দেশের ধনীতম ব্যক্তি। তাঁর অগাধ ঐশ্বর্যের কারও অজানা নয়। সেই মুকেশ আম্বানির সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন এক ধর্মগুরু। তাঁর পরামর্শেই যাবতীয় ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেন ধনকুবের। পাশাপাশি আম্বানি পরিবারও যে কোনও অনুষ্ঠানের আগে তাঁর অনুমতি নেয়। কে এই ধর্মপুরুষ? আসুন শুনে নিই।
আমাদের দেশে ধর্মগুরুর অভাব নেই। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ যথেষ্ট জনপ্রিয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শাস্ত্রকথার প্রচার থেকে আরম্ভ করে, দেশের যে কোনও সাম্প্রদায়িক সমস্যায় এঁদের মতামত প্রাধান্য পায়। কিন্তু তথাকথিত ভাবে জনপ্রিয় না হয়েও, সম্প্রতি চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন এক হিন্দু ধর্মগুরু। অবশ্য, আসবেন নাই বা কেন! খোদ মুকেশ আম্বানি যাঁর পরামর্শ মেনে চলেন, তাঁকে নিয়ে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
আরও শুনুন: দেশের ধনীতম ব্যক্তি হয়েও ২ বছর বেতন নিচ্ছেন না মুকেশ আম্বানি, কেন জানেন?
কথা বলছি, রমেশভাই ওজা সম্পর্কে। ভাইশ্রী মহারাজ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। গুজরাটের এই ধর্মগুরুর কথামতোই জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন মুকেশ আম্বানি। শুধু তিনি একা নন। গোটা আম্বানি পরিবারই তাঁর পরামর্শ মেনে চলেন। রমেশভাই-এর সঙ্গে আম্বানি পরিবারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কোনও এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে তিনি ‘রামকথা’ শোনানোর ডাক পেয়েছিলেন। বরাবরই শ্রীরামচন্দ্রের জীবন সম্পর্কে তাঁর অগাধ জ্ঞান। তাই সেদিন সকলের সামনে সহজ ভাষায় রামায়ণের বিভিন্ন কাহিনি শুনিয়েছিলেন তিনি। আর সেই পাঠ শুনেই আম্বানি পরিবারের সকলে মুগ্ধ হন। ভাইশ্রী মহারাজও পরিবারের অন্যতম পরামর্শদাতা হয়ে ওঠেন। শোনা যায়, আম্বানি পরিবারকে বেশ কয়েকবার ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন এই ধর্মগুরু। এমনকি রিলায়েন্স গ্রুপের ব্যবসায়িক কোনও সিদ্ধান্তও তাঁকে জিজ্ঞাসা না করে নেওয়া হয় না। বিশেষত যখন মুকেশ আম্বানি ও তাঁর ভাই অনিল আম্বানি আলাদা ভাবে ব্যবসা শুরু করলেন, তখনও পরিবারের পাশে ছিলেন ভাইশ্রী মহারাজ। তাই এখনও কোনও নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁর কাছে পরামর্শ নিতে ছোটেন মুকেশ আম্বানি।
আরও শুনুন: লক্ষ্য ছিল শুধু পাখির চোখে, মেসিকে এবার অর্জুনের সঙ্গে তুলনা মুকেশ আম্বানির
সম্প্রতি, আম্বানি পরিবারের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে এই ধর্মগুরুকে। আম্বানি পুত্র আকাশ ও রাধিকার বিয়ের অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানে তাঁর সঙ্গে মুকেশ আম্বানি ও তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানিকে দেখা গিয়েছে। তাঁদের আচরণ থেকে একথা স্পষ্ট, আম্বানি পরিবার ঠিক কতটা মর্যাদা দেয় এই ধর্মগুরুকে। অবশ্য ভাইশ্রী মহারাজও যে সেই সম্মানের যোগ্য, তা বলাই বাহুল্য। শোনা যায়, শাস্ত্রের একাধিক বিষয়ে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই ভগবত গীতা আত্মস্থ করেছিলেন এই ধর্মপুরুষ। এখনও বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় কথা প্রচার করেন তিনি। জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন উচিত অনুচিতের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে সেই অর্থে প্রচারের আলোয় থাকতে পছন্দ করেন না তিনি। মনে-প্রাণে ঈশ্বর সাধনাকেই জীবনের সারবত্তা হিসেবে মনে করেন। আর সেই সততা এবং ঈশ্বরভক্তির জোরেই আম্বানি পরিবারকে এমন সাফল্যের পথ খুঁজে দিতে পেরেছেন তিনি, এমনটাই দাবি পরিচিত মহলের।