পোশাকি নাম ‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’। কেউ কেউ একে ছাপোষা আলুভাজা বলে হেয় করতে পারে। তবে এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাইকে সেলিব্রেট করতে আস্ত একটা দিন আছে। মার্কিন মুলুকে ১৩ জুলাই দিনটিকে ‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ডে’ হিসাবে পালন করা হয়। আর এই বিশেষ দিনেই সে-দেশের এক রেস্তরাঁয় ফিরেছে সবথেকে দামি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। এক প্লেটের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। গিনেস বুক বলছে, এত দামি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। কিন্তু কেন এমন মহার্ঘ এই ফ্রাই? আসুন তারই হালহদিশ জেনে নেওয়া যাক।
আলু ভাজা ব্যাপারটা যে মুখরোচক হতে পারে, সে কথা প্রথম পৃথিবীকে জানিয়েছিলেন বেলজিয়ামের মানুষরা। তাঁরাই প্রথম আলুর খোসা ছাড়িয়ে ‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’ খাবারটা তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ কিনা মোটা মোটা করে আলুভাজা। ফ্রান্সের সঙ্গে এর কোনও যোগ না থাকলেও বেলজিয়ামের মানুষেরা যেহেতু ফরাসি ভাষায় কথা বলেন, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাদের মুখে মুখে এই খাবারের নাম হয়ে দাঁড়াল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। কিন্তু রাঁধুনি বা খাইয়ে, কেউই কি সেদিন জানতেন যে একসময় এই খাবারটির দামই হতে পারে আকাশছোঁয়া?
আরও শুনুন: খাবারের প্লেটে এবার নাকি থাকবে পঙ্গপাল! স্বাদের সঙ্গে মিলবে পুষ্টিও
হ্যাঁ, মার্কিন মুলুকের এক রেস্তরাঁতেই ঘটেছে তেমন আশ্চর্য কাণ্ড। ম্যানহাটান শহরের এক রেস্তরাঁ সেরেনডিপিটি থ্রি এক প্লেট ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের দাম রেখেছিল ২০০ ডলার, ভারতীয় টাকায় যা প্রায় ১৬ হাজার টাকা। সঙ্গে সঙ্গেই গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ঠাঁই পেয়েছিল সেই দামি খাবার। আর এবার সেই বিশেষ খাবারটিকেই ফের মেনুকার্ডে জুড়ে নিতে চলেছে ওই রেস্তরাঁ। স্বভাবতই, এক প্লেট ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের দাম কেন এত বেশি, তা নিয়ে সকলেরই কৌতূহল তুঙ্গে।
রেস্তরাঁটিও অবশ্য সে কৌতূহল মেটাতে দ্বিধা করেনি। সাধারণত স্পেশাল মেনুর ক্ষেত্রে তার স্পেশাল রেসিপিটিও গোপনই রাখা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে এই বিশেষ আলুভাজার হাঁড়ির খবর দেওয়াই রেস্তরাঁটির ইউএসপি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি হয় চিপারবেক পট্যাটো, ডমপেরিয়ন শ্যাম্পেন, লে ব্লাঁ আর্ডেন ভিনিগার, ক্রিট সেনেসি পেকর্নিও টার্টুফেলো চিজ, শেভড ইতালিয়ান ব্ল্যাক সামার ট্রাফল- এমন বেশ কিছু উপকরণ দিয়ে। এর সঙ্গে যোগ হয় খাঁচায় না থাকা ফরাসি হাঁসের চর্বি, জৈব ঘাস খাওয়া জার্সি গোরুর দুধের সর-এর মতো কয়েকটি এক্সক্লুসিভ উপাদান। কোনওরকম তেলে নয়, ওই চর্বিতেই ভাজা হয় শ্যাম্পেনে ডোবানো আলুর টুকরোগুলি। আর সবার উপরে থাকে ২৩ ক্যারাট সোনার গুঁড়ো, যা মানুষের খাওয়ার উপযোগী। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের উপরে ঝিকিমিকি অভ্রের মতো ছড়িয়ে দেওয়া হয় ওই স্বর্ণরেণু।
আরও শুনুন: মাস্টারশেফের মঞ্চে ভেলপুরির জয়জয়কার, বিশ্বজয় ভারতীয় খাবারের
তা যে খাবার সোনা দিয়েই তৈরি, তার দামও যে সোনার মতোই হবে, তা আর আশ্চর্য কী! তবে চেখে দেখার সৌভাগ্য হোক বা না হোক, এমন একটি খাবার চোখে দেখার জন্যই আপাতত মুখিয়ে রয়েছেন ভোজনরসিকেরা।