চওড়া রাস্তা। তার পাশে বাড়িঘরও বেশ সুন্দর। অথচ সেখানে কেউ থাকেন না। শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই, কবরস্থানে রাত কাটান। কেউ বা পুরনো গীর্জায়। কিছু না হলে, রাস্তার ধারেই তাঁবু কাটিয়ে থাকা। কোথায় রয়েছে এমন আজব শহর? কেনই বা এমন অবস্থা সেখানকার বাসিন্দাদের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
যুদ্ধ লাগেনি। কেউ আক্রমণও করেনি। তবু শহরের যেদিকে তাকাও ধু ধু করছে সবকিছু। রাস্তাঘাট ফাঁকা। দোকানপাট বন্ধ। যেন সবাই মিলে ধর্মঘট পালন করছে। ভিড় বলতে শহরের শেষ দিকে। যেখানে সচরাচর কেউ যায় না, সেই কবরস্থানে দলে দলে জমা হয়েছেন শহরবাসী। সেখানেই তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: হারের ‘স্মৃতি’ ভুলতে রায়বরেলিতে রাহুল, কিন্তু কংগ্রেস ‘দুর্গে’ও আগে হেরেছিল হাত শিবির
কথা বলছি, ব্রিটেনের কামব্রোন শহর সম্পর্কে। একসময় গোটা বিশ্বে এই শহরের নাম বেশ জনপ্রিয় ছিল। নেপথ্যে এখানকার বাসিন্দারা। সকলেরই সম্পত্তি ছিল ঈর্শা করার মতো। সেইসঙ্গে এই অঞ্চলে থাকা কিছু খনির সুবাদেও বেশ নামডাক ছিল সবর্ত্র। কাজেই ছবির মতো সুন্দর ছিল শহরের সবটুকু। বড় বাড়ি, বাগান, চওড়া রাস্তাঘাট, কী নেই সেখানে! কিন্তু এখন সেই ছবি আমূল বদলেছে। শহরের আদি বাসিন্দারা বাধ্য হচ্ছেন ঘর ছাড়তে। সবসময় একটা ভয় সকলের মধ্যে। আর এই ভয় হল চুরি ছিনতাই কিংবা ডাকাতির মতো ঘটনার। অনেকেই মনে করেন বিদেশের আইন ব্যবস্থা বেশ উন্নত। এতে কারও দ্বিমতই নেই। কিন্তু সব জায়গার ছবি যে সমান নয় এমনটা বলা যেতেই পারে। ব্রিটেনের এই শহর তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
আরও শুনুন: ধন যার, ভোটও তারই! সম্পদের মালিকানা মেপেই কি প্রার্থী বাছাইয়ের প্রবণতা বাড়ছে দেশে?
বিগত কয়েক বছরে সেখানে অপরাধের হার রীতিমতো বেড়েছে। তাতেই অতিষ্ট শহরবাসী। চুরির ভয়ে দোকান খোলা রাখছেন না কেউ। বাড়িতেও অতিথিদের ঢোকা বারণ। তাতেও রেহাই মিলছে না। বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বাড়তেই থাকছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ড্রাগ মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত। যা সেখানকার তরুণ প্রজন্মকেও অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ অবশ্য একাধিক। অনেকেই মনে করছেন, বাইরে থেকে দুস্কৃতীরা এসে এই ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছেন। সামলানোর চেষ্টাও যে করা হচ্ছে না তা নয়। কিন্তু একা পুলিশের পক্ষে সবটা ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না। কাজে নামানো হচ্ছে বাউন্সার দের। তাঁরা পুলিশ না হলেও, অপরাধ দমনে সক্ষম। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। অগত্যা ঘরবাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বিশেষত যারা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাঁদের অবস্থা শোচনীয়। মালিক আগেভাগেই বিতাড়িত করেছেন। আর কেউ থাকতেও দিচ্ছে না। তাই ঠাঁই হয়েছে কবরস্থান। সেখানে তাঁবু খাটিয়ে কোনওমতে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। একই অবস্থা পুরনো গীর্জার। রাস্তার ধারেও তাঁবুর মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে কাউকে। কাজেই সে শহরে একবার পা রাখলে অবাক হবেন যে কেউ। আর এমনটা নাকি, বিগত ৫-৬ মাস ধরে চলছে। এমনই দাবি সেখানকার বাসিন্দাদের। এদিকে, দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। সবমিলিয়ে একসময়ের জনপ্রিয় এই ব্রিটিস শহর এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর অবস্থায় পরিণত হয়েছে।