মন্দিরে মানত করা একেবারেই স্বাভাবিক। কারও সুস্থতা কামনা করে, কিংবা কোনও অভীষ্ট সিদ্ধের আশায় এমনটা করে থাকেন অনেকেই। কিন্তু কারও মৃত্যু কামনা চেয়ে মন্দিরে মানত করার কথা শুনেছেন? সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। তাও একেবারে নাটকীয় কায়দায়! আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মন্দিরে পুজো দিতে আসেন ভক্ত। ইচ্ছাপূরণের আশায় প্রণামী দিয়ে যান। যার যা সামর্থ, সেইমতো দান করেন। এমনই কোনও ভক্ত প্রণামী বাক্সে ২০ টাকার একটা নোট দান করেছিলেন। এতে আর অবাক কী আছে! কিন্তু সেই নোট হাতে নিতেই চক্ষু চড়কগাছ পুরোহিতদের। সেখানে লেখা, ভগবানের দয়ায় আমার শাশুড়ির মৃত্যু হোক!
আরও শুনুন:
কোটি টাকার চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাস! শুধু কুম্ভে নয়, দেশজুড়ে রয়েছেন এমন অনেক IIT গ্র্যাজুয়েট সাধু
মৃত্যুকামনা! তাও আবার নিজের পরিবারের সদস্যের! এমনটা শুনলেই অবাক হবেন অনেকে। এক্ষেত্রে অবাক হওয়ার পারদ চড়েছে আরও একটা কারণে। ভগবানের কাছে যে পদ্ধতিতে প্রার্থনা জানিয়েছেন ভক্ত, তাতেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের। এমনিতে টাকার নোটে ভালবাসা নিবেদনের ঘটনা শোনা যায়। ভালোবাসার মানুষটির নাম নতুন চকচকে নোটে লিখে মানিব্যাগে রেখে দিতে পছন্দ করেন কেউ কেউ। সেই টাকা খরচের জন্য নয় মোটেও। ভালোবেসে রেখে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। ২০ টাকার নোটে মনের কথাই জানানো হয়েছে, তবে সেখানে ভালোবাসা নেই এতটুকু। বরং জলজ্যান্ত একজন মানুষের মৃত্যুকামনা করা হয়েছে। যেন ভগবানের কাছে এই টাকা দিয়ে মানত করতে চেয়েছেন জনৈক ভক্ত।
আরও শুনুন:
‘মুসলমানি জল’ নয় তো! তীর্থযাত্রার পথেও গোঁড়ামি, কুম্ভ ভাবিয়েছিল গান্ধীকে
ঘটনা কর্নাটকের। সেখানকার ভাগ্যবন্তী দেবীর মন্দিরে এমন কাণ্ড ঘটেছে। এমনিতে নির্দিষ্ট সময়ের পর মন্দিরের প্রণামী বাক্স খালি করা হয়। সবসময় যে টাকা পাওয়া যায় তা নয়। কখনও গয়নাগাটি, কখনও শাড়ি, আরও অনেক কিছুই মেলে। এমনকি চিঠিও পাওয়া যেতে পারে। সবই ভগবানের উদ্দেশে দান করা। কিন্তু টাকার নোটে লেখা চিঠি, এমনটা বিরল। এই মন্দিরে হয়েছে তেমনটাই। মন্দিরের প্রণামী বাক্স খালি করার সময় দেখা যায়, একটি ২০ টাকার নোটের পিছনে লেখা, ‘আমার শাশুড়ির দ্রুত মৃত্যু হোক!’ এই ইচ্ছা কার, কেন, এইসব লেখা নেই। তবে পুরোহিতরা এই লেখা দেখে মনে করছেন, বিষয়টা অত্যন্ত নিম্নরুচির। কারও মৃত্যুকামনা করা পাপের সমান। তাও আবার মন্দিরে, দেবতার কাছে! তবে একইসঙ্গে কেউ কেউ ওই ভক্তের পক্ষ নিয়েও কথা বলেছেন। অনেক সময় দেখা যায়, কেউ ভীষণ অসুস্থ, কষ্ট পাচ্ছেন, কিন্তু মৃত্যু হচ্ছে না। এক্ষেত্রেও পরিবারের সদস্যরা মনে মনে প্রার্থনা করেন, ওই কষ্ট যেন লাঘব হয়, তাতে মৃত্যু হলে তাই সই। এক্ষেত্রেও যে এমনটাই হয়েছে তা হলফ করা বলা যায় না, তবে যদি সত্যিই তাই হয় তাহলে এর মানবিক দিক রয়েছে। তবে মৃত্যুকামনা যেহেতু শাশুড়ির, তাই বিষয়টা নেতিবাচক হিসেবেই দেখছেন সকলে।