জাতীয় সঙ্গীত কিংবা অন্য কোনও গান। স্কুলের প্রার্থনায় সাধারণত এইসবই গাইতে হয় পড়ুয়াদের। কিছুক্ষেত্রে বৈদিক শ্লোক পাঠেরও নিয়ম রয়েছে। তবে এবার স্কুলের প্রার্থনায় পাঠ করতে হবে সংবিধানের প্রস্তাবনাও। সম্প্রতি এমনই নিদান জারি হয়েছে কর্নাটকে। আসুন শুনে নিই।
স্কুল বা কলেজের পড়ুয়াদের পাঠ করতে হবে সংবিধানের প্রস্তাবনা। তাও আবার সকালের প্রার্থনায়। প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে এই কাজ করার নিদান দিয়েছে কর্নাটক সরকার। শুধু সরকারি জায়গা নয়, বেসরকারি ক্ষেত্রেও মানতে হবে একই নিয়ম। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে কর্নাটক বিধানসভায় এমনই প্রস্তাব এনেছে সে রাজ্যের সরকার।
বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়শই চর্চায় উঠে আসে সংবিধান। একদিকে বিরোধীরা কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান না মানার অভিযোগ তোলেন, অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফেও ওই একই দাবিতে পালটা কটাক্ষ ভেসে আসে। তবে সমাজে সংবিধানের ঠিক কী ভূমিকা তা অনেকেরই অজানা। এই দাবিতেই এহেন উদ্যোগ কর্নাটক সরকারের। সে রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সি মহাদেভাপ্পার দাবি, সংবিধান পাঠের অভ্যাস পড়ুয়াদের নীতি ও আদর্শ গড়তে সাহায্য করবে। তাঁর দাবি, এর মাধ্যমে পড়ুয়ারা মৌলিক কর্তব্য সম্পর্কেও সঠিক ধারণা পাবে। কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, ছোট থেকেই তা স্পষ্ট হবে ওই পড়ুয়াদের কাছে। একই দাবি রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রীদের। বিষয়টি নিয়ে সে রাজ্যের বিধানসভাতেও আলোচনা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। আসলে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে নিজে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছিলেন। আগামী প্রজন্মের সংবিধান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হোক, এমনটা চাইছেন তিনি নিজেও। তাঁর কথায়, যদি সংবিধান থাকে তাহলেই গণতন্ত্র থাকবে। আর গণতন্ত্র থাকলে আমরাও ভালোভাবে বাঁচতে পারব। তাই সবার আগে গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে সংবিধানকে বাঁচাতে হবে। তাঁর আরও দাবি, সংবিধান পাঠ করা এবং তা জীবনে প্রয়োগ করা এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি প্রয়োজন।
শুধু তাই নয়, সংবিধান প্রসঙ্গে বলার সময় মনুস্মৃতি নিয়ে কটাক্ষও করেন তিনি। তাঁর দাবি, এই বিষয়ে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সচেতন হওয়া উচিত। তাই শুধুমাত্র পড়ুয়া নয়, শিক্ষকদেরও নিয়মিত সংবিধান পাঠের নিদান জারি হয়েছে কর্নাটকে। এদিন গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজ্যের প্রায় ২.৩ কোটি মানুষ তাঁর সঙ্গে সংবিধান পাঠে যোগ দেন। আর এভাবেই রোজ সকালের প্রার্থনায় সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠের সূচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।