প্রেম মানে না কোনও বাধা। কী বয়স, কী-ই বা সম্পর্কের বাঁধন! কথায় বলে, কার যে মন কখন কোথায় মজে, তার হদিশ মেলা ভার। তাই যে কোনও বয়সের, যে কোনও পেশার মানুষই ঝুঁকে পড়তে পারেন পরকীয়ার দিকে। কিন্তু নির্দিষ্ট ভাবে কোন পেশার মহিলা ও পুরুষরা পরকীয়ার দিকে ঝোঁকেন বেশি? আসুন জেনে নিই এ ব্যাপারে কী বলছে সমীক্ষা।
দাম্পত্যে সুখ নেই, তৃপ্তি নেই যৌন সম্পর্কেও। আর তাই বহু পুরুষ ও নারী ঝুঁকে পড়েন পরকীয়ার (Extra Marital Affair) দিকে। বিবাহিত পুরুষ ও নারীদেরও তাই নিয়মিত দেখা মেলে নির্দিষ্ট ডেটিং সাইটে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, সম্পর্কের অতৃপ্তির কারণেই পরকীইয়া বেছে নেন অধিকাংশ পুরুষ-নারী। অন্তত ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য। দেখা যাচ্ছে, পরকীয়া ঝুঁকেছেন এরকম ২৬ শতাংশ মানুষ ব্যাপারটাকে ক্যাজুয়াল হুক-আপ হিসাবেই দেখেন। আর অন্তত ১৫ শতাংশ মানুষ, এ ক্ষেত্রে ওপেন রিলেশনশিপে বিশ্বাসী অর্থাৎ কোনও রকম সম্পর্কের বাঁধনে তাঁরা জড়িয়ে নেই।
আরও শুনুন: শয্যাসঙ্গী হতে পারেন যে কেউ, অর্ধেক বিছানা ভাড়া দিয়েই লক্ষ টাকা আয় তরুণীর
সাম্প্রতিক এই সমীক্ষা অবশ্য পরকীয়া সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলো ফেলেছে। আর সেখানেই উঠে এসেছে নানা চমকপ্রদ বিষয়। যাঁরা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন, তাঁরা ঠিক কী অজুহাত দেন? দেখা যাচ্ছে, ৩৩ শতাংশের ক্ষেত্রে অজুহাত একই। তা হল অফিসের কাজের চাপের দরুন আটকে থাকা। ২৮ শতাংশ আবার পুরো ব্যাপারটায় বন্ধুবান্ধবদের সামনে এগিয়ে দেন। অর্থাৎ অজুহাত দিয়ে বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মশগুল বা পার্টিতে আছেন। অফিস-পার্টিকেও অনেকে শিখণ্ডি করেন, সমীক্ষা জানাচ্ছে ২৩ শতাংশ মানুষ এই অজুহাতই দেন। অস্ট্রেলিয়ার মানুষদের মধ্যে করা এই সমীক্ষা মোটামুটি একটা গড় প্রবণতার ধারণা দিচ্ছে। অন্যান্য সমীক্ষাতেও আরও নানা রকম অজুহাতের হদিশ মিলছে। বিজনেস ট্রিপের অজুহাত দিয়ে পরকীয়া চালান ১৮ শতাংশ মানুষ। ১০ শতাংশ মানুষ আবার বলেন, স্বাস্থ্যসচেতনতায় জোর দিয়ে তাঁরা জিমে সময় কাটাচ্ছেন। তবে মজার বিষয় হল, পরকীয়ায় জড়িয়েছেন এমন ৩৯ শতাংশই আবার বলছেন যে, তাঁরা তাঁদের সম্পর্কে বেশ সুখেই আছেন।
আরও শুনুন: ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জনের সঙ্গে যৌনতা, সঙ্গম শেষে কী অবস্থা হয়েছিল যুবকের?
এই সমীক্ষার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পেশার উল্লেখ। বিভিন্ন ডেটিং সাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট পেশার পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যেই পরকীয়ার ঝোঁক বেশি। মহিলাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে যাঁরা চিকিৎসা সংক্রান্ত বা নার্সিং-এর কাজে যুক্ত, যাঁরা কোনও সংস্থার ম্যানেজারের মতো দায়িত্বশীল পদে আছেন, বা সংস্থার প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের মধ্যে এই ঝোঁক বেশি। পুরুষরাও অবিশ্যি কিছু কম যান না! এক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে যাঁরা ম্যানেজারের মতো উচ্চ পদে কর্মরত তাঁদের পরকীয়ায় ঝোঁক বেশি। ইঞ্জিনিয়ার, সেলস ম্যানেজার থেকে নির্মাণকর্মীদের মধ্যেও পরকীয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
সমীক্ষা অবশ্য আরও একটি কথা স্পষ্ট করে জানাচ্ছে। যা নিয়ে ভাবনার অবকাশ আছে। সিনেমা-সিরিয়ালে বা উপন্যাসে যখনই এই ধরনের সম্পর্কের কথা এসেছে চরিত্রদের মধ্যে এক ধরনের অপরাধবোধ দেখা দিয়েছে। তবে, এই সমীক্ষা তার উলটো মতকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। নানা পেশার নানা মানুষই নানা অজুহাত দিয়ে পরকীয়ায় জড়াচ্ছেন। তবে তাতে অপরাধবোধের বালাই নেই। এই চিহ্ন কি সমাজের মানসিকতা বদলের? সে প্রশ্ন তোলাই রইল।