অযোধ্যার রাম মন্দির নির্মাণে দু-হাত উজাড় করে দান করেছেন ভক্তরা। কেউ টাকা, কেউ সোনা-দানা কেউ বা আরও মূল্যবান সামগ্রী উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন শ্রীরামকে। তবে একইসঙ্গে রামলালার জন্য রাশি রাশি খেলনাও উপহার হিসেবে এসেছে। কারা পাঠাল এমন অদ্ভুত ভেট? আসুন শুনে নিই।
পরিচিত মূর্তিতে রামচন্দ্র বীর যোদ্ধা। হাতে শোভা পায় তীর-ধনুক। তবে অযোধ্যার মন্দিরে দেখা যাবে রামলালার একেবারে ভিন্ন এক রূপ। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, এখানে রামচন্দ্রের বালক রূপটি প্রতিষ্ঠা পাবে। মূর্তি দেখে মনে হবে, কোনও ৫ বছরের বালক বসে আছে। তাই বালক রামের জন্য, উপহার হিসেবে রাশি রাশি খেলনাও আসতে চলেছে অযোধ্যায়।
আরও শুনুন: অয্যোধ্যায় তৈরি হচ্ছে রামলালার মূর্তি, সীতার ‘জন্মভূমি’ নেপাল থেকে এল বিশেষ শিলা
রামজন্মভূমিতে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিকে নজর গোটা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় মন্দির নির্মাণের কাজ। ভক্তদের অনুদানের সুবাদে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনের চেয়েও বেশি অর্থ জমা পড়েছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টে। আর শুধু অর্থই নয়, আরও নানা কিছুই যোগ হয়েছে মন্দিরের সংগ্রহের তালিকায়। যা ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বিচারে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন খেলনাও। একেবারেই ছোটদের খেলার জন্য যে ধরনের কাঠের পুতুল বা ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়, সেইসব কিছুই রামের জন্যও পাঠানো হচ্ছে অযোধ্যায়। বলাই বাহুল্য, এই সবই বালক রামের জন্য।
আরও শুনুন: রামের আদলে যোগী আদিত্যনাথের মূর্তি, উত্তরপ্রদেশের এই মন্দিরে পূজা পান খোদ মুখ্যমন্ত্রীই
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রামলালাকে এমন অদ্ভুত উপহার পাঠাচ্ছেন কারা?
সে উত্তর মিলবে শিবক্ষেত্র কাশীতে। অযোধ্যার রাম মন্দির তৈরির বহু আগে থেকেই এখানে রামের নামে এক বিশেষ ব্যাঙ্ক রয়েছে। নাম রাম রামাপতি ব্যাঙ্ক। তবে এই ব্যাঙ্ক আর পাঁচটা সাধারণ ব্যাঙ্কের মতো একেবারেই নয়। কারণ টাকার বদলে ভক্তরা এখানে ‘রামনাম’ লেখা কাগজ জমা রাখেন। মনে করা হয়, এভাবেই ভবিষ্যতের জন্য পুণ্য জমা করেন তাঁরা। এর লাগোয়াই রয়েছে বিশেষ এক রাম মন্দির। বিশেষ বলার কারণ এখানেও, অযোধ্যার মতো পূজিত হন রামলালার বালক রূপ। একেবারে নিজের সন্তানের মতোই সেই মন্দিরের আরাধ্যকে পুজো করেন সকলে। তাই বালক রামের পাশে সাজানো থাকে খেলনা। এই রাম রামাপতি ব্যাঙ্কের তরফেই অযোধ্যার মন্দিরে পাঠানো হচ্ছে খেলনা। মূলত কাঠের খেলনা। ঘোড়া, পুতুল, তীর-ধনুক এইসবই রয়েছে তালিকায়। তবে সংখ্যায় সেসব অনেকটাই বেশি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, রামলালার যেন খালনার অভাব না হয় তাই এই ব্যবস্থা। শুধু কর্তৃপক্ষ নিজেরা নয়, ব্যাঙ্কের প্রায় সমস্ত গ্রাহক কিছু না কিছু খেলনা উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছেন। সব কিছুই পাড়ি দেবে অযোধ্যার উদ্দেশে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কথায়, রাম মন্দিরের উদ্বোধনে উপস্থিত থেকে এই বিশেষ উপহার তাঁরা মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবেন। যদিও আমন্ত্রণ না পাওয়া অবধি এমনটা সম্ভব না। তাই আপাতত সেই অপেক্ষায় রয়েছেন রামাপতি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না পেলে পরে যে কোনও সময় অযোধ্যা গিয়ে এই উপহার রামলালার কাছে রেখে আসবেন তাঁরা, এমনটাও জানিয়েছেন রামাপতি ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির সদস্যরা।