটু বেশি সময়ই লাগে। এইভাবেও খানিকটা গ্যাস বাঁচানো যায়। এ ছাড়া যে যে খাবার ভিজিয়ে রাখলে তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়, তা অবশ্যই ভিজিয়ে রাখা উচিত। যত তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যাবে, গ্যাস যে তাতে কম খরচ হবে, তা বলাই বাহুল্য।
আকাশছোঁয়া গ্যাসের দাম না কমলে রেহাই নেই। তবে সাধারণ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে যদি খানিকটা সাশ্রয় হয়, তবে মন্দ কী!