প্রথমে নিজেকে মহিলা চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি। আর তারপর সেই সুযোগে বিভিন্ন মহিলার গোপনাঙ্গের ছবি চেয়ে পাঠানো। এমনই অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন সিঙ্গাপুরের এক ব্যক্তি। যদিও পুলিশের জালে ধরা পড়ে অবশেষে তাঁর ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে। কিন্তু কীভাবে এমন প্রতারণা করতেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মহিলা চিকিৎসক পরিচয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন এক ব্যক্তি। যেখানে বিভিন্ন মহিলাকে চিকিৎসা করার প্রতিশ্রুতিও দিতেন তিনি। কিন্তু এর আড়ালেই লুকিয়ে ছিল এক ঘৃণ্য মানসিকতা। তাঁর কাছে চিকিৎসা চাইতে আসা মহিলাদের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তাঁদের গোপনাঙ্গের ছবি চেয়ে পাঠাতেন তিনি।
আরও শুনুন: নকশালবাদ রুখতে একইসঙ্গে থামাতে হবে ‘অসি ও মসি’, নিদান প্রধানমন্ত্রী মোদির
সম্প্রতি সিঙ্গাপুর পুলিশ এমনই অদ্ভুত অভিযোগ এনে গ্রেফতার করেছেন ওই চেউন উই (Ooi Cheun Wei) নামে এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ, মহিলাদের সঙ্গে চরম প্রতারণা করে তাঁদের গোপনাঙ্গের ছবি চেয়ে পাঠাতেন বছর ৩৭-এর ওই ব্যক্তি। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মহিলা চিকিৎসক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে জনপ্রিয় কিছু সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। সেখানে ড. লী বলেই নিজের নাম লিখেছিলেন চেউন। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য অনৈতিক ভাবে এক মহিলার ছবিও ব্যবহার করেছিলেন ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে। একইসঙ্গে তাঁর দাবি ছিল সিঙ্গাপুরের এক নামী হাসপাতালেই তিনি মহিলা চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই ফাঁদে পা দিয়ে অনেক মহিলাই তাঁকে নিজেদের শারীরিক কিছু সমস্যার কথা জানানোর জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু সেই সুযোগ নিয়ে চিকিৎসার নাম করে ওই মহিলাদের গোপনাঙ্গের ছবি চেয়ে পাঠাতেন চেউন। এমনকি সেইসব মহিলাদের একান্ত ব্যক্তিগত কিছু কথাও তিনি বিভিন্ন কৌশলে জেনে নিতেন বলেই অভিযোগ। একদিন চেউনের কথাবার্তা শুনে, চিকিৎসার উদ্দেশ্য নিয়ে আসা এক মহিলার মনে বেশ সন্দেহ হয়। তিনি নিজের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই নামের কোনও চিকিৎসকই নেই সেই হাসপাতালে। এক নিমেষে সবটা পরিষ্কার হয়ে যায় সেই রোগিণীর কাছে। সময় নষ্ট না করে সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হন মহিলা।
আরও শুনুন: বিরাট-স্মৃতিদের বেতনের বৈষম্য ঘুচল, শাহরুখ-দীপিকাদের বৈষম্য দূর হবে কবে?
মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য জানতে পারে সিঙ্গাপুর পুলিশ। জানা যায়, বিগত চার বছর ধরে এই ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করে প্রায় ৩৮ জন মহিলাকে প্রতারিত করেছেন চেউন। এমনকি বিভিন্ন মহিলার গোপনাঙ্গের ছবি বা ভিডিও নিজের কাছে সংগ্রহ করে রেখেছেন তিনি, যার সংখ্যা বর্তমানে প্রায় হাজার ছাড়িয়েছে। তবে ওই ছবিগুলি নিয়ে তিনি অন্য কোনও অসামাজিক কাজ করতেন কি না, সে বিষয়ে কোনও তথ্য এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। নিজের সংগ্রহের কথা ভুলে আপাতত ৪ মাসের জেল হেফাজতেই দিন কাটাতে হবে ওই ব্যক্তিকে।