চলন্ত ট্রেনে ঘুরে বেড়াচ্ছে জ্যান্ত সাপ। যাত্রীরা ভয়ে তটস্থ। এদিকে ট্রেন রওনা দেওয়ার আগে ভালভাবে সবকিছু দেখে নিয়েছেন রেলকর্মীরা। তাহলে চলন্ত ট্রেনের সাপ এল কোথা থেকে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
টেনিদার গল্পে যোগসর্পের কথা মনে আছে? আসলে সেই বস্তু ঠিক কী, তা না বুঝেই বেজায় ভয় পেয়েছিলেন গল্পের চরিত্ররা। কিন্তু সম্প্রতি যা ঘটেছে তাতে ভয় পাওয়াই স্বাভাবিক। মিথ্যে গল্প নয়। চলন্ত ট্রেনের কামরায় সত্যি সত্যি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জ্যান্ত সাপ। যা দেখে যাত্রীদের আত্মারাম খাঁচা হওয়ার যোগাড়।
আরও শুনুন: শিবাজির হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার ছিল বাঘনখ, অবশেষে ভারতে ফিরছে সেই অস্ত্র
ঘটনাটি হাওড়া থেকে গোয়ালিয়রগামী চম্বল এক্সপ্রেসের। ঘটনার দিন ট্রেনটি উত্তরপ্রদেশের মোহাবা অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনে একদল সাপুড়ে ওঠেন। এমনিতে ট্রেনে এই ধরনের অনেকেই সওয়ার হন। উদ্দেশ্য ভিক্ষা করা। এই সাপুড়ের দলও তেমনটাই করতে শুরু করে। প্রত্যকের ঝুলিতেই জীবন্ত সাপ ছিল। সেগুলি বার করে নানারকম ভেলকি দেখাতে শুরু করেন ওই সাপুড়েরা। অনেক যাত্রীই আগ্রহ ভরে সেসব দেখছিলেন। কিন্তু সকলেই প্রায় জানতেন ওই সাপুড়ের দলের আসল উদ্দেশ্য কী! তাই অনেকে না দেখার ভান করেও বসে ছিলেন। আসল ঘটনার শুরু এর পর থেকেই। নিজেদের মতো করে সাপের খেলা দেখানোর পর প্রত্যেক যাত্রীর কাছে গিয়ে সাহায্য চাতে শুরু করেন তাঁরা। কেউ কেউ কিছু টাকা বাড়িয়েও দেন। কিন্তু অনেকেই মুখ ঘুরিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ সরাসরি সাহায্য করতে নাকচও করে দেন। তবে যাত্রীদের এইউ আচরণ মোটেও ভাল ভাবে নেননি ওই সাপুড়ের দল। প্রথমে তাঁরা ভয় দেখান সাহায্য না করলে জ্যান্ত সাপ ছেড়ে দেবেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। বেশিরভাগ যাত্রীই সাপুড়ের দলের ওই হুমকি কোনও আমল না দিয়ে বসে থাকেন।
আরও শুনুন: Bharat: ইন্ডিয়াই ভারত! সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে বিরোধীদের একহাত নিলেন জয়শঙ্কর
কিন্তু এই আচরণে আরও চোটে যান ওই সাপুড়েরা। সত্যি সত্যিই তাঁরা চলন্ত ট্রেনের কামরায় কয়েকটা জীবন্ত সাপ ছেড়ে দেন। ব্যাস, এতেই হুলস্থুল বেধে যায় ট্রেনের কামরায়। যাত্রীরা রীতিমতো ভয় পেয়ে এদিক ওদিক ছুটতে শুরু করেন। এদিকে চলন্ত ট্রেনে এমনটা করাও বেশ বিপজ্জনক। ধাক্কাধাক্কিতে যে কোনও সময় বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে। পরিস্থিতি যে এমন হয়ে যাবে তা প্রথমে বুঝতে পারেননি ওই সাপুড়েরাও। তাই বেগতিক বুঝে তখনই ট্রেনের কামরা থেকে ঝাঁপ দেন তাঁরা। এদিকে কন্ট্রোল রুমে ততক্ষণে খবর চলে গিয়েছে। কিন্তু ট্রেন পরের স্টেশনে না থামা পর্যন্ত কিছুই করার ছিল না রেল আধিকারিকদের। তাই বেশ খানিকক্ষণ ওই ভয়ানক পরিস্থিতিতেই কাটাতে হয় ওই কামরার যাত্রীদের। এরপর ট্রেন ঝাঁসি স্টেশন পৌঁছালে সঙ্গে সঙ্গে হাজির হন রেল কর্মীরা। যাত্রীদের সরিয়ে দেওয়া হয় অন্য কামরায়। সকলেই তখন রীতিমতো আতঙ্কিত। বেশ কিছু নির্দিষ্ট কামরায় সাপ খোঁজার কাজ চলে। যদিও রেলের দাবি, ওই কামরা থেকে কোনও সাপ উদ্ধার হয়নি। তবে ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।