ভারতের স্টেশন। অথচ সেখানে যেতে গেলে দরকার হয় পাসপোর্ট। ট্রেন থেকে নেমেই দেখাতে হবে পাসপোর্ট, ভিসা। না দেখাতে পারলে সমস্যা। জেল অবধি হতেই পারে। কোন জায়গার কথা বলছি? কেন পাসপোর্ট দরকার হয় সেখানে যাওয়ার জন্য? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিদেশে যেতে গেলে দরকার হয় পাসপোর্ট, ভিসা। সঠিক অনুমতি ছাড়া অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ থাকে না কারও। কিন্তু দেশের মধ্যে কি আর এমন নিয়ম খাটে! অনেকেরই ধারণা স্বাধীন নাগরিক হিসেবে, চাইলেই নিজের দেশের যে কোনও প্রান্তে যাওয়া যায়। কিন্তু না! আমাদের দেশে রয়েছে এমন কিছু জায়গা যেখানে পাসপোর্ট ছাড়া যাওয়া সম্ভব না।
কথা বলছি, পাঞ্জাবের আটারি শ্যাম সিং স্টেশন সম্পর্কে। দেশভাগের পর মোটামুটি দুইভাগ হয়ে যায় পাঞ্জাব। একটা অংশ ভারতে, অন্য অংশ পাকিস্তানে। বিখ্যাত ওয়াঘা বর্ডারও এখানেই। তারই খুব কাছে অবস্থিত আটারি সিং স্টেশন। দেখতে সাধারণ হলেও দেশের আর পাঁচটা স্টেশনের মতো নয় এই আটারি। ২৪ ঘণ্টা এখানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। পাছে কেউ অবৈধ ভাবে দেশে প্রবেশ না করে ফেলেন। সবসময় স্টেশনের চারপাশে পাহারা দেন সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা। এমন একটা জায়গায় পরিচয়পত্র না থাকলে সমস্যা হতে বাধ্য। তাই এখানে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। পাকিস্তানের কেউ হলে তো বটেই। ভারতীয়দেরও সঙ্গে রাখতে হয় সঠিক পরিচয় পত্র। এখন অবশ্য ট্রেন চলে না। স্টেশনে ঢুকতেও দেওয়া হয় না কাউকে। ওয়াঘা বর্ডার গেলে কেউ কেউ শখের বশে ঘুরে যান। বাইরে থেকেই যা দেখা যায়। তাতেও সীমান্তরক্ষীর নজরে পড়লে পাসপোর্ট দেখাতেই হবে।
তবে একসময় এখানেও ট্রেন চলত। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা এক্সপ্রেস নামে যে ট্রেনটি চলত তার যাত্রা শুরু হত এখান থেকেই। অর্থাৎ ভারতীয়রা পাকিস্তান যেতে হলে এখানে এসে নতুন ট্রেনে চাপতেন। আবার পাকিস্তান থেকে কেউ ভারতে এলে এখানে এসে বদলাতে হত গাড়ি। আর এই সময় খতিয়ে দেখা হত পাসপোর্ট, ভিসা। গোলমাল থাকলেও পড়তে হবে জেরার মুখে। তাতে অসঙ্গতি ধরা পড়লে সোজা থানায়। তবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে বন্ধ হয়েছে সমঝোতা এক্সপ্রেস। ইচ্ছা হলেই দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করাও প্রায় অসম্ভব বলা যায়। অনুমতি পেতেই সময় লাগে দীর্ঘদিন। বেআইনি ভাবে অনেকে সীমান্ত পারের চেষ্টা করলেও লাভের লাভ হয় না। সবসময় কড়া নজরদারি চলে সীমান্তে। একইসঙ্গে বিশেষ পাহারায় মোড়া থাকে এই স্টেশন। কেউ যাতে স্টেশনের মধ্যে দিয়ে ভারতে প্রবেশ না করতে পারে সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখেন সশস্ত্র প্রহরীরা।