স্ত্রীর নামে রয়েছে বড় অঙ্কের জীবনবিমা। আর সেই টাকা হস্তগত করার জন্যই স্ত্রীকে খুন করতে সুপারি দিলেন ব্যক্তি। তবে শেষরক্ষা হল কি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
স্ত্রীর নামে করা জীবনবিমার টাকা হাতানোই লক্ষ্য। আর তার জন্যই স্ত্রীকে খুনের ছক কষল রাজস্থানের এক ব্যক্তি। রীতিমতো সুপারি দিয়ে লোক ঠিক করে পথদুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসেছে মহেশ চন্দ নামে ওই ব্যক্তি। যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে মহিলার।
আরও শুনুন: স্কুলের শৌচাগার পরিষ্কার করতে হবে নিম্নবর্গের পড়ুয়াদেরই, সাফ নির্দেশ প্রধান শিক্ষিকার
সিনেমার গল্পকেও বোধহয় হার মানাবে এই অপরাধের প্লট। কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে বিস্তারিত বলা যাক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে শালু-র সঙ্গে বিয়ে হয় মহেশের। দুজনের একটি কন্যাসন্তানও হয়েছিল। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির জেরে বিয়ের মাত্র দুবছরের মাথায় নিজের বাপের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হন শালু। এরপরেও বিভিন্নভাবে তাঁকে বিরক্ত করত মহেশ। এমনকি ২০১৯ সালে মহেশের নামে থানায় হেনস্তার অভিযোগও দায়ের করেন শালু। এরপর তেমন কিছু না ঘটলেও সম্প্রতি শালুর নামে একটি জীবনবিমা করায় মহেশ। প্রায় ৪০ বছরের মেয়াদে করা সেই বীমায় বেশ মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়ার কথা ছিল। বিমার নিয়ম অনুযায়ী, শালুর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তাঁর পরিবার পাবে ১ কোটি টাকা। এবং অপঘাতে মৃত্যু হলে পরিবারকে দেওয়া হবে প্রায় তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। যা আত্মসাৎ করাই ছিল মহেশের আসল উদ্দেশ্য।
বিমা করার অজুহাতে ফের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল মহেশ। তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার কথাও বলে সে। একইসঙ্গে তাঁর সামনে রাখে এক অদ্ভুত শর্ত। স্ত্রীকে অনুরোধ করে, ভোরবেলা স্থানীয় এক মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে। টানা ১১ দিন এমন কাজ করলেই সসম্মানে স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেয় সে। সে কথা মেনে নিয়েছিলেন শালু। সেইমতোই প্রতিদিন ভোরে এক আত্মীয়ের মোটরবাইকে চেপে ওই মন্দিরে যেতে শুরু করেন তিনি। এদিকে শালুকে খুন করার জন্য মুকেশ সিং রাঠোর নামে এক দাগি আসামিকে সুপারি দিয়েছিল মহেশ। তাদের পরিকল্পনামাফিকই পথদুর্ঘটনা ঘটানো হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শালুর।
আরও শুনুন: বিয়ের আসরে উচ্চবর্ণের ঝামেলার ভয়, দাঁড়িয়ে থেকে দলিত কন্যার বিয়ে দিলেন ৬০ পুলিশকর্মী
জানা গিয়েছে, এই কাজের জন্য ১০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক দাবি করেছিল মুকেশ, যার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা তাকে অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। তবে এই কাজ মুকেশ একা করেনি, তার সঙ্গে আরও দুজন ছিল বলে খবর পুলিশ সূত্রে। দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে ঘাতক গাড়িটির খোঁজ করতে শুরু করে পুলিশ। শেষমেশ গাড়িটির চালক তথা মুকেশকে পাকড়াও করেছে তারা। তবে আসল অভিযুক্ত মহেশ এখনও অধরাই। সূত্রের খবর, তার খোঁজে জোরদার তল্লাশি চালাচ্ছে স্থানীয় পুলিশ।