রাবণের কুশপুতুলে অবশ্যই ছোঁয়াতে হবে মদ। অন্যথায় মূল অনুষ্ঠানের আগেই ভেঙে পড়বে বিশালাকায় সেই কুশপুতুল। ‘দশেরা’ উৎসবের দিন এমনই রীতি পালন করে আসছেন উত্তর ভারতের এই অঞ্চলের মানুষেরা। নেপথ্যে কারণ কী? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মদ না ছোঁয়ালেই ভেঙে পড়বে রাবণের কুশপুতুল। তাই দীর্ঘদিন ধরে দশেরা উৎসবের দিন রাবণের কুশপুতুলকে উৎসর্গ করা হয় মদ। তবেই নাকি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায় রাবণদহনের অনুষ্ঠান।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্মদিনে ৫৬ পদ দিয়ে ‘থালি’, সঙ্গে ৮.৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা রেস্তরাঁর
দুর্গাপুজোর দশমী তিথিটিকে ‘দশেরা’ বলেই চেনেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। উত্তর ভারতে রীতিমতো জাঁকজমক করেই পালন করা হয় এই উৎসবটি। পুরাণমতে এই দিনেই শ্রীরামচন্দ্র বধ করেছিলেন রাক্ষসরাজ রাবণকে। সেই স্মৃতিকে উপলক্ষ করেই দশেরার দিন বিভিন্ন জায়গায় রাবণের বিশালাকায় কুশপুতুল দাহ করা হয়। তবে উত্তরপ্রদেশের মীরাট শহরে রাবণদহন ঘিরে অদ্ভুত এক রীতির প্রচলন রয়েছে। সেখানকার বৈশালি ময়দানে রাবণের কুশপুতুল জ্বালানোর আগে নাকি তাকে উৎসর্গ করতে হয় মদ। তবেই নাকি সুষ্ঠুভাবে তার দহন সম্পূর্ণ করা যায়। অন্যথায় অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ে সেই বিশালাকায় পুতুল। তাই দীর্ঘদিন ধরেই দশেরার দিন রাবণের কুশপুতুলে মদ ছোঁয়ান এই উৎসবের আয়োজকেরা। আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যানের মুখেই শোনা গিয়েছে এমন অদ্ভুত রীতির কথা। যদিও এই ঘটনার ব্যাখ্যা হিসেবে তাঁর মত, রাবণ হল শয়তানের প্রতীক। তাই তার সুরাপান করা আদৌ কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।
আরও শুনুন: হেলমেট ছাড়াই বাইক চালিয়ে ধৃত ব্যক্তি, মন্ত্র পড়ে ‘পুজো’ করলেন পুলিশকর্মী
জানা গিয়েছে, এ ঘটনা কোনও আনকোরা ব্যাপার নয়। ১৯৫৯ সাল থেকে এই ময়দানে পালিত হয়ে আসছে দশেরা উৎসব। আর বহু বছর ধরেই উৎসবে প্রচলিত কুশপুতুলকে মদ উৎসর্গ করার রীতি। যদিও কীভাবে এমন অদ্ভুত রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা সঠিক ভাবে জানে না কেউই। অতীতে কমিটির কিছু সদস্য এই রীতির বন্ধেরও চেষ্টা করেছিলেন। তবে যতবার মদ উৎসর্গ না করে রাবণদহনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ততবারই নাকি ভেঙে পড়েছে বিশালাকায় পুতুল। এদিকে প্রতিবছরই এই পুতুলের উচ্চতা হয় ১৩০ ফুটের কাছাকাছি। সুতরাং এত বড় পুতুল যদি অনুষ্ঠানের আগেই ভেঙে পড়ে, তবে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থেকেই যায়। আর সেই কারণেই এই রীতির আর কোনও বদল ঘটেনি। কেবল রাবণ নয়, এই দিনে কুশপুতুল তৈরি করা হয় মেঘনাদ ও কুম্ভকর্ণেরও। আর রক্ষোকুলের এই তিন প্রতিনিধির উদ্দেশেই সেদিন মদ নিবেদন করা হয় বলে দাবি করেছেন মিরাটের ওই দশেরা কমিটির আয়োজকেরা।