এক দু টাকা নয়, দাম উঠেছিল একেবারে এক কোটি টাকা। কিন্তু এহেন বিপুল টাকার প্রলোভন সত্ত্বেও নিজের পোষ্য প্রাণীটিকে বিক্রি করে দিতে নারাজ এই ব্যক্তি। কিন্তু কেন এত দাম উঠল ওই প্রাণীটির? শুনে নিন।
সাধারণ একটি প্রাণী। কিন্তু ধর্মের কারণে তাকেই কিনে নিতে মরিয়া একাধিক মুসলিম ব্যক্তি। আর তার জন্য যত বেশি দামই দিতে হোক না কেন, তাতেও আপত্তি নেই তাঁদের। তবে আপত্তি অন্য জায়গায়। কেউ যত দামই দিক না কেন, পোষ্যকে বিক্রি করে সেই টাকা নিতে নারাজ তার মালিক। রাজু সিং নামের ওই ব্যক্তি ধর্মে হিন্দু। কোনও ধর্মীয় কারণে যে পোষা প্রাণীটিকে বিক্রি করতে চাইছেন না, এমনও নয়। তা ছাড়া রাজস্থানের এই ব্যক্তির অবস্থা বিশেষ সচ্ছলও নয়। পশুপালন করেই কোনোভাবে দিন গুজরান করেন তিনি। কিন্তু এই অবস্থাতেও টাকার বিনিময়ে সাধের পোষ্যটিকে বিক্রি করে দিতে একেবারেই নারাজ ওই ব্যক্তি।
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: ইউটিউবে ভিডিও বানিয়েই ১২২ কোটির মালিক, চেনেন এই ভারতীয় যুবককে?
আসলে একটি পোষ্য ভেড়া রয়েছে ওই হিন্দু ব্যক্তির। ইদের আবহে প্রতিবারই চড়া দাম ওঠে তার। আর চড়া বলে চড়া! একজনের গোটা জীবন তাতে হেসেখেলে কেটে যেতে পারে, এত টাকা দাম দিয়েও ভেড়াটিকে কিনতে চেয়েছেন কেউ কেউ। গত বছর এক ব্যক্তি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই প্রাণীটিকে কিনতে চেয়েছিলেন। আর চলতি বছরে তার দাম বেড়ে গিয়েছে আরও। একেবারে এক কোটি টাকা দিয়েই ভেড়াটিকে কেনার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন এক মুসলিম ব্যক্তি। ভাবছেন, সাধারণ একটি ভেড়ার এত বেশি দাম কেন? আসলে ওই ভেড়াটির গায়ে এমন একটি জন্মদাগ রয়েছে, যা দেখে মনে হয় যেন ৭৮৬ লেখা। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী এই সংখ্যাটির গভীর তাৎপর্য রয়েছে। আর সেই কারণেই এত দাম দিয়ে ভেড়াটিকে কিনে নিতে আগ্রহী হয়েছেন একাধিক মুসলিম ব্যক্তি।
আরও শুনুন: একটা ডিমের দাম ৭৮ কোটি! কী এমন গুণ আছে এই ‘বিশেষ’ ডিমের?
মজার কথা হল, রাজু সিং আদৌ ওই সংখ্যাটির মানেই জানতেন না। পরে অবশ্য কৌতূহলী হলে তিনি বিষয়টি জেনেছেন। কিন্তু যাই হোক না কেন, কয়েক বছর ধরে প্রতিপালন করা প্রাণীটির প্রতি আশ্চর্য মায়া রয়েছে তাঁর। ধর্মীয় কারণে মুসলিমদের কাছে এই ভেড়াটির যে গুরুত্ব, তাঁর কাছে তেমন কোনও গুরুত্ব নেই। কিন্তু ধর্মকেও এখানে ছাপিয়ে গিয়েছে ভালবাসা। তাই যে যত টাকাই দিক না কেন, পোষ্যটিকে কাছছাড়া করতে নারাজ ওই ব্যক্তি। বদলে তাকে আরও বেশি করে যত্নআত্তি করতেই শুরু করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে একটি অবোলা পশুর প্রতি ভালবাসার অভিনব নজির গড়ে দিয়েছেন ওই ব্যক্তি।